8 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / রাজনীতি / লালমনিরহাট জেলা কালেক্টরেটের মাঠে খালেদা জিয়া ভারত পানি না দিলে ট্রানজিট ও করিডোর বন্ধ করে দিতে হবে দাবি না মানলে বিদায়ের পর কোথায় যাবেন তা আগেই ঠিক করে রাখুন সীমান্তে হত্যা হচ্ছে অথচ সরকার কোনো প্রতিবাদ করছে না খালেদা জিয়া।

লালমনিরহাট জেলা কালেক্টরেটের মাঠে খালেদা জিয়া ভারত পানি না দিলে ট্রানজিট ও করিডোর বন্ধ করে দিতে হবে দাবি না মানলে বিদায়ের পর কোথায় যাবেন তা আগেই ঠিক করে রাখুন সীমান্তে হত্যা হচ্ছে অথচ সরকার কোনো প্রতিবাদ করছে না খালেদা জিয়া।

মঞ্জুরুল ইসলাম-মঞ্জু , লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারকে হুশিয়ারী করে বলেন,অবিলম্বে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী মেনে নিন। নইলে গন আন্দেলনের মাধ্যমে পতন ঘটানো হবে । সেড়্গেত্রে কোথায় যাবেন সে ব্যবস্থা এখনই করে রাখুন। তিনি বলেন,আওয়ামীলীগের আমলে কখনই সুষ্ঠ নির্বাচন হয়নি। সুতরাং তাদের ড়্গমতায় নির্বাচন কখনই মেনে নেয়া হবে না। সেই সংগে খালেদা জিয়া ইভিং পদ্ধতিতে ভোটিং ব্যাবস’াও বাতিলের দাবী করে বলেন আওয়ামী পুনরায় ড়্গমতায় যাবার জন্য এ কৌশল অবলম্বন করেছে।
আওয়ামীলী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে খালেদা জিয়া আরও বলেন, এদেশ স্বাধীন ভাবে চলুক তা এ সরকার চায়না। বর্তমান সরকারকে খুনি লুটেরাবাজ সরকার উলেস্নখ করে তিনি বলেন যে সরকার বর্ডার রড়্গা করতে পারেনা,দিতে পারে না জান মালের নিরাপত্তা সে সরকারের ড়্গমতায় থাকার আর কোন অধিকার নেই।
গতকাল সোমবার বিকেলে লালমনিরহাট জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান আথিতির বক্তব্যে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।
স’ানীয় কালেক্টরেট মাঠে আয়োজিত এ জনসভায় সভাপত্তিত্ব করেন জেলা বিএনপি‘র সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যড়্গ আসাদুল হাবীব দুলু।
বর্তমান সরকারকে ব্যার্থ সরকার উলেস্নখ করে খালেদা জিয়া বলেন সাংবাদিক সাগর রম্ননি হত্যা ঘটনার সাথে সরকারের লোকজন জড়িত রয়েছে বলেই সরকার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের না ধরে কালড়্গেপন করছে। এ প্রসংগে তিনি বলেন সরকারের এমন কিছু গোপন তথ্য এ দুই সাংবাদিক দম্পতির কাছে ছিল- যা বর্হিবির্শ্বে ফাঁস হবার ভয়ে সরকার তার লোকজন দিয়ে এ সাংবাদিক দম্পতিদ্বয়কে হত্যা করে। তিনি বলেন এ সরকারের এ পর্যনত্ম ১৫ জন সাংবাদিক সহ সারা দেশে বিরোধী দলের ১২ হাজার নেতা কর্মী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে।
খালেদা জিয়া আওয়ামীলীগ সরকারকে উন্নয়ন বিমুখ ও মিথ্যাচার সরকার উলেস্নখ করে বলেন তারা ড়্গমতায় এসে উন্নয়নের কিছুই করেনি। তিনি বলেন,তিস-া ও পদ্মা শুকিয়ে গেছে। পদ্মার ফারাক্কার বাঁধ চালু করেছিলো আওয়ামী লীগ। এক তরফা বন্ধুত্ব হতে পারে না। তিনি বলেন, ভারত এক ফোটাও পানি দেয়নি। যদি পানি না দেয় তাহলে ট্রানজিট, করিডোর সব বন্ধ করে দিতে হবে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আমাদের দািব সুস্পষ্ট। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে নিতে হবে। দাবি না মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনে সরকারের বিদায় নিতে হবে।
গতকাল সোমবার বিকালে জনসভাস’লে এসে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া। বিকাল ৪টার দিকে কালেক্টরেটের মাঠের মঞ্চে উঠার পর মূর্হুর মূর্হুর করতালি দিয়ে প্রিয় নেত্রীকে অভিনন্দন জানায় নেতা-কর্মীরা। পৌনে ৫টার দিকে শুরু করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী বক্তব্যে তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা ও বিএনপি সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।
