8 Kartrik 1431 বঙ্গাব্দ বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / জাতীয় সংবাদ / চাইনা আর মরনোত্তর কোন পদক বেঁচে থাকা অবস্থায় প্রাপ্য মর্যাদা চাই। ভাষাসৈনিক অলি আহাদ ও ভাষা সৈনিক মতিনের পাশে রাষ্ট্রের দাড়ানো এখনই সময়।।

চাইনা আর মরনোত্তর কোন পদক বেঁচে থাকা অবস্থায় প্রাপ্য মর্যাদা চাই। ভাষাসৈনিক অলি আহাদ ও ভাষা সৈনিক মতিনের পাশে রাষ্ট্রের দাড়ানো এখনই সময়।।

এনবিএন ডেক্স: আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস যখন ৬০ বছরে পা রেখেছে, সারা দেশজুড়ে যখন ভাষা সৈনিকদের স্মরনে প্রতিদিন স্মরণসভা, সেমিনার, বই মেলা সহ নানা আয়োজন চলছে ঠিক সেই মুহুর্তে ভাষা সৈনিকদের অন্যতম সংগঠক অলি আহাদ অবহেলায়, অযত্নে ঘরের কোনায় জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার দিনক্ষন গুণছেন। কেউ কাছে গিয়ে যদি প্রশ্ন করে, তিনি জানান জীবনের শেষ মুহুর্তে এসে যখন দেখি গণতন্ত্র বন্দী হয়ে আছে তখন হৃদয়টা কষ্টে ভরে উঠে। ভাষা আন্দোলনের এই মহা নায়ক ১৯২৮ সালে ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার সদর উপজেলার ইসলামপুরে জন্ম গ্রহন করেন।পড়ামুনার হাতেখরি পরিবারের মধ্যে শেষ করে ১৯৪৪ সালে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ন হয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তার পর তার শুরু হয় গণতন্ত্রের পথে, সংগ্রামের পথে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন পথচলা। ১৯৫২ সালের রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের এই মহান নেতার জীবনে নির্যাতন, জুলুম, অত্যাচার, কারাবরন সহ নানা প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ৫২’র ভাষা আন্দোলনকে যে কজন বীর ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব, আব্দুল মতিন, গাজীউল হক’র নাম উচ্চারিত হয় তাদের মধ্যে জীবন্ত কিংবদন্তী হিসাবে আজও বেঁচে আছেন ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন ও অলি আহাদ।

ভাষার মাস এলেই এই দুই জনকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত করার জন্য মত সরকার ও বিরোধীদলে প্রতিযোগীতা শুরু হয়, পাশাপাশি সুশীলসমাজের সমাজপতিরাও তাদের পাশে বসে ভাষা সৈনিকদের স্মৃতিচারন করে নানা মুখরোচক বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য যখন শেষ তখন শুরু হয় অবজ্ঞার আসল দৃশ্য। আয়োজকরা প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ভুলেযান যাদের জন্য এই আয়োজন তাদের কথা।

এক সময়ে সাহসী সৈনিকরা নরম সুরে বিদ্রোহী কন্ঠে বলেন, শরীরটা আর ঠিক রাখতে পারছিনা, বাসায় যাওয়া দরকার, তখন আবারো ব্যস্ততা মুহুর্তে বেড়ে যায়। কোন কোন আয়োজক নিজেদের গাড়ী আর কেউ কেউ বা সি.এস.জি’তে উঠিয়ে দিয়ে মাতৃভাষার জন্য শ্রেষ্ঠ কাজটি করে ফেলেছেন এই তৃপ্তিতে বাড়ী ফেরেন, আর ঘরের সদস্যদের সাথে আনন্দের সাথে শেয়ার করেন ‍”জানো! আজ ভাষাসৈনিক মতিন ভাই’র সাথে, কিংবা অলি আহাদ এর সাথে ছবি তুলেছি্”।রাষ্ট্রের প্রধানরাও তাদের সমাবক্তৃতায় ভাষা সৈনিকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। হয়তো দু-একজনের কপালে জুটেছে একুশ পদক, স্বাধীনতা পদক সহ রাষ্ট্রীয় কিছু পদকী মর্যাদা। কিন্তু ভাষা সৈনিক অলি আহাদ এখন কি অবস্থায় আছে, কেমন আছে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন সহ অন্যান্য ভাষা সৈনিকরা? সেদিন এক টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে একজন ভাষা সৈনিক হাসপাতালের বেডে চিৎকার করে বলছিল “বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে” আমাকে এভাবে অসহায়ের মত বেঁচে থাকতে হতো না। রাষ্ট্রের শতব্যস্ততার মাঝেও ২০ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাত ১২:০১ মিনিটে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রীপরিষদ, বিরোধীদলীয় নেতা সহ সকল মানুষ হাজার হাজার ফুলে ফুলে বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় ভরিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সহ প্রতিটি শহীদ মিনার। তখন জীবন্ত কিংবদন্তী ভাষা সৈনিকরা বিছানায় শুয়ে বুকফাটা করবে আত্মচিৎকার। হয়তো কেউ শুনবেনা, শুনবে শুধু বিধাতা। হয়তো তারা বলবে, আমাদের মৃত্যুর পরও আমাদের বেদীতেও ফুলে ফুলে ভরে উঠবে, কিন্তু বেচে থেকে কি পেলাম আজ অধিকার??

আসুন আমরা আমাদের বিবেক কে জাগিয়েতুলি, আমাদের প্রিয় ভাষা সৈনিক অলি আহাদ, আবদুল মতিন সহ যারা ৫২’তে গুরুত্বপূর্ন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের মৃত্যুর পর মরনোত্তর কোন পদক না দিয়ে বেচে থাকার যে আশা রয়েছে সেটুকু সময় তাদেরকে রাষ্ট্রীয় খরচে উন্নত চিকিৎসার সু ব্যবস্থা করতে পারলে মৃত্যুর শেষ মুহুর্তে দাড়িয়ে এসে অন্তত তারা এইটুকু শান্তনা পাবে “মায়ের জন্য, মায়ের ভাষার জন্য” এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ও সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য যে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা ও অবদান রেখেছিলেন, রাষ্ট্র তাদের সেই অবদানের জন্য শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সম্মান জানিয়েছে। যা আগামী প্রজন্মের কাছে একটি মাইলফলক দৃষ্টান্ত হিসাবে উপস্থাপিত হবে।

আরও পড়ুন...

নওগাঁর নিয়ামতপুরে সমতল আদিবাসীদের মিলন মেলায় ঐতিহ্যবাহী সাঁওতালী নৃত্য প্রতিযোগিতায় আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, আদিবাসীরা পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো আনা মানুষ হয়েছে ————————————–খাদ্যমন্ত্রী

এন বিএন ডেক্সঃ  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অর্থাৎ আদিবাসীরা মানুষ হয়েছে, তবে পুরোপুরি মানুষ না হলেও বারো …