8 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / জাতীয় সংবাদ / পীরগঞ্জের খালাশপীর কয়লা খনির ভবিষ্যত কি ?

পীরগঞ্জের খালাশপীর কয়লা খনির ভবিষ্যত কি ?

বখতিয়ার রহমান,পীরগঞ্জ (রংপুরঃ রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় উপমহাদেশের উৎকৃষ্টমানের খালাশপীর কয়লা খনিটির ভবিষ্যত কি ? এ নিয়ে পীরগঞ্জ বাসীর মাঝে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে । প্রায় ৫ বছর আগে খনির সকল পরীক্ষা-নীরিক্ষা সম্পন্ন করে সরকারের কাছে মাইনিং লীজের জন্য আবেদন করে অনুমোদনের অপেক্ষায় দীর্ঘ প্রহর গুনছে কর্তৃপক্ষ। উৎপাদন শুরু হলে এ খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পর সেখান থেকে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স’াপনের মাধ্যমে প্রায় ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও খনিটিতে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো সহ উৎপাদিত কয়লা দিয়ে দেশের ১‘শ বছরের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলেও সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১৩ কি.মি পশ্চিমে মদনখালী ইউনিয়নে খালাশপীর কয়লা ক্ষেত্রের অবস্থান। ১৯৫৯ থেকে ৬২ সাল পর্যন্ত ভু-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খনিটির অবস্থান নির্ণয় করে। পরে জিএসবি ১৯৮৯-১৯৯০ সালে খনি এলাকায় ৪টি অনুসন্ধান কুপ খনন করে ৩ টিতে ২৮৪ মিটার থেকে ৪৮০ মিটার গভীরতায় উন্নতমানের বিটুমিনাস গোত্রের কয়লা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে সরকারের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যুরো অব মিনারেল ডেভেলপমেন্ট হোসাফ কনসোর্টিয়াম ও চায়নার সেন উইন মাইনিং গ্রুপ কে খালাশপীর কয়লা খনি সমীক্ষার জন্য লাইসেন্স প্রদান করা হয়। লাইসেন্স প্রাপ্তির পর হোসাফ কনসোর্টিয়াম ট্রপোগ্রাফিক্যাল সার্ভে এবং চায়নার একটি প্রতিষ্ঠান দ্বি-মাত্রিক ও ত্রি-মাত্রিক সিসমিক সার্ভে করে। ওই সার্ভের মাধ্যমে কয়লার মজুদ, পুরুত্ব, গভীরতা, চ্যুতি ও কয়লার বিস্তৃতি এবং স্তর সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এছাড়া ভারতের জিওটেক কোম্পানী ১৪ টি অনুসন্ধান কুপ খনন করে কয়লা উত্তোলন করে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় ১২.২৫ বর্গ কি.মি এলাকায় খনিটিতে কয়লার ৮ টি স-র রয়েছে। যার মধ্যে বিস্তৃতি রয়েছে ৭.৫০ থেকে ৮ কি.মি এলাকায় খনিটির কয়লা বিন্যস্ত। বিগত ২০০৬ সালের আগষ্ট মাসে কয়লা খনির সমীক্ষা প্রতিবেদন (ফেসিবিলিটি রিপোর্ট) সরকারের কাছে জমা দিয়ে মাইনিং লীজের জন্য আবেদন করা হয়। এরপর থেকে মাইনিং লীজের অনুমোদনের অপেক্ষায় দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে কর্মীবাহিনী নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে বাংলাদেশ ব্যুরো অব মিনারেল ডেভেলপমেন্ট হোসাফ কনসোর্টিয়াম ও চায়নার সেন উইন মাইনিং গ্রুপ।
৮ স-র বিশিষ্ট এ খনির গভীরতা ২২২ মিটার থেকে শুরু করে ৬০৭ মিটার গভীরতায় অবস্থান করছে। গড়ে ২৬৫ মিটার থেকে শুরু এবং ৩৮৭ মিটারে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১, ২ এবং ৪ নং কয়লা স্তর সমুহে অধিকতর বিস্তৃত এবং পুরু। এ খনিতে কয়লার (৮সত্মরে) মোট মজুদ নির্ধারন করা হয়েছে ৪৫২ মিলিয়ন টন। তার মধ্যে প্রমানিত মজুদ ২৭৭ মিলিয়ন টন এবং অতিরিক্ত আরও ১৭৫ মিলিয়ন টন মজুদ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে উচ্চ শ্রেণীর বিটুমিনাস গোত্রের এ কয়লার দহন ক্ষমতা ১ হাজার ৫শ ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (বিটিইউ)। কয়লার কোন কোন স-রে কোকিং কোল নামে এক ধরনের কয়লা রয়েছে। যা দিয়ে যে কোন ধাতু গলানোর কাজ করা সম্ভব। এ খনিটি ভু-গর্ভস’ পদ্ধতিতে উত্তোলন সহায়ক বলে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে শতকরা ২০ থেকে ৩৫ ভাগ পর্যন- প্রাথমিক ভাবে বছরে ২ মিলিয়ন টন করে কয়লা উত্তোলন করা যাবে। এভাবে প্রায় ৩৫ বছর পর্যন- প্রকল্প চলতে পারবে। এ কয়লা দিয়ে ২‘শ ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লা ভিত্তিক বিদুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব। পাশাপাশি কয়লা উত্তোলন শুরু হলে খনিটিকে ঘিরে ৪/৫ হাজার লোকের কর্মসংস’ান হবে। খনির ভু-তত্ত্ববিদ অনুপ কুমার রায় বলেন, পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে ভু-গর্ভস’ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করলে প্রকৃতির কোন ক্ষয়ক্ষতি হবে না। অপরদিকে চীফ ইন্‌িজনিয়ার ইমদাদুল হক বলেন, মাটির নিচের সম্পদ উত্তোলন করলে দেশের প্রভুত উন্নয়ন হবে। এদিকে খনির প্রকল্প পরিচালক-প্রকৌশলী একেএম শামসুদ্দিন বলেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানীর অন্যতম উৎস্য হিসেবে কয়লা ব্যবহার হয়ে আসছে। বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ কয়লার মাধ্যমে উৎপাদন হচ্ছে। তাই বাংলাদেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে কয়লা ক্ষেত্রগুলো থেকে কয়লা উত্তোলন জরুরী হয়ে পড়েছে বলে পীরগঞ্জ বাসী সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ মনে করছেন ।

আরও পড়ুন...

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সমতল আদিবাসীদের মিলন মেলায় ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালী নৃত্য প্রতিযোগিতায় আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, আদিবাসীরা পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো আনা মানুষ হয়েছে ————————————–খাদ্যমন্ত্রী

এন বিএন ডেক্সঃ  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অর্থাৎ আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, তবে পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো …