18 Magh 1431 বঙ্গাব্দ শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / স্বাস্থ্য / সিরিজ -০১ নামসর্বস্ব রেজিষ্টেশন নওগাঁ ক্লিনিকগুলোর রমরমা ব্যবসাঃ নেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা

সিরিজ -০১ নামসর্বস্ব রেজিষ্টেশন নওগাঁ ক্লিনিকগুলোর রমরমা ব্যবসাঃ নেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা

এনবিএন ডেক্স: সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নওগাঁ চলছে রমরমা ক্লিনিক ব্যবসা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের শর্তাবলী পালন করে ক্লিনিকগুলো অনুমোদন লাভ করলেও এসব শর্ত ভূলে শুরু হয় গলাকাটা ব্যবসা। নওগাঁ শহরে বর্তমানে অর্ধশতাধিক ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকের অধিকাংশের নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স। সারকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা ক্লিনিকে প্রাইভেট রোগী দেখায় ব্যস- থাকেন। নার্স সংকট থাকার বেশির ভাগ ক্লিনিকে আয়া-ওয়ার্ডবয় দিয়ে নার্সের কাজ করানো হয়। এছাড়া ডিপ্লমা ধারী নার্স নাই বললে চলে অর্থাৎ সরকারি বিধি মোতাবেক একটি বেসরকারি ক্লিনিকে যেসব শর্ত থাকা আবশ্যক তার পুরুটা কোন ক্লিনিকে নেই। ফলে স্বাস’্যসেবা নিতে রোগীরা হন বিড়ম্বনার শিকার। চিকিৎসকের অসতর্কতার কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অনেক সময় লাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন। ভুল চিকিৎসা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে শাসি-র ব্যবস্থ্য নেয়ার দাবি জানালে ও অবৈধ তদবিরে তা বাস-বায়ন হয় না। ক্লিনিকগুলোর সেবার মান মনিটরিংয়ের জন্য জেলা প্রশাসনের তিন সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে নামসর্বস্ব কমিটি থাকলেও তদারকির অভাবে ক্লিনিকগুলোর সেবার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে না। মালিকদের ইচ্ছামতো করছে ক্লিনিক ব্যবসা। চিকিৎসকেরা বিভিন্ন ক্লিনিকের ব্যবসায়িক পার্টনার হওয়ার কারণে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাওয়া রোগীদের ক্লিনিকে চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হয়। রোগমুক্তির আশায় এসব সহজ-সরল রোগীরা ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে বড় অংকের টাকা গুণে। কোন কোন ক্লিনিক নিজস্ব দালাল দিয়ে রোগী জোগাড় করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া রংবেরংয়ের সাইনবোর্ড, ব্যানার ও মাইকিং করে রোগীদের দৃষ্টি আর্কষণ সহ গ্রামে গ্রামে দালাল নিয়োগ করে দালালদের রোগীর চিকিৎসায় আদায়কৃত অর্থের মধ্য থেকে কমিশন দিয়ে থাকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। শহরের ক্লিনিকগুলোতে একদিনের চিকিৎসার জন্য গুনতে হয় এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা। দৈনিক রুম ভাড়া নন এসি ৩০০-৫০০ টাকা ও এসি ৫০০-৭০০ টাকা। চিকিৎসকদের কেউ সরাসরি ক্লিনিকের পার্টনার। কেউ পান রোগী প্রতি মোটা অংকের কমিশন। যেসব গর্ভবতী মহিলা প্রাইভেট চিকিৎসকের তত্বাবধানে থাকেন তাদের অনেকেই ক্লিনিকে সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পছন্দসই ক্লিনিকেই রোগীকে ভর্তি হতে হয়। নরমাল ডেলিভারির জন্য রোগীকে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। সিজার করালে গুনতে হয় ১০-১২ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে, বেশি কমিশনের কারণে যেসব রোগীকে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব তাদেরকেও সিজার করানো হয়। যে পরিমাণ টাকা ব্যয় করেন সে পরিমাণ সেবা পান না।  উল্টো ভুল চিকিৎসায় রোগীরা বিড়ম্বনার শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্লিনিকগুলোর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে বাইরে থেকে করিয়ে আনা হয় এবং ঐসব পরীক্ষা নিরীক্ষার কমিশন পায় রেফার্ডকৃত ডাক্তারেরা।  ক্লিনিকে ভর্তিকৃত রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখতে প্রতি রোগি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। ক্লিনিকের নিজস্ব চিকিৎসক থাকেন না সব সময়। সাধারণত ইন্টার্নি চিকিৎসকদের দিয়ে ক্লিনিকের সেবা দেয়া হয়। প্রতিদিন এজন্যও রোগীকে বাড়তি টাকা দিতে হয়। রুম ভাড়াম বাইরের ও ঘরের চিকিৎসক ফি সহ যাবতীয় বিলের অতিরিক্ত ২৫ ভাগ টাকা সেবা চার্জ দিতে হয়। এভাবে হিসাব করলে দেখা যায়, নওগাঁয় ক্লিনিক ব্যবসার নামে শুরু হয়েছে গলাকাটা ব্যবসা। এছাড়াও শহরের অলিতে-গলিতে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক বা প্যাথলজিক্যাল সেন্টার। যাদের অনেকেরই কোন অনুমোদন নেই। নেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কোন বিশেষজ্ঞ। উল্লেখ্য ক্লিনিক ব্যবসার ঝুঁকিঝামেলা ঠেকানোর জন্য জেলায় রয়েছে শক্তি শালী ক্লিনিক মালিক সমিতি। এবিষয়ে নওগাঁর সিভিলসার্জন ডা. সোলাইমান আল ফারুকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ডাক্তারের তুলনায় রোগির চাপ বেশি হওযায় এসব বেসরকারি ক্লিনিকগুলো সুযোগ বুঝে অধিক টাকা আদায় করছে। জরুরি ভাবে সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকগুলো তদারকি করে আইনগত ব্যবস্থ্য নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন...

নওগাঁয় করোনা ভাইরাসে আরও ১ জনের মৃত্যু ঃ সর্বমোট মৃত্যু ২২ জনঃ নতুন আক্রান্ত ১০ জন ঃ সর্বমোট আক্রান্ত ১৩৭৪

এন বিএন ডেক্সঃ নওগাঁ জেলায় নতুন করে ১০ ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আরও …