8 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / জাতীয় সংবাদ / সরকারী বৃহৎ মৎস্য চাষ প্রকল্পটি ১ বছর যাবৎ স’বির জনবলের অভাবে শত কোটি টাকার মাছ উৎপাদন ব্যহত

সরকারী বৃহৎ মৎস্য চাষ প্রকল্পটি ১ বছর যাবৎ স’বির জনবলের অভাবে শত কোটি টাকার মাছ উৎপাদন ব্যহত

সুজন সরকার, সিরাজগঞ্জ থেকে : উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ সরকারী মৎস্যচাষ প্রকল্পটি ১ বছর যাবৎ স’বির হয়ে থাকায় শত কোটি টাকার মাছ উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। গত বছর জানুয়ারী মাসে গ্রামীণ ব্যাংকের লীজের মেয়াদ শেষ হবার পর সরকারী জনবল নিয়োগ না করায় তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ৫ হাজার বিঘা জলাশয়ে  মাছের উৎপাদন সম্পুর্ন বন্ধ রয়েছে।  মৎস্য সম্পদের জন্য বিখ্যাত চলনবিলে তাড়াশ, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, রায়গঞ্জ উপজেলার ৭ শত ৭৭টি পুকুর নিয়ে প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ৭০ এর দশকে। মৎস্য বিভাগ ভুমি মন্ত্রনালয় থেকে ৯৯ বছরের জন্য বন্ধোবস- নেয় এবং সংস্কার কাজ শুরু করে। বৃটিশ সরকারের সাহায্য পুষ্ট সংস্কার কাজটি চলে ১৯৮২সাল পর্যন-। সংস্কারের আগে হাজামাজা পুকুরগুলোর অধিকাংশ পুকুরে কচুরী পানা ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ জমে ছিল। ভাষমান এ আবর্জনার উপর দিয়ে অনায়াসে গরু মহিষ চলাচল করতে পারত। মৎস্য বিভাগ এগুলো পরিস্কার করায় এবং মাটি কেটে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ করে। পরবর্তীতে ২য় দফায় মৎস্য বিভাগের সাথে বৃটিশ সরকার চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুসারে রায়গঞ্জ উপজেলার ভুইয়াগাঁতী নদীর উপর ১ কোটি টাকার ব্রীজ নির্মাণ, প্রকল্পের ৮টি ইউনিটের সাথে পাকা সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ৫০টি ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ, জয়সাগর মৎস্য খামারের কেন্দ্রস’ল নিমগাছীতে পোনা উৎপাদনের জন্য হ্যাচারী প্রতিষ্ঠা, প্রতিটি ইউনিটের টেলিফোন যোগাযোগ স’াপন এবং ভুমিহীনদের মাধ্যমে পুকুর সমুহে মাছ চাষের সিদ্ধান- হয়। চুক্তি অনুসারে নিমগাছীতে হ্যাচারী প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ১৯৮৫ সালে রেকর্ড পরিমান পোনা উৎপাদন করে প্রতিটি পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ভুমিহীনদের মধ্যে মাছ চাষের জন্য পরীক্ষা মুলক ৪৮টি পুকুর ভূমিহীন সমিতির নিকট হস-ান-র করা হয়। এ সময় মৎস্য বিভাগে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ব্যক্তি বর্গ এ প্রকল্পটি নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। লাভ জনক এ প্রকল্পটি আকষ্মিক ভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের নিকট ১৯৮৬ সালের জানুয়ারী মাসে বাৎসরিক নাম মাত্র লীজ মানিতে ২৫ বছরের জন্য হস-ান-র করে। এরপর জনতার দীর্ঘদিন ধরে লীজ বাতিলের দাবী করে আসছিলো। চলনবিল রক্ষা আন্দলোনের লোকজন এবং কেন্দ্রীয় কমিটি বার বার সরকারী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লীজ বাতিলের দাবীর পর গত বছর জানুয়ারী মাসে বর্তমান সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের মেয়াদ শেষ হবার পর লীজ নবায়ন বাতিল করে। এর পর প্রয়োজনীয় লোকবল প্রেরণ না করায় বিশাল মৎস্য খামারটি উৎপাদনহীন অবস’ায় স’বির হয়ে পড়ে রয়েছে এবং পুকুরগুলো প্রভাবশালীরা বিভিন্নভাবে দখল করে নিচ্ছে। এ নিয়ে নানা অপ্রীতিকর ঘটনারও ঘটছে। এতে কর্তৃপক্ষ কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস’া নিচ্ছে না। মৎস্য অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় গ্রামীণ ব্যাংকের নিকট হস-ান-রের পূর্বে প্রকল্পটি তত্তাবধায়ন করার জন্য একজন প্রকল্প পরিচালক, ৮জন ইউনিট অফিসার ছাড়াও ৫০ জন কর্মী মৎস্য উৎপাদন কাজে নিয়োজিত ছিল। প্রতিটি ইউনিটে পাকা ভবন, গার্ড সেল, নিমগাছীতে প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় ও প্রয়োজনীয় আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষ কাজ পর্যবেক্ষনের জন্য ১জন বৃটিশ ইঞ্জিনিয়ার সর্বদাই নিমগাছীতে অবস’ান করতেন। সে সময় নিমগাছীসহ মৎস্য প্রকল্পের ৮টি ইউনিটে উন্নয়নের জোয়ার শুরু হয়। কিন’ আকষ্মিক ভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের নিকট হস-ান-র করায় উন্নয়নের সকল ধারা তছনছ হয়ে পড়ে। গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ সরকারী অফিস ও আবাসিক ভবন ব্যবহার করলেও সরকারী কোষাগাঢ়ে কোন রাজস্ব জমা দেন নি। ২৫ বছর ব্যাপী মাছ চাষ করে ফুলে ফেপে উঠলেও পুকুর ও আবাসিক ভবনগুলোর সংস্কার কাজও করা হয় নি। লীজ নবায়ন বাতিল করার পর জনতা ও চলনবিল রক্ষা আন্দলনের লোকজনের জোড়ালো দাবীর প্রেক্ষিতে মৎস্য চাষের সুষ্ঠ্য নীতিমালা ইতিমধ্যেই প্রনয়ন করা হয়েছে। কিন’ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন- প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয় নি। খোঁজ নিয়ে যানা যায় এ বিশাল প্রকল্পে বর্তমানে ১জন হ্যাচারী অফিসার ও ৮জন পাহাড়াদ্বার কাজ করছে। তাড়াশ, রায়গঞ্জ, চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া মৎস্য কর্মকর্তাদেরকে দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা সরকারী অফিসের কাজ নিয়েই ব্যস- রয়েছে। এর ফাঁকে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ সুবিধামত বিশেষ বিশেষ পুকুরে মাছ চাষ করে ফুলে ফেপে উঠছে। বঞ্চিত হচ্ছে ভুমিহীন সমপ্রদায়। মাছ চাষী ও মৎস্য বিভাগের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করলে জানা যায়, পরিত্যাক্ত এ সব পুকুরে মাছ চাষ করলে প্রতি ৩ মাস অন-র বিঘা প্রতি ১২ হাজার টাকা মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হত। ১ বছরে কম্পক্ষে শত কোটি টাকা মাছ উৎপাদন হত এবং লাভবান হত দেশ ও এলাকার ভূমিহীন সমপ্রদায়। ১ বছর যাবৎ প্রকল্পটি বিরান ভূমি হিসেবে পড়ে আছে। ভুমিহীনদের সংগঠিত করে নীতিমালা অনুসারে মাছ চাষ শুরু করা দরকার। এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করলে জানান প্রকল্প পরিচালক সহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দানের জন্য প্লানিং কমিশনে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই মৎস্য প্রকল্পটির কার্যক্রম চালু করা হবে। এ ব্যাপারে চলনবিল রক্ষা আন্দলোনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোজাফ্‌ফর আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আব্দুল মতিন এবং সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান প্রকল্পটি অনুমোদন করে বৃহৎ এ মৎস্য খামারে মাছ উৎপাদনের কার্যক্রম দ্রুত চালু করার দাবী জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন...

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সমতল আদিবাসীদের মিলন মেলায় ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালী নৃত্য প্রতিযোগিতায় আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, আদিবাসীরা পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো আনা মানুষ হয়েছে ————————————–খাদ্যমন্ত্রী

এন বিএন ডেক্সঃ  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অর্থাৎ আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, তবে পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো …