এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁর মান্দা উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জিপি ফান্ডের লেজার বইয়ের আসল পাতা কেটে নকলপাতা সংযোজন করে এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ায় প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩ সদস্যের একটি টিম ঘটনার তদনত শুরু করেছেন। প্রাথমিক তদনেত অর্ধকোটি টাকা জালিয়াতির ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে। এতে ফেঁসে যাচ্ছেন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক।
রাজশাহী বিভাগীয় হিসাব রক্ষণ অফিস ঘটনার তদনত শুরু করেছে। গত ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যনত ৩ দিন ধরে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে এ তদনত অনুষ্ঠিত হয়। তদনত কমিটির প্রধান রাজশাহীর পবা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হন নি। তবে জালিয়াতির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রাথমিক তদনত চলছে। তদনত কাজ শেষ না হওয়া পর্যনত এ বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের জুনিয়র অডিটর আব্দুস সাত্তার শিক্ষকদের জিপি ফান্ডের লেজার বই জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষকের জিপি ফান্ডের লেজার বইয়ের পাতা কেটে সরিয়ে ফেলেছেন। পরে সেখানে নতুন পাতা সংযোজন করা হয়েছে। ওইসব পাতায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের পূর্বে নেয়া ঋণের টাকা সমন্বয় না করে জুনিয়র অডিটর আব্দুস সাত্তার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে নতুন করে আবারো টাকা উত্তোলন করেছেন। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সাথে যোগসাজশ করে জুনিয়র অডিটর আব্দুস সাত্তার এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদনেত অর্ধশতাধিক শিক্ষকের জিপি ফান্ডে হিসাব জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে। অধিকতর তদনেত এ হিসাব শতাধিক ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, তদনত টিম ইতোমধ্যে ১১ শিক্ষককে অবৈধ উপায়ে নেয়া সরকারি অর্থ ফেরত দেয়ার জন্য পত্র দিয়েছেন। এরা হলেন, পাঁজরভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানবকস মণ্ডল, ভালাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজাহার উদ্দিন, সদলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোবারক হোসেন, বৈদ্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শমসের আলী, পারইটুঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন, হাট চকগৌরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন, কশব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফসার আলী। শিক্ষক জানবকস মণ্ডলকে ৮ লাখ ৭১ হাজার, আজাহার উদ্দিনকে ১ লাখ ২৪ হাজার, মোবারক হোসেনকে ১ লাখ ৪১ হাজার, রুহুল আমিনকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার, শমসের আলীকে ২ লাখ ৬০ হাজার, ইসমাইল হোসেনকে ১ লাখ ৮৫ হাজার, ও আফসার আলীকে ৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার পত্র দেয়া হয়েছে।
এদিকে জিপি ফান্ডের টাকা জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়ায় উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক জানবকস মণ্ডল, আজাহার উদ্দিন, মোবারক হোসেন জানান, তাদের ভুল বুঝিয়ে জুনিয়র অডিটর আব্দুষ সাত্তার এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সানোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তদনত শুরু হয়েছে। অচিরেই সবকিছু বেরিয়ে আসবে।
আরও পড়ুন...
বে-সরকারী সংস্থার উদ্যোগে নওগাঁয় স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পা এখন সুস্থ্য
এনবিএন ডেক্স : স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পাকে দীর্ঘদিন ঢাকায় বার্ণ হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ্য …