কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের স’ানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র তিন টি টেন্ডার’র প্রায় সোয়া ৮ কোটি টাকা মুল্যের ২১টি গ্রুপের কাজে সাধারণ ঠিকাদাররা অংশ নিতে পারেনি। শাসক দল আওয়ামী লীগের বিবাদমান দু’টি গ্রুপের ঠেক পার্টি’র লোকজন সিডিউল বিক্রির প্রতিটি দপ্তরে অবস’ান নেয়ায় সাধারণ ঠিকাদাররা নির্বিঘ্নে সিডিউল কিনতে পারেনি। ফলে তিনটি টেন্ডারের ২১টি কাজে সরকার প্রায় এক কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এমতাবস’ায় সাধারণ ঠিকাদারগণ টেন্ডার তিনটি বাতিলের দাবী জানিয়েছে।
এদিকে- টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা দু’টি গ্রুপের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়ায় কেউ-ই টেন্ডারগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। ফলে বিক্রিত স্বল্প সংখ্যক সিডিউল দরপত্র বাক্সে জমা পড়েছে বলে একটি সুত্র জানিয়েছে। সুত্র জানায়- টেন্ডার তিনটি নিয়ন্ত্রণ না হওয়ায় একদিকে দু’টি গ্রুপের লোকজন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে, অন্যদিকে- ওই দু’ গ্রুপের ঠেক পার্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের ভিতর সিডিউল কিনতে না পারায় সাধারণ ঠিকাদারগণ ওই টেন্ডারগুলিতে অংশ গ্রহন করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়- কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র তিনটি টেন্ডারের নোটিশ পত্রিকান-রে প্রকাশ পাবার পর আওয়ামী লীগের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকারী দু’ গ্রুপ তৎপর হয়ে ওঠে। দু’টি গ্রুপের ঠেকপার্টির লোকজন গত প্রায় এক সপ্তাহ আগ থেকে টেন্ডারগুলির সিডিউল বিক্রির দপ্তর এলজিইডি, জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং পুলিশ সুপার কার্যালয় সহ সকল দপ্তরের আশ-পাশে অবস’ান গ্রহন করে। এই ঠেকপার্টির কারণে সাধারণ ঠিকাদারগণ উল্লেখিত দপ্তর সমুহ থেকে সিডিউল ক্রয় করতে পারেনি। সিডিউল বিক্রির শেষ দিনে অর্থাৎ গত রোববার টেন্ডার নিয়ন্ত্রনকারী দু’টি গ্রুপের ঠেকপার্টির আস্ফালন সর্বত্রই দৃশ্যমান হয়ে উঠে। এদিন সকালে একদল সাংবাদিক পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সিডিউল বিক্রির খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারে সেখানে সিডিউল নেই। এরপর আর একদল সাংবাদিক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে একই দৃশ্য দেখতে পায়। এলজিইডি চত্বরে পুলিশের উপসি’তি লক্ষ্য করা গেলেও তারা এলজিইডিকে ঠেকপার্টি মুক্ত করতে পারেনি। অন্যদিকে- সিডিউল বিক্রির শেষ সময়ের দিকে দু’ গ্রুপের কতিপয় ব্যক্তির মাঝে মতপার্থক্য দেখা দেয়ায় বেশ কিছু সিডিউল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রোববার গভীর রাত পর্যন- টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকারী দু’টি গ্রুপের লোকজন দফায় দফায় বৈঠক করেও সমঝোতায় পৌছতে না পারায় অবৈধভাবে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগটি ভেসে- যায়। একটি ঘনিষ্ঠ সুত্র জানিয়েছে- তিনটি টেন্ডার মিলে সিডিউল বিক্রি হয়েছে প্রায় ৭০টি। যদি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা হতো তাহলে সিডিউল বিক্রির সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেত। এতে সরকার’র সিডিউল বিক্রি খাত থেকে রাজস্ব আয় হতো প্রায় এক কোটি টাকা। আলোচিত ৩টি টেন্ডারের মধ্যে ১৪ নং টেন্ডারে মোট গ্রুপ ছিল ১২টি। এ গ্রুপগুলি’র প্রাক্কলন মুল্য ছিল ৪ কোটি ৫২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫০ টাকা। ১৫ নং টেন্ডারে মোট গ্রুপ ছিল ৫টি। এ গ্রুপগুলির প্রাক্কলন মুল্য ছিল ৩ কোটি ১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭শ’ ৭২ টাকা। ১৬ নং টেন্ডারে মোট গ্রুপ ছিল ৪টি। এ গ্রুপগুলির প্রাক্কলন মুল্য ছিল ৫৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯শ’ ৪৬ টাকা। এব্যাপারে কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশল অধিদপ্তর’র সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের কাছে বিক্রিত সিডিউল’র সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন- যেসব দপ্তরে সিডিউল বিক্রি হয়েছে, সেই হিসাবগুলি এখন পর্যন- সমন্বয় করা হয়নি। তাই এই মহুর্তে বিক্রিত সিডিউলের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারছি না। টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা সম্পর্কে তিনি বলেন- স্যার (নির্বাহী প্রকৌশলী) ইন্দোনিশিয়া সফরে গেছেন। বর্তমানে সিনিয়র এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার শরিফুজ্জামান দায়িত্বে আছেন। আপনারা উনার কাছ থেকে এসব জেনে নিন। পরবর্তীতে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা সিনিয়র এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার শরিফুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Home / প্রতিবেদন / কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র সোয়া ৮ কোটি টাকার তিনটি টেন্ডারে সাধারণ ঠিকাদাররা অংশ নিতে পারেনি টেন্ডার বাতিলের দাবী
আরও পড়ুন...
বে-সরকারী সংস্থার উদ্যোগে নওগাঁয় স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পা এখন সুস্থ্য
এনবিএন ডেক্স : স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পাকে দীর্ঘদিন ঢাকায় বার্ণ হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ্য …