জেলা বিএনপির উদ্যোগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই জনসভায় বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, লালমনিরহাটকে সাজানো হয়েছে দেখে অত্যান- মুগ্ধ হয়েছি। তিনি বলেন, এই সরকার শুধু মিথ্যা কথা বলেন। তারাকি কখনো লালমনিরহাটের উন্নয়ন করেছিলো। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুলু মন্ত্রী হওয়ার পর সব উন্নয়ন কাজ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
১২ মার্চ ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি সফল করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার মহাসমাবেশ অত্যন- গুরুত্বপূর্ণ। ওইদিন নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো দিন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তাই তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। যদি নির্বাচন না হয় তাহলেও আওয়ামী লীগকে বিদায় নিতে হবে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন,মনে করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না আর নির্বাচন হবে । আপনারা ক্ষমতায় বসে থাকবেন তা হবে না। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ১২ মার্চ পাল্টা কর্মসূচি দেয়া বন্ধ রাখেন। কারণ আমরা দেড় মাস আগে কর্মসূচি দিয়েছি। ১২ তারিখে ঢাকার মানুষ ঢাকায় নামবে এবং সারা দেশ থেকে ঢাকায় মানুষ যাবে। সমাবেশে ্‌উপসি’ত জনতাদের তিনি প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা কি ঢাকা যাবেন? ইনশাল্লাহ জনগণকে দিয়েই এই সরকারকে বিদায় করবো। তিনি বলেন,জন বিচ্ছন্ন এ সরকার নিজেদের অধীনে নির্বাচনেও তারা ভয় পায়। কারণ জনগণ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা সীমান-বর্তী এলাকা। প্রতিদিন খবরের কাগজে দেখেন কিভাবে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। হত্যা করে ফেলানীকে মেরে কাটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছে। চাপাইনবাবগঞ্জের একজন নীরিহ মানুষকে কাপড় খুলে নিয়ে কিভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক। অথচ সরকার এর কোনো প্রতিবাদ করে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মানুষের জমি জায়গা দখল করছেন, হিন্দুদের জমি দখল করছেন। এসব আপনাদের পুরোনো অভ্যাস। আবার শুরম্ন করেছেন। আমি সকল ধর্মের মানুষকে বলবো, আসুন আমরা সবাই মিলে এই দেশকে গড়ে তুলি।
তিনি বলেন, এই সরকার বিনামূল্যে সার দেয়ার কথা বললেও বিনামূল্যে সার দেয়নি। অথচ এখন কয়েকগুণ বেশি মুল্যে সার বিক্রি হচ্ছে। বিদ্যুৎ, ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে কৃষি উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। কৃষকেরা বড় কষ্টের মধ্যে আছে তারা হতাশ। আমি বলতে চাই বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ তাই কৃষকদের আগে বাঁচাতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই কৃষককে ভালো রাখা। বিদেশ থেকে আমদানী করা নয়।
তিনি বলেন, এই সরকার বলেছিলো ঘরে ঘরে চাকুরি দেবে। কিন’ তারা এতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে বরং ৮৮৫জনকে সরকারী কর্মকর্তাকে ও এসডি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ১শ শিক্ষককে কোনো কারণ ছাড়াই চাকুরি থেকে বাদ দিয়েছে। অথচ তাদের লোকদের চাকুরি পেতে কোনো ইন্টারভিউ লাগে না।
খালেদা জিয়া বলেন, তিন বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে শেষ করে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে দেয়া একটি ওয়াদাও পূরণ করেনি। অন্যদিকে বিদেশিদের দেয়া ওয়াদা পূরণ করছে। তিনি বলেন, গার্মেন্ট শিল্পের অবস’া খারাপ। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির সমস্যার কারণে নতুন কোনো শিল্প কারখানা হয়নি তিন বছরে। পুরোনো যেসব গার্মেন্ট শিল্প ছিলো তাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেসব কারখানা ভারতীয়রা কিনে নিচ্ছে। আমাদের ওষুধ শিল্প খুব ভালো। সেই ওষুধ শিল্পের ওপর ভারতীয়দের নজর পড়েছে।
