7 Agrohayon 1431 বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / শিক্ষা / নওগাঁর মান্দার খোর্দ্দ বান্দাইখাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে পাঁচ শিার্থীর জন্য একজন শিক!!

নওগাঁর মান্দার খোর্দ্দ বান্দাইখাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে পাঁচ শিার্থীর জন্য একজন শিক!!

এনবিএনডেক্স: বিদ্যালয়টিতে শিার্থীর সংখ্যা মাত্র ৭১ জন। কর্মরত আছেন ১৫ জন শিক-কর্মচারী। তারা নিয়মিতভাবে প্রতি মাসে ব্যাংক থেকে সরকারি বেতন ভাতার এক লাখ ৬৭ হাজার ১৩৮ টাকা উত্তোলন করছেন। অথচ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরদারি নেই এই প্রতিষ্ঠানের দিকে। গত একবছর ধরে এ অবস্থা চলছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার খোর্দ্দ বান্দাইখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। সরকারি প্রজ্ঞাপনে রয়েছে, প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে সহ শিার েেত্র ২০০ ও বালিকার েেত্র ১০০ জন শিার্থী প্রয়োজন। তবেই পাঠদানের অনুমতি, একাডেমিক স্বীকৃতি ও এমপিওভূক্তিসহ অন্যান্য সুবিধা পাবে সেই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাত্র এক তৃতীয়াংশ শিার্থী নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি কিভাবে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে এনিয়ে এলাকাবাসীর মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, শিার্থীদের বার্ষিক পরীা চলছে। সরকারি অর্থায়নে নির্মিত বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের দুটি কে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৯ম শ্রেণীর শিার্থীরা পরীায় অংশ নিয়েছে। পরীার্থীদের উপস্থিতি ছিল ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১৮ জন, ৭ম শ্রেণীতে ২৩ জন ও ৯ম শ্রেণীতে মাত্র ১০ জন। বিদ্যালয়ের পুরাতন জীর্ণ ভবনের একটি কে সাতজন শিার্থী নিয়ে এসএসসি পরীার প্রস্তুতিমূলক কোচিং চলছে। তবে ২০১৫ সালে এসএসসি পরীায় অংশ নেয়ার জন্য মাত্র ১০ জন শিার্থী ফরম পূরণ করেছে। সদ্য সমাপ্ত জেএসসি পরীায় এই প্রতিষ্ঠান থেকে মাত্র ১১জন শিার্থী পরীায় অংশ নেয়। এটিই হচ্ছে খোর্দ্দ বান্দাইখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান চিত্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লীতে খোর্দ্দ বান্দাইখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি বিদ্যালয়টি একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয় ২০০০ সালে। এ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন প্রধান শিক ও সহকারী প্রধান শিক ছাড়াও ৯জন সহকারী শিক, একজন গ্রন্থাগার, একজন অফিস সহকারী, একজন এমএলএসএস ও একজন নৈশ্য প্রহরী। বর্তমান বিদ্যালয়টিতে শিার্থীর সংখ্যা মাত্র ৭১ জন। এত অল্পসংখ্যক শিার্থীকে পাঠদান দিয়ে কর্মরত শিক-কর্মচারীরা প্রতিমাসে নিয়মিত ভাবে ব্যাংক থেকে সরকারি বেতন ভাতার এক লাখ ৬৭ হাজার ১৩৮ টাকা উত্তোলন করছেন। বিদ্যালয়ের এ করুণ চিত্রের অনুসন্ধান করতে গিয়ে পাওয়া গেছে অনেক চমকপ্রদ তথ্য। প্রধান শিক নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও অন্যান্য শিক-কর্মচারীদের দ্বন্দ্বই এ ভগ্নদশার অন্যতম কারণ। এজন্য গত এক বছরে তিনবার এ বিদ্যালয়ের কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। তবুও দ্বন্দের নিরসন হয়নি। দিন দিন এই দ্বন্দ আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলামসহ স্থানীয়দের একাংশ প্রধান শিকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন বলে জানা যায়। এ অবস্থায় কারণ দর্শানোর কোনো নোটিশ ছাড়াই গত ১৩ নভেম্বর বিধিবহির্ভূত ভাবে প্রধান শিক নজরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন ম্যানেজিং কমিটি। এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিাবোর্ডে বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার আবেদন করেছেন প্রধান শিক। এসব দ্বন্দ নিরসনের জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় ব্যক্তিরা একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অনিয়ন ও দুর্নীতির জন্য প্রধান শিক নজরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে প্রধান শিক নজরুল ইসলাম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি বরখাস্ত করেছে কি-না সে বিষয়টি এখনো আমি অবগত নই। তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিা অফিসার নুর আলম বিদ্যালয়টির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে সংশ্লিস্ট দপ্তরে কোনো রিপোর্ট দাখিল করেন নি। দুই মাস পরপর বিদ্যালয় পরিদর্শনের নিয়ম থাকলেও গত ছয় মাসে একবারও তিনি এ প্রতিষ্ঠানে যাননি। এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক শিা অফিসার নুর আলম বলেন, উপজেলা সদর থেকে অনেক দুরে প্রত্যন্ত পল্লীতে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। রাস্তা-ঘাটের অবস্থাও নাজুক। এসব কারণে সময়মত বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করা হয়নি। তবে বিদ্যালয়টির শিার্থীর সংখ্যা খুবই অপ্রতুল বলে স্বীকার করেন তিনি। এদিকে বিদ্যালয়টির ভগ্নদশার জন্য প্রধান শিকের সঙ্গে অন্যান্য শিক-কর্মচারী ও ম্যানেজিং কমিটিকে দায়ী করেন স্থানীয় অভিভাবক মহল। এ অবস্থায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

আরও পড়ুন...

নওগাঁয় শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভা

এন বিএন ডেক্সঃ নওগাঁয় কোভিড-১৯ সময়ে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …