7 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / সর্বশেষ / শপথের পর দিলি্ল যাচ্ছে প্রতিনিধিদল মোদী সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে তৎপরতা আওয়ামী লীগে

শপথের পর দিলি্ল যাচ্ছে প্রতিনিধিদল মোদী সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে তৎপরতা আওয়ামী লীগে

এনবিএন ডেক্স: প্রতিবেশী দেশ ভারতে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের নিরঙ্কুশ বিজয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে বেশ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নতুন সরকারের বাংলাদেশ নীতি কী হবে তা নিয়ে যেমন বিশেষজ্ঞরা নানা মত দিচ্ছেন তেমনি এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং দুই বার ক্ষমতায় থাকা বিরোধী দল বিএনপিও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে প্রধান দুই জোট নেত্রীসহ বড় দলগুলো মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। উভয় দেশের বিদ্যমান সম্পর্ক ধরে রাখতে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক নানা উদ্যোগ নিচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সর (এনডিএ) ঐতিহাসিক জয়ের পর সেদেশের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানান আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর মোদি ও বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংকে প্রায় একই ধরণের পৃথক দুইটি চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। চিঠির মূল বক্তব্য ছিল আগামীতে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার তাগিদ। একই সাথে তাদের সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান শেখ হাসিনা। সর্বশেষ রোববার নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে আনুষ্ঠানিকভাবে শুভেচ্ছসহ বাংলাদেশ সফরেরও আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা। এছাড়া আগামী ২১ মে ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ নেয়ার কথা রয়েছে। এর পরই আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে দিলি্লতে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েচ্ছে। এসব স্পষ্টতই মোদির নতুন সরকারের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে ব্যাপক তৎপরতা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কংগ্রেসের শূণ্যতা প্রভাব ফেলতে না পারে। সূত্রমতে, ভারতের কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারের সাথে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের আদর্শিক, ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগত সুসম্পর্ক রয়েছে। একই সময়ে কংগ্রেস ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়। দুই প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরে উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিও হয়। কিন্তু এবারের নির্বাচনে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি বিপুল বিজয়ে এবং কংগেসের শোচনীয় পরাজয়ের কারণে আওয়ামী লীগে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। আবার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরাও দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্ক অব্যাহত থাকা না থাকা নিয়ে নানা রকম মত দিচ্ছেন। অনেকে শংঙ্কাও প্রকাশ করছেন। সূত্র জানায়, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যেভাবে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে, তাতে কংগ্রেসরে পতনের পর ভারতের সাথে বিদ্যমান সম্পর্ক ধরে রাখতে এখন থেকেই জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এ জন্য ঢাকা ও দিলি্লর মধ্যে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের আগেই মোদির জয়জয়কার অবস্থায় আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ শুরু করে। যা এখন সহায়ক হবে বলেই মনে করছে দলটি। সূত্র আরও জানায়, ভারতে কংগ্রেসের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও শেখ হাসিনার সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দিচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে আওয়ামী লীগের যোগাযোগ আগের চেয়ে বাড়ানো হচ্ছে। পাশপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও যুক্তরাজ্যসহ শক্তিধর রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সাথেও বিদ্যমান সম্পর্ক নানামূখী তৎপরতা জোরদার করা হচ্ছে। এদিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কংগ্রেসের সাথে সুসম্পর্ক থাকলেও বিজেপির নতুন সরকারের সাথেও সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে তারা মনে করছেন। তবে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নত না হলেও অন্তত অবনতি হবে না বলেও আশা করছে ক্ষমতাসীনরা। তার পরেও ঝুকি এড়াতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মোদির বিজয়রে পর থেকে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করে আসছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দলের সাথে নয়, বরং সরকার ও দেশের সাথে হয়। অটল বিহারী বাজপেয়ীর বিজেপি সরকার গত আমলে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ভারতে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমূক্ত সুবিধার বিষয়টিও আশান্বিত করছে সরকারকে। এবিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চেীধুরী এমপি দৈনিক করতোয়াকে বলেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অতীতের সম্পর্ক ও শ্রদ্ধাবোধ মোদি সরকারের সাথেও অব্যাহত থাকবে। কংগ্রেসের মতো বিজেপির সাথেও আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।

আর দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করে বলেছেন, গণতান্ত্রিক ও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সাথে সুসম্পর্ক অব্যাহত রাখতে চায় সরকার। দুই দেশের স্বার্থেই এটি হওয়া দরকার। পাশাপাশি সকল দেশের সাথেই বিদ্যমান সম্পর্ককে পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, মোদি ক্ষমতায় আসছে বলে আওয়ামী লীগ থাকবে না। যাদের রাষ্ট্র ও বিদেশ নীতির গভীর জ্ঞান আছে তারা এমন কথা বলতে পারেন না। তবে একই অনুষ্ঠানে দলীয় নেতা-কর্মীদের কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারও করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ক্ষমতা কারো জন্যই চিরস্থায়ী নয়। ভারতে স্বাধীনতা এনেছিলো যে কংগ্রেস আজ তাদের কী অবস্থা? যত ভালো কাজই করা হোক না কেন জনগণের সাথে সম্পর্ক না থাকলে চরম শাস্তি পেতে হয়। আর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সম্পর্ক হয় দেশের সাথে- সরকারের সাথে, দলের সাথে নয়। সুতরাং নতুন সরকারের সাথে আমাদের সীমান্তের সমস্যার সমাধান ও তিস্তা চুক্তি হবে।

আরও পড়ুন...

মোহাম্মদ আবদুল করিম পলাশ এর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন

আরটিভি’র সংবাদ প্রযোজক মুহম্মদ আবদুল কাইয়ূম পাভেল এর বড় ভাই মোহাম্মদ আবদুল করিম পলাশ আর …