তিনি বলেন, বিডিআরের ৫৭ জন অফিসারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। এরশাদও বলেছে এই হত্যাকান্ডের বিচার করার জন্য। একদিকে অফিসারদের হত্যা করা হয়। অন্যদিকে তাদেরকে শেরাটন থেকে খাবার এনে খাওয়ায়। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা গেলেই তার বিচার হবে বলে মন-ব্য করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকে কোনো দিনই চায়নি বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি থাকবে। বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে। তারা ২৫ বছরের গোলামী চুক্তি করেছিলো। তিনি বলেন, যুবক তরম্নণ তোমরা কি চাও বাংলাদেশ স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশ হয়ে থাকবে। যদি স্বাধীন থাকতে চাও তাহলে আওয়ামী লীগকে সরাতে হবে।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে গিয়েছিলেন। কিন’ কি নিয়ে এসেছেন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলো, তিনি বলেছেন, আশ্বাস পেয়েছে। তিনি বলেন, যে সরকার মানুষকে নিরপাত্তা দিতে পারে না, তিন বেলা খাবার দিতে পারে, ব্যবসার জন্য অর্থ দিতে পারে না, পদ্মা সেতুর দুর্নীতির জন্য অর্থ বন্ধ করে দেয় সেই সরকার কিসের সরকার। তারা ব্যর্থ অপদার্থ সরকার। এই ব্যর্থ অপদার্থ সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর ৪০ হাজার মানুষ হত্যা করেছিলো। এজন্য এসরকার খুনি সরকার, দুর্নীতিবাজ সরকার। তাদের হাতে মানুষের রক্ত। তাদের ড়্গমতায় রাখা যায় না।
এই সরকার যে খুনি এটা আগেও প্রমাণ হয়েছে। ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন- অনেক মানুষ হত্যা করেছে। বাসে গান পাউডার দিয়ে, লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। যে সরকারের প্রধান বলে একটার বদলে দশটা লাশ চাই, তিনি কি খুনি নন। মানুষ খুন করা তাদের সভাব। তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন- সব শানি-পূর্ণ কর্মসূচি করেছি। রোডমার্চে দেখেছেন সারারাত মানুষ রাসত্মায় দাড়িয়ে ছিলো। সর্বশেষ চট্টগ্রামের রোডমার্চ থেকে ২৯ জানুয়ারি গণমিছিলের ঘোষণা দিয়েছিলাম। সরকার মানুষ ভয় বলে তারাও ২৯ জানুয়ারি কর্মসূচি দিয়েছিলো। পরে আমরা একদিন পিছিয়ে ৩০ তারিখে করেছি। আমাদের শানিত্মপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি চালিয়ে লড়্গীপুর ও চাঁদপুরে ৪জনকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমরা তিন বছরে মাত্র ৮টি হরতাল দিয়েছি। আর আওয়ামী লীগ আমাদের সময় ১৭৫ দিন হরতাল দিয়েছিলো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। এই দেশে অনেক সম্পদক আছে। সেজন্য অনেকের দৃষ্টি পড়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তি ক্ষমতায় থাকলে কিছু করতে পারবে না।
খালেদা জিয়া বলেন, আগামি দিনে ক্ষমতায় আসলে এই লালমনিরহাট আর অবহেলিত থাকবে না। তিনি বলেন, এই সরকার ভারত থেকে অবাধে ডিম আর বাচ্ছা আনার কারণে দেশে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, শেয়ার বাজার, পদ্মা সেতুর টাকা লুট করেছে। তাই এই সরকার একটা লুটেরা সরকার। সেজন্য তাদের আর সময় দেয়া যায় না।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স’ায়ী কমিটির সদস্য লে,জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান,ব্যারিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শামসুজ্জামান দুদু, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, যুগ্ম -মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশীদ, আন-র্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ.ন.