15 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / সারাদেশ / বরিশাল / জংলা কচুর বই বেচে কাউখালীর আব্দুল হক সাবলম্বি

জংলা কচুর বই বেচে কাউখালীর আব্দুল হক সাবলম্বি

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পৃথিবীতে কোন কিছুই ফেলনা নয়। বাড়ী- বাগানের চার পাশে অজাচিত ভাবে জন্ম নেয়া জংলা কচুর বই আজ মূল্যবান সব্জিতে পরিনত হয়েছে। জংলা কচুর বাই (লতি) বিক্রি করে বিড়ালজুরি গ্রামের ভ্যান চালক নুরুল ইসলাম সাবলম্বি হয়েছে। যা একদিন ফেলনা জঞ্জাল মনে করে কেটে ফেলা হত আজ তা কাউখালী ও স্বরূপকাঠি শতাধিক পরিবারের জীবিকার অন্যতম অবলম্বন হয়ে দাড়িয়েছে। বাড়ীর/বাগানের চারপাশে ঝাড়-জঙ্গল আর মজা পুকুর-ডোবার মধ্যে জন্ম নেয়া কচু গাছ, কলমি, হ্যলঞ্চা কেটে জঞ্জাল মুক্ত হতে কে না চাইত। আর ওই ফেলনা বস’ই এক সময় মানুষের জীবিকার অন্যতম অবলম্বন হবে তা কে জানত। এক সময় সখ করে বয়স্করা বাগান থেকে ওই কচুর বই(লতি),কান্ড/ডগা (কচুরশাখ), হেলঞ্চা, কলমি শাখ সংগ্রহ করে রান্না করে খেতেন। অভাবের তাড়নায় হতদরিদ্র মানুষ ক্ষুদার জালায় ওইসব কচু-ঘেচু খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করত। আজ সেই কচুর বই আর শাখ বাজার থেকে চরা মূল্যে কিনতে হয়। গৃহস- ও কৃষকরা ক্ষেত তৈরি করে পানি কচু, ও মান কচুর চাষ করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। এর পাশাপাশি জংলা কচুর বই ও বনের বিভিন্ন প্রজাতির শাখ আজ বানিজ্যিক রূপ নিয়েছে। ক্ষেতে চাষ করা কচুর বই আর জংলা কচুর বই(লতি) একই মূল্য বিক্রি হচ্ছে হাটে বাজারে। প্রতি কেজি বই ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন- বিক্রি হচ্ছে। এ কারনেই কচুর শাখ ও বই এক শ্রেনীর মানুষের জীবিকার অন্যতম সামগ্রীতে পরিনত হয়েছে। স্বরূপকাঠি ও কাউখালী উপজেলার জঙ্গলাকায় বাগান ও জমির পাশের ঝোপের মধ্যে কাকডাকা ভোর থেকে দরিদ্র শ্রেনীর একদল মানুষকে ঘুরতে দেখা যাবে প্রতিনিয়ত। কেউ বই, কেউ কচুর শাখ, কেউ ঢেকির শাখ, কেউ কলমি বা হেলঞ্চা শাখ সংগ্রহে ব্যাস-। এ বাগান থেকে অন্য বাগান, এ জমি থেকে অণ্য জমিতে ছুটতে হয় তাদের। শাখ স’ানীয় বাজারে বিক্রি হলেও বই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়। বিড়ালজুরি গ্রামের নুরুল ইসলাম নামের এমনই একজনের সাথে দেখা কাউখালীর নৈকাঠি বেইলী ব্রিজের ধারে। তিনি প্রায় ৩০ কেজি বন কচুর বই(লতি) মাথায় নিয়ে হাট ছিলেন। মোটর বাইক থামিয়ে তার সাথে কথা বললে তিনি সমকালকে জানান ফজরের নামাজের পর থেকে ১০ টা পর্যন- ওই এলা্‌কার জঙ্গল থেকে বই(লতি) সংগ্রহ করে বাড়ীত ফিরছিলেন। প্রতিদিন বইর আটিবাড়ী পৌছে দিয়ে ভ্যান চালাতে রাস-ায় নামেন। তার সংগ্রহীত ওই ৩০ কেজি বই ধুয়ে বেছে পরিস্কার করে কেটে সাইজ করার পর ২০/২১ কেজি থাকবে। এরপর বাজারে নিয়ে বিক্রি করে। বই সাধারনত কেজি হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতি কেজি পাইকারী ১০ টাকা থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হয়। ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তাতে সংসার চলেনা বলে ৩ বছর পূর্বে এ পথ বেছে নেন । প্রথম দিকে তেমন একটা লাভ হত না কিন’ বর্তমানে বই সংগ্রহ করে বারতি আয়ে তার সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে। ছেলে মেয়ে লেখা-পড়া করছে। বেশ কিছু পুজিও হয়েছে তার। তিনি জানান এক বাগানে প্রতিদিন পাওয়া যায় না তাই ১৫ দিন থেকে এক মাস পর পর ওই বাগানে যেতে হয়। ভোক্তার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে পাইকারী কেনার বেপারী। কেউ বেপারী/পাইকারের কাছে আবার কেউ সরাসরি ক্রেতার কাছে। কচুর বই কেনার জন্য কাউখালীর বাশুড়ি খেয়াঘাটে, চিড়াপাড়া ব্রিজের কাছে নদীতে, সপ্তাহে ২ দিন করে স্বরূপকাঠি থেকে বেপারী আসে বই কিনতে। ওই দুই দিনে প্রতিদি ২০০ মন বই বিক্রি হয়। অপরদিকে স্বরূপকাঠির মিয়ারহাট, দৈহারী, কুড়িয়ানার জিন-াকাঠি বাজারে প্রচুর বই কেনা বেচা হয়। ওইখান থেকে বই কিনে বেপারীরা ঢাকায় চালান করেন। ঢাকার শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজারে ওই বই পাইকারী বিক্রি হয়। মাদ্রা গ্রামের দিন মজুর নিমাই মন্ডল বলেন জমি জমা নেই পরের জমিতে কাজের ফাঁকে বই তুলি। তাতে মাসে এক /দেড় হাজার টাকা বারতি আয় হয়। এত বই কোথায় পায় এমন এক প্রশ্নে জবাবে নিমাই জানান বই কাটলে তা আরো দ্রুত বাড়ে এবং মোটা হয়।

আরও পড়ুন...

কাউখালীতে এইডস ও নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিষয়ক এডভোকেসী সভা

পিরোজপুর প্রতিনিধি: মঙ্গলবার জাতীয় এইডস -এসটিডি কর্মসূচীর বাসত্মবায়নে কাউখালী স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সের সভা কক্ষে এইডস ও …