ধংসাত্বক রাজনীতি সিরাজগঞ্জে নয় আওয়ামীলীগ বিএনপির সমঝোতা, যৌথ সভায় সিদ্ধান-

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: রাজনীতিতে সংঘাত ও ধংসাত্বক কার্যক্রম বর্জন, গনতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি, টেন্ডারবাজী বর্জন সহ সিরাজগঞ্জের উন্নয়নে একমত পোষনকরে সিরাজগঞ্জের দুই বৃহতম রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একমত হয়েছেন। গত সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জ সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। উভয়দল তাদের দলীয় নেতাকর্মিদের অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুর্দ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলেও ঘোষনা দেয়া হয়েছে। সভায় আগামী শুক্রুবারের মধ্যে উভয়দলের পক্ষথেকে যৌথ ইসতেহার ঘোষনা করার জন্য কমিটি গঠন কর হয়েছে। গত রোববার সিরাজগঞ্জ সার্কিট হাউজে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতাদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জে সুষ্ঠ ধারার রাজনীতির পরিবেশ বজায় রাখা, জেলার উন্নয়নের স্বার্থে একমত হয়ে কাজ করা, জ্বালাও পোড়ায় রাজনীতি বর্জন করা সহ উচ্ছৃংঙ্খল কর্মিদের বিরুর্দ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সিদ্ধান- নেয়া হয়েছে। এই যৌথ সভায় উপসি’ত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কে.এম হোসেন আলী হাসান, সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ এম গোলাম কিবরিয়া, এ্যাডভোকেট বিমলকুমার দাস, সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদীকা জান্নাত আরা তালুকদার হেনরি, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোকাদ্দেস আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান দুলাল, সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম শিশির সহ একাধিক নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে সিরাজগঞ্জ জেলার রাজনীতির চলমান অবস্থা সহ উন্নয়নের সকল বাধা বিপিত্বি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এ্যডভোকেট বিমল কুমার দাস, আওয়ামীলীগের জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যডভোকেট কাউছার আহমেদ লিটন, বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক পিপি এ্যডভোকেট রেজাউল করিম তালুকদার, সাইফুল ইসলাম শিশির এই চারজনকে সদস্য করে যৌথ ইসতেহার গঠন করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়। সভায় উপসি’ত নেতৃবৃন্দরা জানান, গত জুলাই মাসে সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় একটি টেন্ডার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনার জের ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্নার বাসভবন ভাংচুর করার ঘটনা ঘটে। এর পর সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয় সহ দোকানপাট ও বাড়ীঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের সাধারন কর্মীসহ সিনিয়র নেতারা রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার হয়।  উভয় দলের শীর্ষ নেতা কর্মিদের নামে মামলা পাল্টা পাল্টি মামলা দায়ের করা হয়। বিষয়টি শহরে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। ভবিষ্যতে সিরাজগঞ্জে আর যেন এধরনের সহিংস ঘটনা না ঘটে সে জন্য নেতৃবৃন্দরা একমত হন।
সভায় উপসি’ত জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সিরাজগঞ্জের রাজনীতিতে সুষ্ঠধারা আনার ক্ষেত্রে এবং প্রতিহিংশা রাজনীতি বর্জনের জন্য আমরা একমত হয়েছি। দলের মধ্যে কতিপয় খারাপ নেতাকর্মিদের জন্য রাজনৈতিক পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে, একই সঙ্গে  দলের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। উভয়দলের পক্ষ থেকে সিরাজগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে এসকল খারাপ নেতাকর্মিদের বিরুর্দ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমরা আগামী শুক্রুবারের মধ্যেই যৌথ ইসতেহার ঘোষনা করতে যাচ্ছি। এছাড়াও এই সভার পর সার্বিক বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির নেতাকর্মিদের নিয়েও সভা আহবান করে সকল নেতাকর্মিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এর পরেও যদি কেহ ধংশাত্বক কাজ কর্ম করে তার কৃতকর্মের ফল সে নিজে ভোগ করবে। সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাষ্ট্রিজ এর সভাপতি সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা জানান, যৌথসভাটি সিরাজগঞ্জের জন্য একটি আর্ষিবাদ। রাজনীতি করা হয় দেশের জন্য জনগনের জন্য। কোন হানাহানি, সংঘাতের জন্য নয়। সিরাজগঞ্জের উন্নয়নে সকল দল এক হয়ে কাজ করবে এ সিদ্ধান্ত সিরাজগঞ্জকে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান বলেন আমরা সভা করেছি ব্যাক্তি স্বার্থে নয়, জেলার মানুষ তথা দেশের স্বার্থে। রাজনীতির ব্যানারে মিটিং মিছিলের নামে জেলায় কোন রকম ধংশাত্বক কর্মকান্ড করা যাবেনা এটাই আমাদের মূল উদ্দ্যেশ্যে। এধরনের কোন নেতাকর্মি দলের মধ্যে থাকলে অবশ্যই কোন কারন ছাড়াই তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করে তাদের বিরুর্দ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমরা জেলার উন্নয়নে বিশ্বাসী। জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ এম গোলাম কিবরিয়া সভা শেষে সারমর্ম টেনে বলেন, দুই দলের পক্ষ থেকে চারজনকে যৌথ ইসতেহার তৈরি করে ঘোষনা করার জন্য বলা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে সবাই একমত হয়েছে। তবে ইতির্পর্বে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাগুলো নিষ্পত্বিও বিষয়টিও আলাপ হয়েছে। এ ছাড়াও সভার সিদ্ধান-গুলো দলীয় নেতাকর্মিদের মধ্যে প্রচার প্রচারনা করার জন্য উভয় দলের নেতাকর্মিদেরকে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে। সুষ্ঠ ও গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করাই হবে আজকের এই সভার উদ্দ্যেশ্যে।