মঞ্জুরুল ইসলাম-মঞ্জু কালীগঞ্জ,লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষন করেছে একদল লম্পট। ধর্ষনের শিকার ওই ছাত্রী বর্তমানে হাতীবান্ধা হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এতে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে রোববার রাতে স্থানীয় থানায় মামলা করেছে। চিহ্নিত ধর্ষকরা মামলা তুলে নিতে মেয়েটির পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ধর্ষিতার পিতা। শনিবার রাতে উপজেলার পূর্ব নওদাবাস গ্রামে ওই ধর্ষনের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সেই সাথে ধষর্কদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। গতকাল সোমবার সকালে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস’্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, গণধর্ষনের শিকার নওদাবাস দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী দিপ্তি রানী হাসপাতালের বেডে কাঁতরাচ্ছে। পাশেই মা শরসতি রানী অঝোড় ধারায় কাঁদছেন। এমন সময় হঠাৎ করে দ্প্তী প্রচন্ড ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে ওঠে। মুহুর্তে দৌড়ে এসে বাথ্যা নাশক ও ঘুমের ইনজেকশন দেয় ডাক্তার। একটু পরে জানতে চাইলে গুরতর অসুস্থ্য দিপ্তি বলেন, গত শনিবার রাতে বাড়ির অদূরে পূর্ব নওদাবাস মন্দিরে তার মা সহ গিয়েছিলেন অষ্ট প্রহর পূঁজার অনুষ্ঠানে। রাত ১০ টার দিকে জরুরী কাজে বাড়িতে ফিরেন মা শরসতি। এর কিছুক্ষণ পর দিপ্তি রানী তার মা ফিরে না আসায় একাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে প্রতিবেশী বিরেন্দ্র নাথ মন্টুর লম্পট ছেলে সুমন (২২), পার্শবর্তী গ্রামের ইচ্ছা বর্মণের ছেলে অধির(২৮) ও সুরেন্দ্র নাথের ছেলে বিপুল কুমার ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী দিপ্তীর গতিরোধ করে মূখে মাফলার পেচিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে পাশের এক ক্ষেতে গণধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এরমধ্যে মা শরসতি বাড়ি থেকে পূনরায় মন্দিরে গিয়ে মেয়েকে না পেয়ে খোজাখুঁজি শুরু করেন। পরে অচেতন দিপ্তি রানীকে রক্তাত্ত অবস্থায় ওই ক্ষেত থেকে উদ্ধার করে রাতেই হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সুপ্তির বাবা গনেশ চন্দ্র বর্মণ জানান, তিনি রোববার রাতে ধর্ষকদের নামে হাতীবান্ধা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি থানায় মামলার খবর পেয়ে চিহ্নিত ধর্ষকরা ও তাদের পরিবারের লোকজন তাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন বলে দাবি করেন গনেশ চন্দ্র। এ সময় তিনি উপসি’ত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি গরীব মানুষ ওরা(ধর্ষকরা) আমাকে ও আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে, দয়া করে আমাদের বাঁচান” বলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন ধর্ষিতার বাবা। এদিকে হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে সুপ্তি রানীকে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তির ৩৬ ঘন্টা পরেও কোন পরীক্ষা-নিরিক্ষা করেন নাই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। দিপ্তির পরিবারের অভিযোগ ডাক্তরা ধর্ষকের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তা এড়িয়ে যাওয়ার চ্ষ্টা করেন। এমন অভিযোগের ব্যাপারে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচওর দায়িত্বে থাকা আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আর,এম,ও) ডাঃ রমজান আলীর কাছে জানতে চাইলে, তিনি ভিকটিমের কোন প্রকার উৎসাহ না থাকায় আগে কোন পরীক্ষা করেন নাই বলে দাবি করেন। পরে তিনি উপসি’ত সাংবাদিকদের জেড়ার মুখে গতকাল সোমবার দুপুর ০১ টার দিকে তাৎক্ষণিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। তবে গতকাল (বিকাল ৫ টা) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দিপ্তীর ধষর্ণের রিপোর্ট জানাতে পারেননি চিকিৎসকরা। হাতীবান্ধা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) তাপস সরকার জানান, রোববার রাতে এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পরপরেই প্রাথমিক তদনে- ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেই সাথে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে নওদাবাস দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ ম শ্রেনীর ছাত্রী ধষর্ণ হওয়ার ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনার চিহ্নিত ধষর্কদের গ্রেফতারকরে বিচারের আওতায় আনার জন্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পূব নওদাবাস গ্রামের বিরেন্দ্র নাথ মন্টুর লম্পট ছেলে সুমন (২২), পার্শবর্তী গ্রামের ইচ্ছা বর্মণের ছেলে অধির(২৮) ও সুরেন্দ্র নাথের ছেলে বিপুল কুমারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা পলাতক থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তাদের অভিভাকদের সাথে কথা হলে তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে সাংবাদিকদের কাছে জানান ।
Home / ক্রাইম নিউজ / হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন দিপ্তি রানী হাতীবান্ধায় ৭ম শ্রেনীর ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধষর্ন: এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও ধষর্কদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি
আরও পড়ুন...
নওগাঁয় নিখোঁজের ৭ দির পর মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁর বদলগাছীতে ব্রিজের নিচ থেকে সাকিব হোসেন (১৫) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ …