নওগাঁয় জমিজমা সংক্রান্ত প্রতিপক্ষের হামলায় আহত-২ঃ অবশেষে থানায় মামলা

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় জমিজমা সংক্রান্ত প্রতিপক্ষের হামলায় দু’জন গুরুত্বর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার সন্ধ্যায় নওগাঁ সদরের চন্ডিপুর (উত্তর পাড়া) গ্রামে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেন সরদারের ছেলে ইদ্রিস আলী (৬৫) এর সঙ্গে একই গ্রামের প্রতিবেশি মৃত ইবার আলীর ছেলে আব্দুল হাকিম (৪৫) এর দীর্ঘদিন ধরে একখন্ড বসতবাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে ঘটনার দিন ইদ্রিস আলী ওই জমিতে পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে হাকিম ও তার লোক জন বাধা দেয়।এতে করে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা বাধে। এরই এক পর্যায়ে হাকিম ও তার লোকজন ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ইদ্রিস আলীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ইদ্রিস আলী ও তার ছেলেরা বাড়িতে না থাকায়
হাকিমের স্ত্রী শাহিনা (৪০)ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় ইদ্রিস আলীর নাতনি শ্রাবনী আক্তার (১৭) কে বাড়ির ভিতর থেকে জোর করে বাহিরে এনে তার বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে গুরুত্বর আহত করে। শ্রাবণীর ডাক চিৎকারে তার চাচা হাফিজুর রহমান শিপলু এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষ হাকিমের ছেলে ও তার লোকজনেরা তাকেও আক্রমন করে এবং এলোপাথারী মারপিট করে তার ডান হাত ভেঙ্গে দেয়। পরে আহতদের ইদ্রিস আলীর পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্রাবণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করে এবং শিপলুকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয় । এ ঘটনায় হাফিজুর রহমান শিপলু বাদি হয়ে গত ০৫ এপ্রিল নওগাঁ সদর মডেল থানায় ০৬ জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ করেন।
থানায় দাখিলকৃত অভিযোগ ও আহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ইদ্রিস আলী তার সম্পতিতে পাকা ইটের বাড়ি করতে গেলে প্রতিপক্ষ হাকিম বাড়ী করতে বাধা দেয়। এর এক পর্যায়ে হাকিম ও তার লোকজনেরা ইদ্রিস আলীর বাড়িতে চড়াও হয়ে শ্রাবণী ও তার চাচা শিপলুকে মারপিট করে আহত করে।
ভিকটিম শ্রাবণী বলে, প্রতিপক্ষরা তাকে অন্যায় ভাবে মারপিট করে যথম করে। সে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। সে এই বর্বরতা কান্ডের জন্য সুবিচারের দাবী করে। অভিযোগকারী শিপলু ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় বর্তমানে তারা নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছেন। তারা আরো জানায়, এলাকার কতিপয় প্রভাবশালীরা ঘটনাটি অন্য খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে।
এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ আব্দুল হাকিমের সাথে সেল ফোনে কথা বললে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত পক্ষে আমার সাথে প্রতি পক্ষের কোন বিরোধ নাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউ,পি চেয়ারম্যান বেদারুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি জানার পর থেকে উভয় পক্ষকে মিমাংসা করার জন্য বলেছেন কিন্তু বাদী পক্ষ ইদ্রিস আলী মিমাংসা করতে রাজি হয়নি। তবে স্থানীয়রা এ ঘটনা সর্ম্পকে থানায় একটি লিখিত আবেদন করেছেন। তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া প্রয়োজন যেন কোন পক্ষই সুবিচার থেকে বঞ্চিত না হয়।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, এ ঘটনায় লিখিত একটি অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহন করা হয়েছে। আসামীদের আটকের প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।