এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার জনদূর্ভোগের অপর এক নাম রাণীনগর-কালিগঞ্জ সড়ক। রাণীনগর উপজেলা সদরের গোল চত্বর হতে সিংড়া উপজেলার কালিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত এই সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ কিমি, । এই সড়কে বর্তমানে খানা-খন্দে পরিণত হয়ে জনদূর্ভোগ চরম মাত্রায় পৌছে গেছে। সূত্রে জানা গেছে, এই সড়কের উন্নয়ন তথা সংষ্কার, প্রশস্ত করন, নতুন সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য আলাদা দু’টি প্যাকেজে দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ঢিলেঢালে যে গতিহীন ভাবে কাজ চলছে তাতে শেষ হতে কত সময় লাগবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। ইতোমধ্যে সড়ক সংষ্কার ও প্রশস্ত করণ কাজের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে অন্য কোন প্রতিষ্ঠান কে কাজ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এদিকে নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইরাফিল আলম এমপি এক প্রতিক্রিয়ায় রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালিগঞ্জ সড়কের জনদূর্ভোগের বিষয়ে চরম ক্ষোভ, অসন্তোষ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকার প্রতি বছর সড়ক, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও কিছু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কারণে জনগন যথাসময়ে তার সুফল পাচ্ছে না। হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগের কথা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এই সড়কের কাজের গতি বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। নওগাঁ সড়ক ও জনপদ (সওজ) অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলা হেড কোয়ার্টারের গোলচত্বর থেকে নাটোরের সিংড়া উপজেলার কালিগঞ্জ বাজার সংযোগ পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিমি সড়কের উভয় পাশে প্রশস্ত করণ, সংস্কার ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য জন্য ৪৮কোটি ৮২লক্ষ টাকা ব্যয় ধরে দরপত্রের মাধ্যমে স্পেক্টা ইন্টারন্যাশনাল লিঃ ও ওয়াইড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামক জয়েন্ট ভেনঞ্চার কোম্পানিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজের সময়সীমা ১বছর ৪মাস ১৫ দিন দেওয়া থাকলেও অর্ধেক সময় পার হওয়ার পরেও চোখে পরার মতো দৃর্শ্যমান তেমন কোন কাজ কিছুই হয়নি। সড়কটি অতি জনগুরুত্বপূর্ন ও উপজেলার পূর্বাঞ্চলের প্রধান সড়ক হওয়ার পরেও ঢিলেঢালে কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর সংস্কার কাজ শুরু করলেও কাজের গতি না থাকায় এখন আস্তে আস্তে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে এই সড়কটি। উপজেলার পূর্ব-উত্তরাঞ্চল ও পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকশত গ্রামের হাজার হাজার সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এই প্রধান সড়কের বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করায় সড়কের অধিকাংশ স্থানে পাকা উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানা-খন্দে যা দেখে মনে হবে মাছ চাষের জন্য ছোট ছোট পুকুর। কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করাসহ যানবাহন চলাচলেও সমস্যার শেষ নেই। এই প্রধান সড়কটি ব্যবহার করেই নানা প্রয়োজনে উপজেলার সমগ্র পূর্বাঞ্চলের মানুষদের প্রতিনিয়তই উপজেলা সদরে আসতে হয় এবং উপজেলার উপর দিয়ে জেলা সদর নওগাঁয় প্রবেশ করে। শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে পথচারীদের অভিযোগ। দ্রুতগতিতে সড়কের কাজ সমাপ্ত করা না হলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা থেমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসিরা। উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের কামাল হোসেন, করজগ্রামের জাহাঙ্গির আলমসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন পরিবহন চালকরা যানবাহনের ভাড়া ইতোমধ্যে বেড়ে দিয়েছে। নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল হক বলেন গত দুই থেকে আড়াই মাস কাজ বন্ধ থাকায় দরপত্র বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট একটি পত্র দেয় হয়েছে। তবে ওই পত্র দেয়ার পর থেকে কাজের গতি বেড়েছে। যথাসময়েই কাজ শেষ বলে আশা করছি।
আরও পড়ুন...
নওগাঁয় জেলা ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় জাতীয় ওলামা মাশায়েখ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলাবার দুপুরে জেলা প্রেসক্লাবের সম্মেলন …