এনবিএন ডেক্স: নওগাঁর মহাদেবপুরে কেবলমাত্র কাগজ দিয়ে ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন নাজনীন নাহার নামে এক গৃহবধু। তার পরিবারের সোফাসেট, টি-টেবিল, টুল, চেয়ার, ফুলদানী, মোড়া, আলনা, পীড়া এমন কি রুটি তৈরির পীড়া পর্যন্ত সবই কাগজের তৈরি করেছেন।
একান্ত আলাপচারিতায় গৃহবধু নাজনীন নাহার বলেন, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের নওহাটা মোড়ের সামান্য দক্ষিন পার্শ্বে খোর্দ্দ নারায়নপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের কন্যা নাজনীন নাহার। বিবাহিত হলেও স্বামী সন্তানসহ থাকেন পিতার বাড়িতেই। দুই সন্তানের জননী এই গৃহবধু একান্ত কৌতুহল থেকেই শুরু করেন কাগজ দিয়ে এসব আসবাবপত্র তৈরির কাজ। প্রায় বছর দুয়েক আগে বগুড়া থেকে তার খালা ফেন্সী তাদের বাড়িতে বেড়াতে এলে তার নিকট থেকে কাগজ দিয়ে এসব তৈরি করা যায় এমন গল্প শুনেছিলেন তিনি। তারপর থেকে প্রচেষ্টা শুরু। এসব কাজে তিনি লেখার খাতার কাগজ, পুরাতন সংবাদপত্র এবং বিশেষ করে বিভিন্ন সামগ্রী পরিবাহি পুরাতন কার্টুনগুলো ব্যবহার করে থাকেন।
তার বর্ননা অনুযায়ী রাতের বেলা কাগজ পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরদিন সকালে এসব ভিজানো কাগজ দিয়ে মুন্ডু তৈরি করা হয়। এই মুন্ডু বিভিন্ন আকৃতি দিয়ে এসব তৈরি করেন। সংসারের প্রাত্যহিক
ৎখাশুনা ইত্যাদি কাজের ফাঁকে ফাঁকে নাজনীন নাহার একান্ত নিজের পরিকল্পনা থেকেই সোফাসেট, টেবিল, টি-টেবিল, চেয়ার, ফুলদানী, মোড়া, আলনা, পীড়া ইত্যাদি তৈরি করে থাকেন। পরে এগুলোতে বিভিন্ন রং করে ঘর সাজিয়েছেন তিনি। তার বাড়িতে কাঠের বা ষ্টীলের কোন আসবাবপত্র নাই। সবই কাগজের তৈরি। আশ্চর্যের বিষয় এসব সামগ্রী তৈরি করতে কোন ফ্রেম ব্যবহার করেননি তিনি। সম্পন্ন হাতের আন্দাজ অনুযায়ী তৈরি করেছেন। এসব দেখতে খুবই নিখুঁত এবং দৃষ্টিনন্দন। এসবের উপর যে কারু কাজগুলো করা হয়েছে তাও নিছক হাতেই করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বর্ষার সময় বা বৃষ্টি হলে এসব তৈরি করা যায় না। কেবলমাত্র প্রচন্ড রোদের সময় তৈরি করা হয়। কারন এগুলো তৈরির পর অনেক রোদে শুকাতে হয়। ভালো করে না শুকালে তেমন শক্ত হয় না। একবার তৈরি করে রোদে শুকালে কাঠের আসবাবপত্রের মতই শক্ত ও মজবুত হয়। ষ্টীল, লোহা বা কাঠের সামগ্রীতে মরিচা বা ঘুনপোকা আক্রমন করতে পারে কিন্তু ভালো করে শুকানো কাগজের তৈরি আসবাবপত্র কোন ঘুনপোকা বা মরিচায় আক্রান্ত হয় না। সৌখিনভাবে ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে রুচি সম্পন্ন এসব আসবাবপত্রের চাহিদা থাকলেও তিনি এখনও বাজারজাত করতে পারেননি। এখনও পারিবারিকভাবে ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন তিনি। তবে বাজারজাত করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে এসব আসবাবপত্রের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িক ভাবে এসব তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ারা বেগম বলেন, নাজনীনের এই মেধা দেখে এলাকারা মানুষ হতবাক হয়ে গেছেন। তার এসব আসবাবপত্রের প্রতি এলাকাবাসীর খুবই কদর। তিনি নিজে এসব তৈরি করেই থেমে নেই প্রতিবেশী অনেক মহিলাদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষন দিয়েছেন। ওই মহিলারাও পারিবারিকভাবে বিভিন্ন আসবাপত্র তৈরি করছেন। তিনি আরও বলেন এসব সামগ্রীর কদর রয়েছে। তবে বাজার সৃষ্টিতে প্রশাসনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন...
নওগাঁ সুষ্ঠু আইন শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁ ফ্যাসিবাদি স্বৈরাচার প্রতিরোধ, দুর্নীতিবাজ, ভূমিদস্যু, মাদক সিন্ডিকেট, সন্ত্রাসী চিহ্নিতকরণ, সুষ্ঠু আইন শৃঙ্খলা …