এনবিএন ডেক্স: থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা ও তার পরিবারের বেশ ক’জন সদস্যকে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, তলবের প্রেক্ষিতে বিকেলে সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ইংলাককে বেশ কিছু ঘণ্টা আটকে রাখার পর অজ্ঞাত স্থ?ানে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া, তার পরিবারের বেশ ক’জন সদস্যকেও আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের আটকের ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি তার দল থাই পেউ পার্টি বা সেনা কর্তৃপক্ষ। এর আগে, বৃহস্পতিবার ক্ষমতা দখলের পর শুক্রবার দেশের শতাধিক রাজনীতিককে তলব করে সেনাবাহিনী। সামরিক অভ্যুত্থানের পর শুক্রবার সকালেই ১৫৫ প্রভাবশালী ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে রয়েছেন ইংলাক ও তার পরিবারের সদস্যসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের বেশ কয়েকজন নেতা ও আমলা। এর আগে থাইল্যান্ডের সেনাপ্রধান জেনারেল প্রেয়াথ চান-ওচা নিজেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। সরকার প্রধানের এই পদে স্থায়ীভাবে কাউকে না পাওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন। অন্তর্বতী এই সময়ে প্রেয়াথ চান-ওচা এবং তার নিয়োগকৃত কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকা প্রশাসনিক কাজ সম্পাদন করবেন। জাতীয় শান্তি ও শৃঙ্খলা বহাল রাখা সংক্রান্ত কাউন্সিলের (এনপিওএমসি) বিবৃতি উদ্ধৃত করে দ্য ব্যাংকক পোস্ট এ তথ্য জানিয়েছে। এনপিওএমসি’র প্রধান হিসেবে জেনারেল প্রেয়াথ বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘোষণা দেন। রাতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর সংবিধান স্থগিত করে সকল প্রকার রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ওই দিনই বিকেলে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন, ডিজনি টিভি চ্যানেল ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ওয়ার্ল্ড টিভির প্রচার বন্ধ করে দেয় সেনা কর্তৃপক্ষ। সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব দখলের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় ‘ন্যাশনাল পিস অ্যান্ড অর্ডার মেনটেইনিং কাউন্সিল’ (জাতীয় শান্তি ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা পরিষদ) গঠন করে সেনাবাহিনী। এছাড়া, অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী। অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এ কারফিউ বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জনগণকে বাড়িতে থাকতে বলা হচ্ছে। রাতে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। একইসঙ্গে সেনাঅভ্যুত্থানের পর কোথাও পাঁচজন পর্যন্ত জড়ো না হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনগুলোয় দেওয়া ভাষণে সামরিক অভ্যুত্থান ঘোষণা করেন সেনাপ্রধান প্রায়ুথ চ্যান-ওচা। তিনি ঘোষণা দেন, সেনাবাহিনী দেশটিতে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে এবং রাজনৈতিক সংস্কার করবে।
এছাড়া, এ অভ্যুত্থান থাইল্যান্ডের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলেও দাবি করেন সেনাপ্রধান প্রায়ুথ। একইসঙ্গে দেশটিতে অবস্থানরত ও সফররত বিদেশি নাগরিকদের সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও মঙ্গলবার মার্শাল ল’ জারি করার পর বৃহস্পতিবার এ অভ্যুত্থান ঘটালো সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মার্শাল ল’ জারির পর সমঝোতার লক্ষ্যে রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠকে বসালেও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো আশার বাণী শোনা যায়নি। এরই প্রেক্ষিতে ‘শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়’ অভ্যুত্থান ঘটালো সেনাবাহিনী। দেশটির সবগুলো টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত ভাষণে সেনাপ্রধান প্রায়ুথ যখন অভ্যুত্থান ঘোষণা করছিলেন, তখন চলমান সংকট নিরসনে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় ব্যাংককের আর্মি ক্লাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোত?া সংলাপ চলছিল। বার্তা সংস্থা বিবিসির প্রতিনিধি জোনাথন হেড জানান, অভ্যুত্থান ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আর্মি ক্লাবে তালা দেয় সেনাবাহিনী। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা সংলাপ করছিলেন। প্রতিনিধিরা আরও জানান, সংলাপরত রাজনৈতিক নেতাদের আর্মি ক্লাবের ভেতর থেকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সেনাঅভ্যুত্থান ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীসহ থাইল্যান্ডের রাস্তায় রাস্তায় সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেয় সেনাবাহিনী। লাল ও হলুদ শার্টধারী নেতাদের বাসভবন ও কার্যালয়ের সামনে যেকোনো সহিংসতা দমনে কড়া পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে রাস্তায় রাস্তায় সেনাটহল অব্যাহত রাখা হয়েছে। অপরদিকে, আর্মি ক্লাব থেকে হলুদ শার্টধারী বিক্ষোভকারীদের নেতা সুথেপ থাউগসুবানকে সেনাবাহিনী আটক করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, আট বছরের মাথায় সাদা হাতির দেশটিতে দ্বিতীয়বারের মতো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটলো। ২০০৬ সালে সর্বশেষ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পেউ থাই পার্টির অর্থাৎ লাল শার্টধারীদের প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতাচ্যুত করে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সেনাঅভ্যুত্থান ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীসহ থাইল্যান্ডের রাস্তায় রাস্তায় সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেয় সেনাবাহিনী। লাল ও হলুদ শার্টধারী নেতাদের বাসভবন ও কার্যালয়ের সামনে যেকোনো সহিংসতা দমনে কড়া পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে রাস্তায় রাস্তায় সেনাটহল অব্যাহত রাখা হয়েছে। অপরদিকে, আর্মি ক্লাব থেকে হলুদ শার্টধারী বিক্ষোভকারীদের নেতা সুথেপ থাউগসুবানকে সেনাবাহিনী আটক করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, আট বছরের মাথায় সাদা হাতির দেশটিতে দ্বিতীয়বারের মতো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটলো। ২০০৬ সালে সর্বশেষ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পেউ থাই পার্টির অর্থাৎ লাল শার্টধারীদের প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতাচ্যুত করে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী।