এনবিএন ডেক্স: উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে হঠাৎ করেই ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রাম সদর ও রাজিবপুর উপজেলায় অসময়ের এই ভাঙনে তিন শতাধিক বসতভিটা বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এখন পর্যন্ত কোন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর, চর ঘনেশ্যামপুর, গারুহারা, চর পারবর্তীপুর, ওয়াপদা বাজার, ফারাজী পাড়া এবং রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নয়াচর উত্তরপাড়া ও নয়াচর মুন্সি পাড়া গ্রাম দুটি সম্পূর্ণ রুপে বিলীন হওয়ার পথে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে তিন শতাধিক বসতবাড়িসহ শতাধিক বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই ভাঙন প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল গফুর জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির ফলে হঠাৎ করেই নদী তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ আকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে ব্রহ্মপুত্র নদের সাথে কুড়িগ্রাম শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধরলা নদী মিশে যাবে। সেই সাথে শত শত একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। গত কয়েক দিনের ভাঙনে সদর উপজেলার গারুহারা, চর পারবর্তীপুর, ওয়াপদা বাজার, ফারাজী পাড়ার প্রায় ৮০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। অপরদিকে রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম জানান, অসময়ে পানি বৃদ্ধির ফলে ব্রহ্মপুত্রের ভয়াবহ ভাঙনে গত এক সপ্তাহে রাজিবপুর উপজেলার দু্থটি গ্রাম নয়াচর উত্তরপাড়া ও নয়াচর মুন্সিপাড়া গ্রাম দুটি সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও আংশিক ভাঙনের শিকার হয়েছে আরও ৪টি গ্রাম। এতে আড়াই শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। তিনি আরও জানান, ব্রহ্মপুত্র যে হারে ভাঙছে তা ঠেকানো না গেলে নয়াচর বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, নয়াচর ইসলামিয়া মাদ্রাসা, নয়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাজারে এক হাজারের উপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যাবে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন প্রতিরোধে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের জানান, নয়াচর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন প্রতিরোধে কোনো প্রকল্প নেই। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, হঠাৎ করে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন চলছে। নদী ভাঙা মানুষের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।