নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় লক্ষণপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে নিয়োগ কমিটির কেউ হাজির না হওয়ায় স্থগিত হয়ে যায়। নিয়োগের দিন ধামইরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ডিজির প্রতিনিধি উপস্থিত না হওয়া এবং এর পেছনে জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইন্ধনে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিনুল হক। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১০/১১/২০১৯ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য হয়। এরপরদিন থেকে ১৫/২/২০ পর্যন্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। গত ১৯/৫/২০০৩ সালে অবৈধ ভাবে নিয়োগ নিয়ে চাকরিতে যোগদান করেন এবং ২১/৩/২০০৫ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক হন। যেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক হতে গেলে কমপক্ষে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। সেখানে ২ বছরের মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েছেন। বিভিন্ন অভিযোগে এনে তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। এরপর ১৬/২/২০ তারিখে ইসলাম শিক্ষা শিক্ষক নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্তে গত ২৭/১০/২০ অক্টোবরে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। ইতোপূর্বে জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়। সে মোতাবেক নির্ধারিত দিনে ডিজি প্রতিনিধি নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মুস্তাফি এবং ধামইরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত চারজন প্রার্থী উপস্থিত থাকলেও তারা আসেননি। প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোবারুল ইসলাম তার অধিনস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে দেন বলে অভিযোগ করা হয়। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিয়োগ কমিটি যাচাই বাছাই করে ২০০৩ সালে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এরপর দুই বছরের মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। গত নিয়োগে প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আমিও প্রার্থী ছিলাম। তবে সেদিন নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায়। আবার কি কারণে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তা জানা নেই। তবে বরখাস্তের চিঠি এখনো পাইনি। ডিজির প্রতিনিধি ও নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মুস্তাফি বলেন, ওই সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। এছাড়া জেলা শিক্ষা অফিস এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাকে অবগত করা হয়নি। তবে আমাকে টাকা দেয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন।
ধামইরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান বলেন, জেলা শিক্ষা অফিস থেকে একটা চিঠি পেয়েছিলাম। তবে নিয়োগ কবে হবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এমন কোন চিঠি আমি পাইনি।
নওগাঁ জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোবারুল ইসলাম বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানে যখন মামলা থাকে তখন আদালতের রায় দেয়া না পর্যন্ত যদি কেউ অপেক্ষা করতে না চান তাহলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আইন শাখার মতামত নিতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানের কমিটি বিধি মোতাবেক মতামত নিয়ে আসছেন। গত ২১ অক্টোবর নিয়োগের বিষয়ে আমাকে একটি চিটি দেয়া হয়েছিল। পরদিন আমার পক্ষ থেকে তাদেরকে নিয়োগ কমিটি প্রস্তুত করতে একটি চিঠি দেয়। এ পর্যন্ত নিয়োগ সংক্রান্ত আমার দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
তিনি বলেন, ডিজির প্রতিনিধি সহ সকলের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়োগ বোর্ড কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ২৭ অক্টোবর যে নিয়োগ দিতে চাওয়া হয়েছিল কমিটিকে হয়ত অবগত করা হয়নি। আর এ কারণে কেউ সেখানে উপস্থিত হয়নি। তবে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলা হয়েছে তা মিথ্যা।