বখতিয়ার রহমান,পীরগঞ্জ (রংপুর): রংপুরের পীরগঞ্জ ও দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের আলোচিত ও প্রত্যাশীত পীরগঞ্জের করতোয়া নদীর উপর নির্মানাধিন ‘ওয়াজেদ মিয়া সেতুর’ নির্মান কাজ অর্থাভাবে আবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে । আগামী ২০১৩ সালে জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ শুরু করা হলেও ২ বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র সাড়ে ৪ কোটি টাকা। সেতু নির্মানের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার জানিয়েছে, যথাসময়ে নির্মাণকাজ শেষ করতে হলে চলতি অর্থ বছরে কমপক্ষে ১২ কোটি টাকার প্রয়োজন। সে স’লে দেয়া হয়েছে মাত্র ২ কোটি টাকা। গাইবান্ধা- দিনাজপুর সড়কের রংপুরের কাঁচদহ ঘাট নামক স’ানে করতোয়া নদীর উপর নির্মাণাধীন এই সেতুটি প্রথম দফায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল বিগত ১৯৯৯ ইং সালের ১৩ মে। সে সময়ে করতোয়া সেতু নাম করনের মাধ্যমে মাত্র ৯৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ব্রীজটির নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস-র স’াপন করেছলেন তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। সে সময় মাত্র ৩টি পিলারের আংশিক নির্মাণ কাজ করে তৎকালিন ঠিকাদার । পরবর্তীতে সেতুটির অনুকুলে আর অর্থ বরাদ্ধ না আসায় বন্ধ হয়ে যায় সেতুটির নির্মাণ কাজ। বর্তমান আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নির্বাচনী প্রতিশ্রতির অংশ হিসেবে আবার সেতুটি নিমানের্র উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত বছরের ২০ মার্চ সেতুটির নাম পরিবর্তন করে “ডঃ ওয়াজেদ মিয়া সেতু” নাম করনের মাধ্যমে যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন সেতুটির পুনঃনির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এ জন্য নতুন করে রিভাইস বাজেট প্রনয়ণ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে সেতুটি নির্মানে ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হলেও এবারে রিভাইস বাজেটে এর পরিমান দাড়ায় ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকায়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) রংপুর অফিসের প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম জানান, সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ২৭৮ দশমিক ৮৮ মিটার এবং প্রস’ ৭ দশমিক ৩ মিটার। সেতুটিতে ৮টি পিলারের উপর ৭ টি স্প্যান বসানো হবে। এখন পর্যন- মাত্র ৪টি পিলার বসানো হয়েছে এবং ৩ টি পিলারের আংশিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ঊভয় পার্শ্বে রয়েছে ১ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। তিনি আরো জানান, বরাদ্দ কম থাকায় ঠিকাদার কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন- যে অর্থ ছাড় করা হয়েছে তাতে মাত্র একটি স্প্যানের গার্ডার নির্মান করা সম্ভব হবে। এই গতিতে কাজ করা হলে যথা সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ আরও জানায়, সব চেয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে সেতুটির পশ্চিম তীরের পিলার বসানো নিয়ে। ওই পিলারের জন্য যে স’ান নির্ধারণ করা হয়েছে সেই জমিটি এখনও অধিগ্রহণ করা হয়নি। জমি অধিগ্রহণের বিষয়টিও আটকে আছে অর্থ বরাদ্দের অভাবে। এ কারণে ঠিকাদার চাইলেও সেতুটির পশ্চিম তীরে পিলার নির্মাণ করতে পারবেন না। সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মইন উদ্দিন বাশি এর প্রকল্প ব্যবস’াপক প্রকৌশলী সৈয়দ ইমতিয়াজ হোসেন রতন জানিয়েছেন, এখনও হাইড্রোলজি মেথলজি ( নদীর গতি পথের উপর সমীক্ষা) রিপোর্ট তৈরি হয়নি। ওই রিপোর্ট তৈরি হবার পর ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু হবে। অবশ্য সেতুটির নির্মাণ কাজের জন্য সবচেয়ে বড় অন-রায় হয়ে দাঁড়িয়েছে অপ্রতুল বরাদ্দ। যে ভাবে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে তাতে যথা সময়ে সেতুটি নির্মাণ করা একবারেই সম্ভব নয়। শেষ বছরে গিয়েও যদি একেবারে বরাদ্দ দেওয়া হয় তাহলেও জটিল পরিসি’তির সৃষ্টি হতে পারে।
নির্মানাধিন সেতু এলাকার স’ানীয় পীরগঞ্জের টুকুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শাহীন জানান, আমাদের এই আসন থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করার সময় এই সেতুটি নির্মাণের প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন। কিন’ কাজের যে গতি তাতে আমরা অনেকটাই হতাশ ।
উল্লেখ্য সেতুটির নির্মাণ শেষ হলে পীরগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ বাসীর যোগাযোগ সহজতর হবে এ ছাড়া ঢাকা থেকে সড়ক পথে দিনাজপুরের দুরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার হ্রাস পাবে। একই সাথে হিলি স’ল বন্দরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ।
Home / সর্বশেষ / পীরগঞ্জ ও নবাবগঞ্জের ১০ লাখ মানুষের প্রত্যাশিত ওয়াজেদ মিয়া সেতু’র নির্মান আবারও অনিশ্চিয়তায় পড়েছে ।
আরও পড়ুন...
মোহাম্মদ আবদুল করিম পলাশ এর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন
আরটিভি’র সংবাদ প্রযোজক মুহম্মদ আবদুল কাইয়ূম পাভেল এর বড় ভাই মোহাম্মদ আবদুল করিম পলাশ আর …