17 Ashar 1432 বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / শিক্ষা / কুড়িগ্রামের বেরুবাড়ী চর রহমানের কুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা

কুড়িগ্রামের বেরুবাড়ী চর রহমানের কুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চর রহমানের কুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা সুলতানা কেয়া একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে মাসে দু’একদিন স্কুলে উপসি’ত হয়ে পুরো মাসের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে থাকেন। প্রধান শিক্ষিকার পথ অনুসরণ করে অন্যান্য সহকারী শিক্ষক/ শিক্ষিকারাও একই কায়দায় চলায় স্কুলটির এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গত ২৫ এপ্রিল কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের চর রহমানের কুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ দুপুর ২ টার মধ্যে তাদের স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ করে স্কুলটি তালাবদ্ধ করে চলে যায়। স্কুলে উপসি’ত হয়ে পাশ্ববর্তী এলাকার লোকজন ও ঐ স্কুল পড়-য়া কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বললে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। চর রহমানের কুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা সুলতানা কেয়া ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর হতেই একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মাসে ২/১দিন স্কুলে উপসি’ত হয়ে পুরো মাসের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখিয়ে সরকারী বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন বলে জানা যায়।
অপরদিকে, প্রধান শিক্ষিকা কেয়ার এহেন দূর্নীতির কারণে অন্যান্য সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ একই কায়দায় চলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা জীবনে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। প্রতিদিন সকাল ৯টা ১৫ মিনিট হতে বিকাল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন- স্কুলের কার্যক্রম চলার নিয়ম থাকলেও ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই ১টা ৩০মিনিট হতে ২টার মধ্যে স্কুল ছুটি দেয়া হচ্ছে বলে ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়। শুধুমাত্র ন্যাশনাল সার্ভিসের কিছু শিক্ষক দিয়ে স্কুলটি কোনরকম ভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির প্রতিনিধি থেকে শুরু করে পাশ্ববর্তী এলাকার স্বচেতন অভিভাবগণ তাদের সন-ানদের শিক্ষার স্বার্থে কয়েক দফায় প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা সুলতানা কেয়া’র সাথে কথা বলেও কোন প্রতিকার পাইনি। উল্টো কেয়া’র হুমকি-ধামকিতেই এলাকার লোকজন এখন অতিষ্ট। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথা নিয়মে বিশ্ব খাদ্য সংস’ার বরাদ্দকৃত বিস্কুট শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঠিক ভাবে বিতরণ না করে প্রধান শিক্ষিকা সহ অন্যান্য সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকারা ভাগা-ভাগি করে বাড়ি নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে রহমানের কুটি এলাকার মৃত ময়েজ উদ্দিনের পুত্র নওশাদ আলী বলেন- প্রধান শিক্ষিকা কেয়া স্কুলে শুধু বিস্কুট নেয়ার জন্য মাসে ২/১ দিন আসেন। একই এলাকার মৃত সমশের আলীর পুত্র আইয়ুব আলী বলেন- এই বিদ্যালয়ে পড়া-লেখা নেই বললেই চলে। নারী নেত্রী কেয়া ম্যাডাম ইলেকশন করবেন তো তাই তিনি স্কুলের খোঁজ-খবর রাখেন না।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন- আমি বার বার স্কুলটি ভালোভাবে চালানোর জন্য প্রধান শিক্ষিকাকে তাগাদা দিলেও তিনি আমার কথা কর্ণপাত করেনি। তাই আমি আর এখন স্কুলের কোন খোঁজ-খবর রাখি না।
জানতে চাইলে চর রহমানের কুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা সুলতানা কেয়া বলেন, যোগাযোগ ব্যবস’া ভাল না হওয়ায় আমি সঠিক সময় স্কুলে যেতে পারি না। চাকুরীর বয়স ১৫ বছর পুর্ন হলে এমপি ইলেকশন করব। তাই বিভিন্ন কাজে ব্যবস’া থাকি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আতাউর রহমান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, তবে এখন যেহেতু জানতে পারলাম প্রয়োজনীয় ব্যবস’া নেব।
নাগেশ্বরী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, আপনারা পত্রিকায় নিউজ করলে আমরা উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস’া গ্রহণ করব।

আরও পড়ুন...

নওগাঁয় শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভা

এন বিএন ডেক্সঃ নওগাঁয় কোভিড-১৯ সময়ে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …