এনবিএন ডেক্সঃ নানা সমস্যায় জর্জরিত নওগাঁ শহরের বালূডংগায় অবসি’ত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আজ পর্যন্ত এর উন্নয়নতো দূরের কথা সংস্কার পর্যন্ত হয়নি। যাত্রীদের জন্য নেই কোন বসার স্থান। নেই বৈদ্যুতিক আলো ও ফ্যানের ব্যবস্থা। ভাংগা দরজার অন্ধকার দুর্গন্ধময় টয়লেটে। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। চারদিকে আবর্জনার সতূপ। নেই কোন পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। যাত্রী ও শ্রমিকের জন্য একটি মাত্র টিউবয়েল। এতেই চলে সব কাজ। বর্ষা মৌসুমে টার্মিনাল ভবন থেকে চত্বর পর্যন্ত হয়ে পড়ে কর্দমাক্ত। চলাচল হয়ে পড়ে দুঃসাধ্য ব্যাপার। নওগাঁ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি নওগাঁ পৌরসভার। প্রতি বছর পৌরসভা নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের কাছে লিজ দেয়। মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরেও তারা পৌরসভার নিকট থেকে প্রায় সোয়া ৫লাখ টাকার বিনিময়ে লিজ গ্রহণ করেছে। অভিযোগ আছে পৌরসভা এবং মালিক গ্রুপ তাদের ব্যবসার বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন’ যাত্রীসেবা ও শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধার দিকে তাদের বিন্দুমাত্র নজর নেই। ফলে দিনে পর দিন অব্যবস্থা ও অবহেলা টার্মিনাল ভবনটি হয়ে পড়েছে জরাজীর্ণ। নওগাঁ জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বর্তমানে টার্মিনালের যা অবস্থা তাতে সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা ময়লায় সয়লাব হয়ে যায়। যাত্রী ও জনসাধারণ পড়েন চরম দুর্ভোগে। মালিক গ্রুপকে বারবার ওই সমস্যাগুলোর বিষয়ে বলা হলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না তারা। নওগাঁ জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মালিক গ্রুপ টার্মিনাল লিজ নেয়। তাদের টার্মিনাল সংস্কারের জন্য বললেও কোন গুরুত্ব দিতে চায় না। নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম বলেন, টার্মিনালের দুরবস্থার শেষনেই। এবারো মালিক গ্রুপ সোয়া ৫লাখ টাকার পৌরসভার কাছ থেকে লিজ নিয়েছে। মেয়রকে টার্মিনালের সমস্যাগুলোর বিষয়ে বার বার জানিয়ে আসছি। উনি দিব দিচ্ছি করে সময় পার করছেন। কিন’ এখনো পর্যন্ত একটিও সমস্যা সমাধান করেননি। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, নওগাঁ বাস টার্মিনালের মত দুরাবস্থা আর কোন টার্মিনাল আছে কিনা আমার জানা নেই। নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নাজমুল হক সনি টার্মিনালের সমস্যার কথা স্বিকার করে বললেন, আগামীতে টার্মিনালটি যুগপোযোগী করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা সমস্যার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর আজ পর্যন্ত এর কোন সংস্কার হয়নি। ফলে দিনদিন সমস্যাগুলো বেড়েই গেছে। আমি চেষ্টা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টার্মিনালটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার। কথা হয় পোরশার বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী মফিজ উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, স্ত্রীকে নিয়ে সকালে এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। বাসে পোরশায় যাবেন। বসার কোন জায়গা না পেয়ে মেঝেতেইবসে আছেন। ধামইরহাট যাবেন স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে আব্বাস আলী। তাদের টয়লেট প্রয়োজন হওয়ায় টয়লেটে গিয়েছিলেন। কিন’ অন্ধকার ও ভাংগা দরজা দেখে তাঁর স্ত্রী টয়লেটে ঢুকতে সাহস করেননি। অগত্য টার্মিনালের সামনের এক হোটেলের মালিককে অনুরোধ করে টয়লেট ব্যবহার করেছেন। অপরদিকে সাধারন শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন প্রচন্ড পরিশ্রম করে এসে টার্মিনালে একটু যে বিশ্রাম নিবে, সেই স্থানটিও নেই। গোসলেরও কোন ব্যবস’া নেই। আর বাধ্য হয়ে অপরিচ্ছন্ন টয়লেট ব্যবহার করেন তারা। তবে মালিক, শ্রমিক, যাত্রী সবার দাবী একটাই দ্রুত নওগাঁ কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনালটি সংস্কার করা হোক।
আরও পড়ুন...
বে-সরকারী সংস্থার উদ্যোগে নওগাঁয় স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পা এখন সুস্থ্য
এনবিএন ডেক্স : স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পাকে দীর্ঘদিন ঢাকায় বার্ণ হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ্য …