বখতিয়ার রহমান , পীরগঞ্জ (রংপুর): পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের রাস্তার দু’ধারে সারি সারি নারিকেল বাগান গোটা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল । প্রয়োজনীয় যত্ন আর পরিচর্যার অভাবে ওই বাগানের শেষ অসি-ত্বটুকুও বিলীন হয়ে যাচ্ছে। রোপন কৃত ৮০ হাজার গাছ এখন এক হাজারেরও নিচে নেমে এসেছে। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার তদানিন-ন চতরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুল জলিল প্রধান (পরবর্তীতে এমপি)। বিগত ১৯৮৪ সালে সম্পুর্ন নিজস্ব তহবিল থেকে গোটা ইউনিয়ন পরিষদের সড়ক গুলোর দু’ধারের পতিত জায়গায় ও খাস জমিতে প্রায় ৮০ হাজার নারিকেলের গাছ রোপন করেছিলেন। ওই ইউনিয়নকে স্বাবলম্বি করে তুলতে কর্মসংস’ান সৃষ্টির লক্ষে এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। সে সময় পীরগঞ্জ উপজেলা তো বটেই, গোটা দেশে এ উদ্যোগে সারা পড়ে যায়। কঁচি ডাব রোগীর উত্তম পথ্য, নারিকেল এটি সুস্বাধু ফল, ছোবড়া দিয়ে রিক্সার গদি, আঁশ দিয়ে তৈরী হয় মজবুত রশি, পাতার শলা দিয়ে ঝাড়- , নারকেলের উপরের অংশ দিয়ে বোতাম ও সর্বোপরি নারিকেল তেল। এসব সামগ্রীক দিক বিবেচনায় নারিকেল ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষে ওই ৮০ হাজার নারকেল চারা রোপন করেছিলেন তিনি। এ সব নারিকেলের গাছ এক সময় চতরা ইউনিয়নের সীমানা চিহ্ন ছিল। যা স্বচক্ষে অবলোকনের উদ্দেশ্যে তদানিন-ন রাষ্ট্রপতি হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদ চতরায় এসেছিলেন । অক্লান- পরিশ্রমী আব্দুল জলিল প্রধানের কাজে সন’ষ্ট হয়ে স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে রংপুর-৬ পীরগঞ্জ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন দেন তিনি। সেই টিকিটে পর পর দু’বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুল জলিল প্রধান। জাতীয় কর্মকান্ডে ব্যাতিব্যস- থাকার কারনে এক সময় চতরা ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব ছেড়ে দেন জলিল প্রধান। পরবর্তী নির্বাচনে আব্দুল জলিল(রকেট) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন হিসেবে নির্বাচিত হলে নারকেল বাগান পরিচর্যার দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত দুঃস’ মাথার কার্ডধারীরা তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হতে থাকে। বরাদ্দকৃত গম সুষ্ঠু বিতরনের পরিবর্তে হতে থাকে লুটপাট । ফলে কর্তৃপক্ষ বরাদ্দকৃত ওই কার্ডগুলো এক সময় বাতিল করে দেন। যে কারনে নারিকেল গাছ গুলোর পরিচর্যা বন্ধ হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে যেতে থাকে একটির পর একটি নারকেল গাছ। বর্তমানে গাছের সংখ্যা এক হাজারেরও অনেক নিচে নেমে এসেছে। প্রয়োজনীয় পরিচর্যা, সার প্রয়োগ ও যত্নের অভাবে আশানুরুপ ফলও হচ্ছে না কোন গাছ থেকেই। তাই প্রয়াত আব্দুল জলিল প্রধান স্বনির্ভর চতরা গড়ে তোলার স্বপ্ন আর বাস-বায়িত হয়নি শেষ পর্যন্ত। প্রয়াত এম পি আব্দুল জলিলের সহধর্মিনী আলেয়া জলিল পরবর্তীতে পর পর দু’বার ওই ইউনিনয়নের চেয়ারমম্যান নির্বাচিত হলেও স্বামীর স্বপ্ন পুরনে ব্যর্থ হয়েছেন আর্থিক অসঙ্গতির কারনে। এখনও প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে আলেয়া জলিল তাঁর স্বামীর সেই দুঃসাহসিক স্বপ্ন পুরনে সচেষ্ট হবেন বলে এলাকাবাসী মনে করছেন । সে সঙ্গে ওই ইউনিয়ন বাসীও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন ।
আরও পড়ুন...
নওগাঁয় সীমানা প্রাচীরের দ্বন্দে প্রাচীর ভাংচুর ও মারপিট
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় সীমানা প্রাচীরের বিরোধের জের ধরে ভোগদখলীয় সম্পত্তিতে নির্মাণাধীন ইটের সীমানা প্রাচীর ভাংচুর …