15 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / প্রতিবেদন / সিরাজগঞ্জে প্রশাসনের তদারকীর অভাবে বে-দখল হয়ে যাচ্ছে সরকারী শত কোটি টাকার খাস জমি

সিরাজগঞ্জে প্রশাসনের তদারকীর অভাবে বে-দখল হয়ে যাচ্ছে সরকারী শত কোটি টাকার খাস জমি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ শহরের কয়েক শত কোটি টাকা মুল্যের সরকারী ১ নং খাস সম্পত্তি রেলের জমি দেখিয়ে অবৈধভাবে দখলের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, স্বাধীনতার পরে রেল চলাচল কমে যাওয়ায় ও দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় সিরাজগঞ্জ শহরের ভূতের দিয়ার মৌজার ১০.১৩০০ একর,ভাংগাবাড়ী মৌজায় ১১.৬৮৭৫ একর ও রায়পুর মৌজায় ৯০.৪০০০ একর সর্বমোট ১১২.২১৭৫ একর জমি অবৈধ দখল ও পতিত থেকে যায়। এর মধ্যে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যক্তি রেল বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজসে শত শত বিঘা জমি দখল করে নেয়। বিষয়টি সরকারের নজরে এলে সিরাজগঞ্জ জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৯৮৬ সালের ২২ মে সার্কুলারের নির্দেশে ১৮৯৪ সালের ভূমি হুকুম দখল এ্যাক্ট,১৯৪৮ সালের (জরুরী) সম্পত্তি হুকুম দখল ও ১৯৮২ সালের ভূমি হুকুম দখল অধ্যাদেশের ১৭ ধারা মোতাবেক ১১২.২১৭৫ একর জমি কেন পূনঃগ্রহন করা হবে না মর্মে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগকে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন’ রেলওয়ে বিভাগের জবাব বিধিসন্মত না হওয়ায় এল এ ম্যানুয়াল ১৯১৭ এ বর্নিত নির্বাহী আদেশের ১৩৫ ও ১৩৮ নং অনুচ্ছেদ,অধ্যাদেশ নং ২,১৯৮২ এর ১৭ (২) ধারা অনুযায়ী উক্ত ভুমি পূনঃগ্রহন বিবিধ কেস নং ২০/১৯৮৭ এর মাধ্যমে সকল আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্তি অনে- পূনঃগ্রহন করে সংশ্লিস্ট সকল দপ্তরের যাবতীয় রেকর্ডপত্র সংশোধন করে ২০০২ সালের ১৩ই মার্চ ১নং খাস খতিয়ান ভুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেট (পৃষ্ঠা ১০৪১) ভুক্ত করে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়,ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি চক্র রেলবিভাগের কিছু কর্মকর্তা,কর্মচারীর যোগসাজসে জমিগুলো পূনঃরায় রেলের কাছ লিজ নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,বসতবাড়ি সহ বিভিন্ন স’াপনা তৈরী করে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক তদারকী না থাকায় খাস খতিয়ান ভূক্ত বিপুল পরিমান জমি বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম আলোচিত রায়পুর মৌজার জেল এল নং-(প্লান) ১৯০ দাগ নং ৬০২৬ (অংশ) ০.৮০ একর জায়গা অন্যতম। জায়গাটি রেল বিভাগের কাছ থেকে লিজ গ্রহিতা শেরে বাংলা ফজলুল হক রোডের মৃত কছের আলীর পুত্র সেভেন স্টার ফ্লাওয়ার মিলের মালিক হাজী ফজলুর রহমান। জায়গাটি ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত (পূনঃগ্রহনকৃত রায়পুর মৌজায় জমির দাগ ৩২২৩ পরিমান ১০.৭৮০০ একর) হওয়ায় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ চালিয়ে দখল নেয়া হয়। কিন’ মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ৩রা মে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ থেকে উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল পাকশী অফিসের এষ্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ১৩ হাজার ৮ শ’ টাকা জমা দিয়ে ৫ বছর মেয়াদী (১৪১৭ থেকে ১৪২১ বাংলা সন পর্যন-) লিজ গ্রহন করেন। যার রশিদ নং ১৫৬০৭৩ তারিখ ০৮/০৯/২০১০ ইং। কিন’ রেলের জায়গা টেম্পু ষ্টান্ড ব্যতীত এক বছরের অধিক লিজ না দেয়ার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেত্ত তিনি রেলের এক শ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তাদের মোটা অংকের অর্থ উৎকোচ দিয়ে এই লিজ পক্রিয়া সম্পন্ন করেন বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। সেই সাথে লিজের জায়গায় পাকা বসত বাড়ি,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেত্ত হাজী ফজলুর রহমান পুরো জায়গাটুকু টিন দিয়ে ঘেরা দিয়ে অভিনব কায়দায় গত বছরের মার্চ মাসে বিশাল আকৃতির পাকা ঘর তৈরীর কাজ শুরু করেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসন অবগত হওয়ার পর গত ২০১১ সালের ১৩ মার্চ সকাল ১০ টায় আরডিসির মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয় এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস’া গ্রহনের জন্য সিদ্ধান- হয়। পরবর্তীতে দুপুর ২টার দিকে মিটিং শেষ হওয়ার পর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে প্রশাসন অবৈধ স’াপনা ভেঙ্গে ফেলে। এর পরে সুচতুর ফজলুর রহমান স’ানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আরজুর স্বাক্ষরিত একটি মিথ্যা হলফনামা উচ্চ আদালতে দাখিল করে কনডেম জারী করে। আরজু তার লিখিত হলফনামায় বলেন, ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেলা ১১টার সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস’লে উপসি’ত হয়ে মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন থাকা সত্ত্বেত্ত উত্তরাংশের আংশিক দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। কিন’ ঘটনা দুপুরে সময় ও ১৩ তারিখে হওয়ার পর আরজু কিভাবে প্রকৃত সময় তারিখ গোপন করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনা পর সরকারী ১নং খাস খতিয়ান ভুক্ত জমি উদ্ধারে প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে সদর উপজেলা কমিশনার ভূমি সেলিম আহমেদ জানান,মহামান্য হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা থাকার কারনে আমরা উচ্ছেদ চালাতে পারছি না। তবে নিষেধাজ্ঞা বাতিল হওয়ার সাথে সাথে আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে জমি দখলে নিতে পারবো। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, জায়গাটি ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেত্ত রেল বিভাগ অবৈধভাবে লিজ দিয়েছে। মূল্যবান সম্পত্তিটি উদ্ধার ও প্রয়োজনীয় ব্যবস’া গ্রহনের জন্য উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। তিনি বলেন মহাজোট সরকারের সময়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের এ ধরনের অপতৎপরতা রোধ করতে না পারলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। অন্যদিকে এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল পাকশী অফিসের এষ্টেট অফিসার গত সোমবার মুঠেফোনে জানান, রেলের জমি টেম্পু স্টান্ড ও মৎস্যচাষ ব্যতীত ১ বছরের অধিক লিজ দেয়ার কোন নিয়ম নেই। সেই সাথে রেলের জমি আর লিজ না দেওয়ার জন্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে। লিজের জমিতে পাকা স’াপনা করা সম্পূর্ন অবৈধ। সরকারের নির্দেশ অমান্য করে এ ধরনের কাজ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস’া গ্রহন করা হবে।

আরও পড়ুন...

বে-সরকারী সংস্থার উদ্যোগে নওগাঁয় স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পা এখন সুস্থ্য

এনবিএন ডেক্স : স্বামী কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু সম্পাকে দীর্ঘদিন ঢাকায় বার্ণ হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ্য …