ম এহছানুল হক মিলন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মহিলা সভানেত্রী নুরে আরা সাফা,সৈয়দা আফিয়া আশরাফি পাপিয়া এমপি, যুব দল সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, স’ানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালেহ উদ্দিন হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রোকন উদ্দিন আহমেদ বাবুল, সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক, যুবদল সভাপতি আফজাল হোসেন, মহিলা দলের সভানেত্রী জিনাত আরা রোজী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, কৃষকদলের সভাপতি আক্কেল আলী মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা দলের আহবায়ক হাফিজুর রহমান হাফিজ,স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল বাতেন, জিয়া পরিষদের জেলা আহবায়ক সাইফুল ইসলাম বিপুল,জেলা ছাত্র দলের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ লিমন, লালমনিরহাট পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. ফজলুল হক সরকার পাটগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি মোস-ফা সালাউদ্দিন ওপেল, হাতীবান্ধার বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন, কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.নুরুন্নবী, আদিতমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমূখ।
গত রবিবার রাতে বগুড়ার সার্কিট হাউজে উঠেন খালেদা জিয়া। সেখানে তাঁকে সংবর্ধনা দেন বগুড়া নব গঠিত বিএনপি জেলা কমিটির নেতারা। বগুড়া থেকে বেলা ১২টার দিকে লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে রাস-ায় তাঁকে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক জয়নাল আবেদিন চান, জেলা মহিলা দলের সম্পাদক নিহার সুলতানা তিথী ফুল ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে বগুড়া থেকে সড়ক পথে গাইবান্ধা,রংপুর হয়ে লালমনিরহাট শহরে পৌঁছেন। এ সময় রাস-ার দুই পাশে হাজার হাজার নেতাকর্মী খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। গাইবান্ধার পলাশবাড়ি সাদুল্লাপুর-৩ আসন এলাকায় যুবদল নেতা ও জিয়া শিশু কিশোর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম রফিকের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মী তাদের প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এদিকে রংপুরের পীরগঞ্জে হযরত শাহ ইসমাইল গাজী (র.) মাজার জিয়ারত করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লালমনিহাট পৌঁছে প্রথমে তিনি সার্কিট হাউজে উঠেন। মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রাম নিয়ে বিকেল সোয়া চার টার দিকে মঞ্চে উপবিস্ট হয় খালেদা জিয়া।
সীমান-বর্তী জেলা লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলা ছাড়াও পাশ্ববর্তি কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও রংপুর থেকেও বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, অটোবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে নেতা-কর্মীরা এই জনসভায় যোগ দেয়। সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে জনসভাস’লে আসতে শুরু করে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে যারা সকালে ট্রেনে চড়ে সভাস’লে আসতে চেয়েছিলেন তারা গতকাল হতাশ হয়েছেন। কারণ লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে কোনো ঘোষনা ছাড়াই গতকাল বন্ধ ছিল। জনসভায় যাতে লোকজন আসতে না পারে এজন্য ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে স’ানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন।
মিছিলের শহর : উত্তরাঞ্চলের সীমান-বর্তী জেলা লালমনিরহাটে খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে এই অঞ্চলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। শহরের ঢোকার আগেই নির্ধারিত স’ানে গাড়ি রেখে লোকজন বর্ণাঢ্য মিছিল নিয়ে পায়ে হেটে জনসভাস’লে আসে। গ্রামের নারীরাও কাজ-কর্ম ফেলে বিরোধী দলের নেতাকে একনজর দেখার জন্য প্রত্যন- এলাকা থেকে এই জেলা শহরে এসেছে। বিকাল তিনটায় কালেক্টরেট মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেলে জনসভাটি জনসমুদ্রে রূপ নেয় এবং শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে উত্তরের এ জেলা শহরটি। এদিকে মাঠের পাশের মিশন রোড, স্টেশন সড়ক, মজিদা খাতুন কলেজ সড়ক, মার্কাস মসজিদ সড়কসহ আশ-পাশের সবগুলো রাস-ায় মানুষের ঢল নামে। মাঠে জায়গা না হওয়ায় উৎসুক অনেকে পাশ্ববর্তি বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের ছাদ ও কার্নিশ এবং গাছে উঠে পড়েন। বেগম খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে সপ্তাহখানেক ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন- জেলাশহরসহ বিভিন্ন উপজেলা এবং ইউনিয়নের হাটবাজারগুলোতেও বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনগুলো অব্যাহতভাবে মিছিল করে আসছিল।
বর্ণিল সাজ এবং ১৮ ঘোড়ায় অভ্যর্থনা : খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে শহরের প্রবেশস’ল তিস-া রেল ব্রিজ থেকে ১৫ কিলো মিটার পর্যন- নির্মাণ করা হয় শতাধিক তোরণ। রাস-ার দুই পাশের কাগজের তৈরির কামার-কুমার,ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি ও কৃষকদের প্রতিকৃতি এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত বৃহৎ প্রতিকৃতিও স’াপন করা হয়। এছাড়াও রাস-ার দুই পাশে বিভিন্ন রঙের পতাকা লাগানো হয় এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়কেও বিভিন্ন তোরণ ও আলোকসজ্জা করা হয়।
জেলার প্রবেশ পথ তিস-া রেল ব্রিজ এ খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এসে পৌঁছালে জেলা সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলু তাকে অভ্যর্থনা জানান। সেখান থেকে বিরোধী দলীয় নেতার গাড়ি ১৮ টি ঘোড়ার একটি চৌকশ দল স্কট করে তাকে সার্কিট হাউজে নিয়ে যায়। এই পথে বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতা-কর্মীরা ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে গান গেয়ে নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়। লাল, সবুজ, হলুদ ও সাদা রংয়ের টিশার্ট পড়ে কয়েকহাজার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা সভামঞ্চের সামনে অবস’ান নিয়ে তাদের দলনেত্রীর উদ্দেশ্যে বিশেষ ডিসপ্লে প্রদর্শন করেন।
নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা : জনসভার মাঠ ঘিরে পুলিশ, র‌্যাব ও ব্যাটলিয়ন পুলিশের তিন স-রের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বসানো হয়। উঁচু ভবনের ছাদে বসানো হয় পুলিশি নজরদারি। শহরের বিভিন্ন সড়কে টহল দেয় র‌্যাব। এছাড়া সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সদস্যরাও জনসভাস’ল ও আশপাশের এলাকায় নজরদারি চালায়।
লালমনিরহাটের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আবু যুবায়ের জানান, জনসভায় অন-ত পাঁচ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। দলের পক্ষ থেকেও এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নিরাপত্তা টিম গঠন করা হয়।
জনসভা শেষে সার্কিট হাউসে কিছু সময় বিশ্রামের পর তিনি স’ানীয় হারাটি ইউনিয়ণ বিএনপি কার্যালয় পরিদশন করেন। এরপর তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

আরও পড়ুন...

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ৭নং শ্রীমন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এন বিএন ডেক্সঃ নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ৭নং শ্রীমন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার …