সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে লাখ লাখ বস্তা ইউরিয়া সার দীর্ঘদিন যাবত খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে করে সারের গুণগত মান নষ্ট হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার কৃষকরা আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শংকায় রয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুদামের অভাবে সারের বস্তাগুলো তারা খোলা আকাশের নিচে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন যাবত সারের বস্তাগুলো প্যাকেটজাত থাকার কারণে অথবা পানি ঢুকে পড়ায় বস-াগুলোতে জমাট বেঁধেছে। নিম্নমানের জমাট বাঁধা ইউরিয়া সারগুলো রোদে শুকিয়ে রিপ্যাকিং করে উত্তরাঞ্চরের ১৬ জেলার বিভিন্ন বাফার গুদামে পাঠানো হচ্ছে। এসব জমাট বাঁধা ইউরিয়া সারের গুণগত মান ঠিক আছে কি না তা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। এ বন্দরের সার বাঘাবাড়িসহ উত্তরাঞ্চলের পার্বতীপুর, রংপুর, পুলহাট, চরকাই, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, চাপাই নবাবগঞ্জ, মহেন্দ্র নগর, শানত্মাহার, কুড়িগ্রামের ১৪টি বাফার গুদামে রাখা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রোটন ট্রেডার্স, বাল্ক ইন্টারন্যশনাল, নবাব এন্ড কোং, গ্রামসিকো ও রেক্স ইন্টারন্যাশনাল সারগুলোর পরিবহনের দায়িত্ব পালন করছে। এ বিষয়ে প্রোটন ট্রের্ডংাসের ইউসুফ আলী ও বাল্ক ইন্টারন্যশনালের স’ানীয় প্রতিনিধি কবির জানান, বিসিআইসি বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির পর যে ধরনের ইউরিয়া বোঝাই সারের বস্তা দিয়েছে সেগুলোই পরিবহন করে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন বাফার গুদামে পৌঁছানো হচ্ছে। গুদামে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তারা পর্যাপ্ত পরিমাণে সারের বস্তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তাদেরকে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর চত্বরসহ বন্দরের বাইরে বড়াল নদীর পাড়ে মাটির ওপর খোলা আকাশের নিচে লাখ লাখ বস্তা ইউরিয়া সারস্থাপাকারে জমা রাখতে হচ্ছে। তারা আরও জানান, সৌদি আরব, আবুধাবী ও চায়না থেকে বিসিআইসি সার আমদানি করেছে। আমদানি করা সারের বস-াগুলোর বেশির ভাগই জমাট বাঁধা এবং বস-ার গায়ে সার প্রস’তের বছর বা মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনো তারিখ লেখা নেই। তবে বস-ার গায়ের প্রতীকী চিহ্ন দেখে মনে হয় সেগুলো দীর্ঘদিনের পুরানো। তাড়াশ উপজেলা সদরের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস, রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী গ্রামের কৃষক মইদুল ইসলাম, সদর উপজেলার চন্ডিদাসগাতি গ্রামের কৃষক ফরহাদ উদ্দিন জানান, মেয়াদ উর্ত্তীণ ও খোলা আকাশের নিচে থাকা সার জমিতে প্রয়োগ করলে আশানুরুপ ফল পাওয়া যায় না। ফলে উৎপাদিত ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত নাও হতে পারে।
এ বিষয়ে বাঘাবাড়ী বাফার গুদামের ইনচার্জ সুদিব কুমার ভূটার্চাজ জানান, ১৭ হাজারেরও বেশি মেঃ টন সারের বস্তা বন্দর এলাকায় খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। গলিয়ে না যাওয়া পর্যন- ইউরিয়া সারের গুণগতমান নষ্ট হয় না। উত্তরাঞ্চলের ১৪টি গুদামে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এ পরিসি’তির সৃষ্টি হয়েছে। জমাট বাঁধার কারণে সারের বস-ার ওজন কমে যাওয়ায় রোদে শুকিয়ে জমাট ভেঙে পুনরায় রিপ্যাকিং করা হচ্ছে। গলিয়ে না যাওয়া পর্যন- ইউরিয়া সারের গুণগতমান নষ্ট হয় না গুদাম ইনচার্জ সুদিব কুমার ভূটার্চাজের এমন বক্তব্য সমর্থন করে সিরাজগঞ্জ কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ আরশেদ আলী জানান, রিপ্যাকিং করতে গিয়ে যদি ওজনে কম দেয়া তাহলে কৃষক ক্ষতিগ্রস’ হবে।
আরও পড়ুন...
নওগাঁয় সীমানা প্রাচীরের দ্বন্দে প্রাচীর ভাংচুর ও মারপিট
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় সীমানা প্রাচীরের বিরোধের জের ধরে ভোগদখলীয় সম্পত্তিতে নির্মাণাধীন ইটের সীমানা প্রাচীর ভাংচুর …