সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকদেরকে র্দীঘদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং জেলা সদর হাসপাতালে প্রেষণে দায়ীত্ব প্রদানের অভিযোগে সিভিল সার্জনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কি কারনে এসব চিকিৎসকদেরকে দীর্ঘ দিন ধরে প্রেষনে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে সাত দিনের মধ্যে কারন জানানোর পাশপাশি অবিলম্বে প্রেষনে নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৩ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। নিয়মিত কর্মরত আছেন ২৮ জন ডাক্তার। আবাসিক মেডিকেল অফিসার, একজন মেডিসিন কনসালটেন্ট, একজন অর্থপেডিক কনসালটেন্ট সহ পাঁচটি শূন্য পদের বিপরীতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপস্বাস্থ্য ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ১৪ জন ডাক্তারকে প্রেষনে বদলি করে দায়ীত্ব প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ চিকিৎসকই এডহক ভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত। সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১৫৭ জন চিকিৎসকদের পদ রয়েছে। নিয়মিত কর্মরত চিকিৎসক রয়েছে ১১৩ জন। একই ভাবে ৭৫টি ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৬৭ টি জন ডাক্তার কাগজে কলমে কর্মরত আছেন। এরা নিয়মিত সরকারী বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। কিন’ প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে এদের বেশীরভাগ চিকিৎসকই ইউনিয়ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন না করেই বসে বসে বেতন ভাতা গ্রহন করছেন। সূত্রটি আরও জানায়, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসাররা অবকাঠামো না থাকায় কাজের পরিবেশ নেই এমন অজুহাত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ কাজ করছেন। অথচ প্রায় প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তার কর্মরত রয়েছেন। এদিকে ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরা ইউনিয়ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন না করায় জনগনের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেবার সরকারী উদ্যোগ ভেসে- যেতে বসেছে। তাছাড়া উপজেলা স্বাস’্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনের নামে শতাধিক চিকিৎসক বসে বসে বেতন গুনছেন বলে একাধিক অভিযোগে উঠেছে। একটি সূত্র অভিযোগ করে বলেছে, ইউনিয়ন পর্যায়ের এসব ডাক্তারদের অনেকে বিভিন্ন সময়ে সিভিল সার্জনকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা সদর হাসপাতালে প্রেষনে নিয়োগ নিচ্ছেন।
একটি সূত্রে জানায়, বর্তমান সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজিমুদ্দিন খান দায়িত্বে আসার পর গত তিন মাসে তিনি জন ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসককে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেষনে বদলি করেছেন। এরা হলো সদর উপজেলার কাওয়া কোলা ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ জেরিন তাসনিম, কাজিপুর উপজেলার চরগিরিস ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দের চিকিৎসক ডাঃ জান্নাতুল পারভীন, এবং চান্দাইকোনা ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ মাহবুবুল আলম। ইতিপূর্বে বিভিন্ন উপজেলা থেকে তিন জন গাইনী, একজন সার্জারী চিকিৎসক সহ ১১ জন চিকিৎসককে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেষনে বদলী করে দায়ীত্ব দেয়া হয়।
দীর্ঘ সময় ধরে ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসকদেরকে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রেষনে বদলির কারন সম্পর্কে স্বাস’্য অধিদপ্তরের কারন দর্শানো নোটিশের সত্যতা স্বীকার করে সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ নাজিমুদ্দিন খান বলেন, সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল সংযুক্ত ট্রমা সেন্টারটিতে তিন জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে একজন ডাক্তারও কর্মরত নাই। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারীতে চিকিৎসক ডাঃ জাফর ইমাম নামে একজন অর্থোপেডিক সার্জনকে নিয়োগ দিলেও তিনি যোগদান করেন নি। তাছাড়া জেলার লোক সংখ্যা বাড়ার সাথে তাল মিলিয়ে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে, একই সাথে সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৫ জন ডাক্তারের পদ এখনও শূন্য রয়েছে। এমন অবস্থায় সার্বিক বিবেচনা করে অতিরিক্ত কিছু চিকিৎসককে প্রেষনে বদলী করে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে । তবে ইউনিয়ন পর্যায়ের অন্য চিকিৎসকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়ীত্ব পালনে তদারকি বাড়ানো হয়েছে।
Home / স্বাস্থ্য / ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসকদেরকে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে রাখায় সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জনকে কারণ দর্শানো নোটিশ
আরও পড়ুন...
নওগাঁয় করোনা ভাইরাসে আরও ১ জনের মৃত্যু ঃ সর্বমোট মৃত্যু ২২ জনঃ নতুন আক্রান্ত ১০ জন ঃ সর্বমোট আক্রান্ত ১৩৭৪
এন বিএন ডেক্সঃ নওগাঁ জেলায় নতুন করে ১০ ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আরও …