23 Magh 1431 বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / জাতীয় সংবাদ / ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আশ্বাসে স্বপ্নে বুক বাঁধছেন ছিটমহলবাসী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আশ্বাসে স্বপ্নে বুক বাঁধছেন ছিটমহলবাসী

এনবিএন ডেক্স: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান সীমান্ত চুক্তি ছিটমহাল বিনিময় বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশ্বাসে স্বপ্নে বুক বাঁধছেন ১৬২ ছিটমহালবাসী। বাংলাদেশে তার প্রথম সফরে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত এ বিষয়টির সমাধানের প্রহর গুণছেন তারা। প্রায় ৭ দশক ধরে ভাগ্যবিড়ম্বিত এ মানুষগুলো নিজ ভূমিতে পরবাসী। নিজেদের পরিচয় গোপন করে শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে তাদের। জমি রেজিস্ট্রির সুযোগ না থাকায় কেনাবেচাও বন্ধ। আইন শৃঙ্খলার বালাই নেই। মৌলিক চাহিদা তাদের জীবনে অনুপস্থিত। সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে সেখানে গা ঢাকা দেয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। ফলে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে ছিটমহালগুলো। প্রটোকল সীমানা চুক্তি (ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট) বাস্তবায়নের দাবিতে দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেও তারা ভাঙতে পারেনি পরাধীনতার শৃঙ্খল। ছিটমহাল বিনিময়ে ১৯৫৮ সালে ভারত-পাকিস্তান (নেহেরু-নুন), ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ-ভারত (মুজিব-ইন্দিরা) চুক্তি, ১৯৯২ সালে ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা পত্র স্বাক্ষর ও ২০১১ সালে ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল স্বাক্ষর করে। বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জঠিলতায় বার বার উদ্যোগ গ্রহণের পরেও কোন সুষ্ঠু সমাধান আসেনি। অথচ প্রটোকল চুক্তির পর থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ও ভারতীয় অংশে বাংলাদেশের ছিটমহালগুলো সে দেশের জাতীয় দিবসগুলোয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে। গত বছরের আগস্টে ভারতের রাজ্যসভায় ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট বিল উত্থাপনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরোধিতায় তা উত্থাপিত না হওয়ায় ছিটমহালবাসীর আশা তিমিরেই থেকে যায়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দু’দেশের ১৬২ ছিটমহলের মধ্যে ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা ও তুফানগঞ্জ মহকুমার অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিটমহাল রয়েছে ৫১টি। যার আয়তন ৭১১০.২ একর। জমিগুলো পৃথক মৌজায়। সেই মৌজার ভিতরে এক বা একাধিক এলাকার ছোট ছোট ছিট রয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১ ছিটমহালের মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টি, নীলফামারীতে ৪টি ছিটমহাল রয়েছে। যার আয়তন ১৭১৫৮.১৩ একর। সর্বশেষ গণণা জুলাই, ২০১১ অনুযায়ী ১৫৮ ছিটমহালের লোকসংখ্যা ৫১ হাজার। ছিটমহাল বিনিময়ে বন্ধুপ্রতিম দুটি রাষ্ট্র কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বন্দীদশা থেকে মুক্তি মিলবে ছিটবাসীদের। দীর্ঘ ভোগান্তির অবসানের পাশাপাশি তারা ফিরে পাবে তাদের নাগরিক অধিকার। ছিটমহাল বিনিময় হলে ভারতের ১০১৭৪.৭২ একর জমি লোকসান হলেও জয় হবে মানবতার।
১৯৪৭ সালে র‌্যাডক্লিফ কর্তৃক স্কেল দিয়ে ভারতের ম্যাপ বিভক্ত করার সময় কোচবিহার রাজা শ্রী শ্রী শ্রীল শ্রী যুক্ত বাবু নারায়ণ ভুপ বাহাদুর ভারতীয় ইউনিয়ন ও পাকিস্তানে যোগ না দেয়ায় ব্রিটিশের অধীনে করদমিত্র রাজ্যে পরিণত হয়। পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়ের কূটনৈতিক বিজয়ে কোচবিহার ভারতীয় ইউনিয়নে যুক্ত হলে ভারত ও পাকিস্তান অংশে বিভিন্ন মৌজায় রাজার খাস খতিয়ানভূক্ত জমি ভারতের অধীনে চলে গেলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ১১১টি ছিটমহাল ভারতের অংশ হয়ে যায়। অন্যদিকে ময়মনসিংহের কাশিমবাজার স্টেটের মহারাজা শ্রী শ্রী শ্রীল শ্রী যুক্ত বাবু শ্রীশ চন্দ্র নন্দী, কুড়িগ্রামের পাঙ্গারাজা শচীন চন্দ্র কোঙ্গার, দিনাজপুরের মহারাজা শ্রী শ্রী শ্রীল শ্রী যুক্ত বাবু গিরীজা প্রসাদ, রংপুরের রাজা জগৎ ভূপেন্দ্র নারায়ণ ও নীলফামারীর মহারানী বৃন্দা রানী পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হওয়ায় ভারতীয় ভূ-খন্ডের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মৌজায় অবস্থিত নিজস্ব খাস খতিয়ানভূক্ত জমিগুলো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়। এ ছিটমহালের সংখ্যা ৫১টি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ছিটমহাল বিনিময় সমন্বয় কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ও ভারতীয় ইউনিটের সভাপতি দীপ্তিমান সেন গুপ্ত বলেন, আমরা আশাবাদী এবারে রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপন হলে আর কোন পক্ষই এর বিরোধিতা করবে না। বিলটি পাস হওয়ার মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান আসবে। বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা আশাবাদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে তার প্রথম সফরে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত এ বিষয়টির সমাধান হবে।

আরও পড়ুন...

নওগাঁয় ৯টি ককটেল ১৫ টি সাউন্ড বোমাসহ বিপুল পরিমান জিহাদী বই উদ্ধার- ৬ শিবির নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ

এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁ সদরের শহরস্থ নামাজগড় মাদ্রাসা পাড়া থেকে ৯টি ককটেল, ১৫ টি সাউন্ড বোমা …