এনবিএন ডেক্স: দক্ষ মানবসম্পদের চেয়ে কোনো সম্পদই বড় নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দক্ষ মানবসম্পদের চেয়ে কোনো সম্পদই বড় নয়। জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্যই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বর্তমান সরকার। দেশের মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সারাদেশে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোকেশনাল কোর্স চালু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের মেধা রয়েছে। তাদের সুযোগ দিলে তারা শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞানে ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। আর সে লক্ষ্যে-ই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার লক্ষ্যে ইতোমেধ্য উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপন প্রকল্প একনেকে অনুমোদিতও হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় ১৮টি নতুন পলিটেকনিক স্থাপনসহ ২০টি পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত মহিলা হোস্টেল, অ্যাকাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিস্তারে পাঠ্যপূস্তকগুলো বাংলায় প্রণয়ন, ছাপানো ও বিতরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিব বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডের মতো করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সে লক্ষ্যে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠনের উপর গুরুত্বও দিয়েছিলেন। কিন্তু ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর সব উন্নয়ন কর্মকা- থেমে যায়। তিনি বলেন, দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা প্রতিটি সেক্টরকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি জাতির পিতার প্রদর্শিত পথে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। যাতে তার স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা যায়। ২০২০ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা শতকরা ২০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার দেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে অপমান হতে হয়। কিন্তু আমি এই অপমান সহ্য করবো না। বিদেশে জনবল পাঠানোর পূর্বে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ক্রয় ক্ষমতা, মাথাপিছু আয়, রির্জাভ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষা ও তথ্য-প্রযুক্তির পাশাপাশি কৃষি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ-অবকাঠামো উন্নয়ন, নারী, গ্রামীণ উন্নয়নসহ প্রতিটি খাতেই বাংলাদেশ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।