সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে সরকারী বিধিবিধান না মেনে ফাইন্যান্স, সেভিং, ইনভেস্টমেন্ট, মাল্টি পারপাস ও কো-অপারেটিভ সোসাইটির অন-রালে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার ব্যাংকিং লেনদেন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন অনুমতি না নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলো অসহায় সাধারন মানুষকে অধিক মুনাফা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেবার আশ্বাসের ফাঁদে ফেলে গ্রাহক তৈরী করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারনে ব্যাংক গুলোতে ডিপোজিটের পরিমান হ্রাস এবং তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, পপুলার ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি, কনজারভেটিভ মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি:, মাদানী ইনভেস্টমেন্ট লি:, ইউনি-রুট ফাইন্যান্স এন্ড কমার্স লি:, অবকাশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি:, ম্যাক্সিম মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি:, জনতা ফাইন্যান্স এন্ড কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি: ও দিগন- সেভিং এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি: নামের এই সব প্রতিষ্ঠানগুলো জনসাধারনের কাছ থেকে ব্যাংকের চেয়েও দ্বিগুন মুনাফার লোভ দেখিয়ে হজ্জ আমানত, ডি.পি.এস, মাসিক মুনাফা , দ্বিগুন বৃদ্ধি আমানত, শিক্ষা আমানত, আবাসন আমানত , বাৎসরিক আমানত, দেনমোহর আমানত, কোটিপতি ডিপোজিট স্কীম, লাখপতি ডিপোজিট স্কীম প্রকল্পের নামে প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা লেনদেন করছে। সিরাজগঞ্জ এস. এস রোডস’ মেট্রো প্লাজার ২য় তলায় অবসি’ত পপুলার ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি: নামক প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে গ্রাহকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমপ্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে তদন- করে। তদন- প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পপুলার ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি: নামক প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ৩১ ধারায় নিবন্ধিত কোন প্রতিষ্ঠান না। এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ৪ ধারায় লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান না হয়েও জন সাধারনকে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রতারনামূলকভাবে নগদ অর্থ সংগ্রহ ও ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এ বর্নিত ব্যাংক ব্যবসায়ের আওতাভূক্ত না হওয়ায় এ প্রতারনা বন্ধ করার এখতিয়ার বাংলাদেশ ব্যাংকের নেই । পপুলার ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি: নামক প্রতিষ্ঠানটির অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ ও আইনানুগ ব্যবস’া নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট পত্র দেয়া হয়। কিন’ প্রশাসন কোন ব্যবস’া না নেয়ায় প্রতিষ্ঠানটি অবাধে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পপুলার ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লি: সিরাজগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মোশারফ হোসেন প্রতিষ্ঠানটির বৈধ কাগজ-পত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, এবিষয়ে সবকিছু হেড অফিস জানেন আমি কিছুই বলতে পারব না। সিরাজগঞ্জ জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. নবীরুল ইসলাম বলেন, ইনভেস্টমেন্ট ও ফাইন্যান্স নামক প্রতিষ্ঠানগুলো সমবায়ের আওতায় পড়ে না। তবে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান আমাদের নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে জনগনের সাথে প্রতারনা করছে। সিরাজগঞ্জ চেন্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ঠ্রিজ লি. এর সভাপতি সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা এবিষয়ে বলেন, ইনভেস্টমেন্ট ও ফাইন্যান্সিয়াল কার্যক্রম চালাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি লাগে এবং কো-অপারেটিভ সোসাইটির কার্যক্রম করতে সমবায় কর্তৃক নিবন্ধন পত্র লাগবে। পাশাপাশি স’ানীয় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি পত্র লাগবে। কিন’ সিরাজগঞ্জে ফাইন্যান্স, মাল্টি পারপাস, ইনভেস্টমেন্ট, সেভিং ও কো-অপারেটিভ সোসাইটির নামে বিভিন্ন প্রতিষ্টান জনগনকে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম করে প্রতারনা করছে। এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক লি. রাজশাহী বিভাগের জি.এম মো. আওলাদ হোসাইন, এ.জি.এম আব্দুল মান্নান, মো. সাখাওয়াত হোসেনসহ অভিজ্ঞ কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধভাবে গ্রাম-গঞ্জের নিরীহ সহজ সরল জনসাধারনকে অধিক মুনাফার প্রলোভন ও লোভ দেখিয়ে যেভাবে নগদ অর্থ বাজার থেকে তুলে নিচ্ছে তাতে ব্যাংকগুলোতে মারাত্বক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। এটিই বর্তমান বাজারে অর্থের তারল্য ও ব্যাংকের আমানত হ্রাস পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ বলে তারা মনে করেন। এভাবে চলতে থাকলে দেশ এক সময় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস’ হবে এবং ব্যাংক ডিপোজিট ব্যাপক সংকটে পড়বে।
Home / অর্থনীতি / পপুলার, কনজারভেটিভ, মাদানী, ইউনি-রুট, অবকাশ, ম্যাক্সিম, জনতা ফাইন্যান্স, দিগন্ত সেভিং সিরাজগঞ্জে অনুমতি ছাড়া অর্থলেনদেন ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো
আরও পড়ুন...
নওগাঁয় এন আর বি সি ব্যাংকের ২২ তম শাখার শুভ উদ্বোধন!!
এনবিএনডেক্স: নওগাঁয় এন আর বি সি ব্যাংক (এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড) এর ২২ তম শাখা …