15 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / জাতীয় সংবাদ / পাক-হানাদার কর্তৃক ২১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা কে হত্যা আজ ১৩ সেপ্টেম্বর সাপাহার বাসীর শোকার্ত দিন

পাক-হানাদার কর্তৃক ২১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা কে হত্যা আজ ১৩ সেপ্টেম্বর সাপাহার বাসীর শোকার্ত দিন


এনবিএন ডেক্স : আজ ১৩ সেপ্টেম্বর নওগাঁর জেলার সাপাহার উপজেলাবাসীর এক শোকার্ত দিন। এই দিন সাপাহারকে শত্র“ মুক্ত করতে গিয়ে এলাকার ২১ জন বীর তাদের তাজা প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দেশের স্বাধীনতাকে রা করেছিলেন। তাই আজো বছর ঘুরে এই দিন এলে সাপাহারের অনেক মুক্তিকামী মানুষ ও সন্তান হারা মা’ ভাই হারা বোন তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান ও ভাইকে ফিরিয়ে পেতে দিনটিকে স্মরন করে অঝোরে তাদের চোখের পানি ফেলেন। এলাকার কিছু প্রত্যদর্শী ও সে দিনের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এস এম জাহিদুল ইসলাম, মনছুর আলী, আঃ রাজ্জাক সহ একাধীক মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের নিকট থেকে জানা যায়, দেশে মুক্তি যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে তৎকালিন সাপাহার হাইস্কুল বর্তমান পাইলট স্কুল মাঠ ও পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর পাড়ে পাক সেনারা একটি শক্তিশালী ঘাঁটি তৈরী করে। আর সেখান থেকেই প্রতিদিন তারা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে অসহায় মানুষের ধনসম্পদ লুট পাট মা-বোনদের ইজ্জত লুন্ঠন করে এলাকায় এক ত্রাসের রাজত্ব কয়েম করেছিল। দেশের এই প্রতিকুল অবস্থায় তৎকালীন পাকহানাদর লেঃ শওকত আলীর অধীনস্থ সাপাহারের সেই শক্তিশালী ক্যাম্পটিকে উৎখাত করে নর পিচাশদের কবল থেকে অসহায় নিরস্ত্র মানুষকে রা করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় সাহসী কিছু মুক্তিযোদ্ধার দল। যুদ্ধের প্রায় ৬মাস পর সেপ্টম্বর মাসে সাপাহারকে পাক সেনা ও তাদের দোষরদের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য এলাকার ও পার্শ্ববর্তী মহাদেবপুর উপজেলার ৮০জন বীর মুক্তিযোদ্ধার একটি দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুযোগ খুঁজতে থাকে। পরিশেষে সুযোগ বুঝে আজকের এই দিনে (১৩ সেপ্টেম্বর) তারা মুক্তিবাহিনীর মেজর রাজবীর সিংএর আদেশক্রমে ও ইপিআর এর হাবিলদার আহম্মদউল্লার নেতেৃত্বে ৮০জনের ওই সু-সজ্জিত দলটিকে তিনটি উপ দলে বিভক্ত করে। এর পর একটি দলকে সাপাহার-পতœীতলা সড়কের মধইল ব্রীজে মাইন বসানোর কাজে নিয়োজিত করে যাতে নজিপুর হতে নতুন কোন শত্র“ সেনা সাপাহারে প্রবেশ করতে না পারে। অপর দলটিকে সার্বনিক টহল কাজে নিয়োজিত রাখে আর মুল দলটি শত্র“ সেনার ঘাঁটিকে আঘাত করার জন্য কাছা কাছি একটি ধান েেত অবস্থান নেয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের হাজারো সর্তকর্তা ও নিশ্চিদ্রতার জাল ভেদ করে বাংলার মোনাফেক রাজাকার মারফত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনের খবর পৌঁছে যায় শত্র“ শিবীরে। তাৎনিক তারাও যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। শুরু হয় উভয় পরে