15 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / কৃষি সংবাদ / নওগাঁয় পাম চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে!!

নওগাঁয় পাম চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে!!

এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁয় পাম চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নওগাঁ সদরসহ মহাদেবপুর, মান্দা, ধামইরহাট, পতœীতলা এবং রানীনগর উপজেলায় ইতোমধ্যে কমপক্ষে ২০/২৫টি পাম বাগান গড়ে উঠেছে। মূলত দোঁয়াশ মাটিতে পাম চাষ হয়ে থাকে। পাম চাষের প্রয়োজনীয় রৌদ্রতাপ, আর্দ্রতা এবং গড় বৃষ্টিপাত সবকিছুই নওগাঁ’র জমিতে বিদ্যমান বলেই এখানে পাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এখানকার উৎসাহী কিছু সচেতন মানুষ পাম চাষ শুরু করেছেন। আর এতে সহযোগিতা করছে গ্রীন গোল্ড এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা পাম গাছের চারা সরবরাহ, প্রচার এবং প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানটি হবিগঞ্জ থেকে পাম গাছের চারা সংগ্রহ করে স্থানীয় পর্যায়ে উৎসাহী পাম চাষিদের মধ্যে চারা সরবরাহ করছে এবং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করছে। জেলার অনেকের মতো নওগাঁ হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসক ডা. ওমর আলী তার ২৫ শতক জমিতে এবং মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার তার ১ বিঘা জমিতে পাম চাষ করেছেন। তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, পাম চাষে খরচ তেমন নেই। প্রতিটি পাম চারার মূল্য সর্বোচ্চ ১শ টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে কমপক্ষে ৮০টি চারা লাগানো যায়। সে হিসেবে প্রথম বছরে চারার মূল্য বাবদ খরচ হয় ৮ হাজার টাকা। সার কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় আরও ৮ হাজার টাকা। বাগান তৈরির দ্বিতীয় বছর পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ৫ হাজার টাকার মতো। আর কোনো খরচ নেই। একটি গাছে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০টি কাঁদি আসে। প্রতিটি কাঁদিতে ২ থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত ফল ধরে থাকে। একটি গাছ থেকে গড়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০ কেজি পাম তেল পাওয়া যায়। গ্রীন গোল্ড এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রেজাউর রহমান টুকু জানান, গাছ থেকে সরাসরি পাম ফল সংগ্রহ করে গরম পানিতে সিদ্ধ করে তাতে চাপ দিয়ে তেল সংগ্রহ করা যাবে। আবার ফলগুলোকে সরিষার তেল উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত কাঠের ঘানিতে নিষ্কাশন করেও তেল সংগ্রহ করা যাবে। বাড়িতে গরম পানিতে সিদ্ধ করে অথবা কাঠের ঘানিতে নিষ্কাশন করে সংগৃহীত পাম তেল সরাসরি বিভিন্ন তরকারি রান্নাতে ব্যবহার করা যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক এস এম নুরুজ্জামান ম-ল জানান, নওগাঁসহ বাংলাদেশে পাম চাষ লাভজনক। চাষের সম্ভাবনাও রয়েছে। কাজেই তারা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রতিটি বাড়িতে ৫/৬টি করে পাম গাছের চারা লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী ২/৪ বছরের মধ্যে মানুষ প্রতিটি বাড়িতেই পাম গাছ লাগাবেন। তিনি বলেন, পাম ফল থেকে পরিশোধনের মাধ্যমে সঠিক প্রক্রিয়ায় তেল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি। তেল নিষ্কাশনের পরিশোধনের ব্যবস্থা নেয়া হলে এ দেশের মানুষের মধ্যে পাম চাষের উৎসাহ আরও বেড়ে যাবে। তিনি আরও জানান, শুধু তেল নয় বাইপ্রডাক্ট হিসেবে পাম ফল থেকে প্রাপ্ত চর্বি দিয়ে সাবান, গ্লিসারিন, বিভিন্ন রকমের কসমেটিক এবং ডিটারজেন্ট পাউডার তৈরি করা যাবে। নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শরীফুল ইসলাম খান বাংলাদেশে পাম চাষের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, পাম ফল থেকে তেল নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনা হলে এবং তেল নিষ্কাশনে সহজ প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করা হলে চাষিরা পাম চাষে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন। তিনি সয়াবিন তেলের চেয়ে পাম তেল অধিক স্বাস্থ্যসম্মত বলে মনে করেন। তিনি আরও বলেন, পাম চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে আমদানি নির্ভর ভোজ্য তেল সয়াবিনের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পাবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটবে।

আরও পড়ুন...

খাদ্যশস্য ধারণক্ষমতা ৩৫ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত করা হবে: নওগাঁয় খাদ্যমন্ত্রী

এনবিএন ডেক্সঃ  খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশের খাদ্যগুদামে খাদ্যশস্য ধারণ ক্ষমতা ৩৫ লাখ মেট্রিকটনে …