মধ্যে যুদ্ধোর নানা পরিকল্পনা। অবশেষে রাত শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধার দলটি আক্রমন করে শত্র“ শিবীরে। মহুর্তে শুরু হয় দু’পরে মধ্যে তুমুল লড়াই। লড়ায়ের এক পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার দলটি যখন শত্র“সেনাদের প্রায় কোণঠাসা করে ফেলেছিল, টিক সে মহুর্তে ভোরের আভাস পেয়ে ব্রীজে মাইন বসানোর কাজে নিয়োজিত দলটি সেখান থেকে সরে পড়ে। আর সঙ্গে সঙ্গে ওঁত পেতে থাকা হানাদার বাহিনীর অসংখ্য সদস্য সাপাহারে প্রবেশ করে। এর পর তাদের শক্তি বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল গতিতে তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের অত্যাধুনিক ভারী অস্ত্র সস্ত্রের কাছে হিমশিম খেয়ে বাধ্য হয়ে পিছু হটতে হয় মুক্তিযোদ্ধার মুল দলটিকে। এসময় শত্র“ পরে গুলির আঘাতে যুদ্ধের মাঠেই শাহদত বরণ করেন মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান, আইয়ুব আলী, আব্দুল হামিদ সহ ১৫জন। আহত হন মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলী, এস এম জাহিদুল ইসলাম, দলনেতা আহম্মদল্লাহ, সোহরাব হোসেন, নুরুল ইসলাম সহ অনেকে। এ ছাড়া শত্র“দের হাতে জীবিত ধরা পড়েন ৮জন। শত্র“রা এই আটক ৮জনের ৪জনকে পতœীতলার মধইল স্কুলের ছাদে তুলে কুপিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে লাশগুলি লাথি মেরে নিচে ফেলে দেয়। ২জনকে ধরে এনে মহাদেবপুরের একটি কূপে ফেলে দিয়ে জীবন্ত কবর দেয়। শেষে ধৃত মুক্তিযোদ্ধা সাপাহারের তিলনা গ্রামের আবু ওয়াহেদ ও মহাদেবপুরের জোয়ানপুর গ্রামের মৃত এস এম আবেদ আলীর পুত্র এস এম জাহিদুল ইসলামকে ধরে এনে নাটোরের রাজবাড়ীতে তৈরীকৃত তাদের জেলখানায় বন্দি করে রাখে। সেখানে তারা শত্র“সেনাদের হাজারো নির্যাতন সহ্য করে সুযোগ বুঝে একদিন জেলের প্রাচীর টপকিয়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে দিবসটি ফিরিয়ে এলেও সাপাহার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প থেকে দিনটি স্মরনে কোন কিছুই করা হয়না। তবে প্রতি বছর দিবসটি স্মরনে যুদ্ধে শহীদদের আতœীয় স্বজনরা অঝোরে তাদের চোখের পানি ফেলেন। স্বাধীনতার ৪৩বছর পরে হলেও যুদ্ধাপরাধী সেই হায়না রাজাকারদের বিচার কাজ শুরু এবং রায় কার্যকর হওয়ায় এলাকার শহীদ জননী ও তাদের আতœীয় স্বজনদের মনে একটু সান্তি পেয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত যেন তারা ছাড়া না পায়, তাদের সবকটির বিচারের রায় যেন কার্যকর হয় এই প্রত্যাশায় এখন প্রহর গুনছেন শহীদ জননী ও তাদের আতœীয় স্বজনরা।

আরও পড়ুন...

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সমতল আদিবাসীদের মিলন মেলায় ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালী নৃত্য প্রতিযোগিতায় আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, আদিবাসীরা পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো আনা মানুষ হয়েছে ————————————–খাদ্যমন্ত্রী

এন বিএন ডেক্সঃ  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অর্থাৎ আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, তবে পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো …