জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম ঘনিষ্ট সহকার্মী, পিরোজুরের মঠবাড়িয়ার মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক, আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাওগাতুল আলম সগীর হত্যার বিচার আজ ও হয়নি। এখন পর্যন্ত বুক ফুলিয়ে ঘুরছে খুনিরা।
১৯৭৩ সনের ৩ জানুয়ারী সন্ধার পর বর্তমান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে নির্মম ভাবে গুলিকরে হত্যা করে দক্ষিন বাংলার গৌরব সাওগাতুল আলম সগীরকে। ওই সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১/৭৩ তারিখ ০৩/০১/১৯৭৩ ইং।
১৯৭৯ সানের পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেন সূত্রমতে, মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের ডাইরী নং ৬২৯৩ তারিখ ০৯/০৯/১৯৯৭ ইং সনে মঠবাড়িয়া থানাধীন ১১নং বড়মাছুয়া ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন গংদের দাখিলকৃত দরখাসে-র আলোকে ১৯৯৭ সনের ২৭ নভেম্বর পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একটি চুড়ান্ত প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বলা হয় উপজেলার ১১ নং বড়মাছুয়া ইউনিয়নের মৃতঃ হাতেম আলী মোল্লার ছেলে নুর ইসলাম মোল্লা ও সাবেক চেয়ারম্যান আঃ সালাম মোল্লা সাওগাতুল আলম সগীরকে নিজ হাতে গুলি করে হত্যা করে।
১৯৭৩ সনে থানায় চুড়ান্ত চার্জসীট হাওয়া স্বত্যেও ২৪ বছর পর্যন- বর্নিত কেসের সংগে জড়িত আসামীদের বিচার হয় নি। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সি আই ডি অফিসার পুলিশ ইন্সপেক্টর আঃ মান্নান প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে উক্ত অভিযুক্ত ব্যাক্তিদ্বয়সহ ১০ জন আসামীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় মঠবাড়িয়া থানায় ২৪/১১/১৯৭৩ ইং তারিখে অভিযোগ দাখিল করেন। তদন-কালীন এই মামলার ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীরা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেয়।
পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৯ সানে রহস্যজনক কারনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এর নির্দেশে মালাটি খারিজ হয়ে যান।
বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম যখন হাতে নিয়েছেন তখনই এই সাবেক সাংসদ সাওয়াতুল আলম সগীর হত্যার ৩৮ বছর পরও বিচারের দাবীতে স’ানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ ৯০ শতাংশ মানুষ ফুসে উঠেছে। তারা চায় দক্ষিন বাংলার গৌরব মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক সাবেক সাংসদ সগীর হত্যার বিচার হোক। তাই তারা প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছেন। তারা মনে করেন মামলাটি পুনজীবিত করে খুনদের কঠিন স্বাসি-হোক। এই সরকারের সময় যদি বিচার না হয় তাহলে এর রকম মহান নেতার বিভিন্ন সময় খুন হলেও মনেহয় বিচার হবে না। সবাই চায় সগীর হত্যার বিচার করে বাংলাদেশের দক্ষিন অঞ্চলকে কলংকমুক্ত করতে।
জেলা কৃষকলীগের ভাইস প্রেসিন্ডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস-ফা শাহ আলম দুলাল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন আকন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাসী তার সবাই চাইবে এ রূপ অমানবিক হত্যাসহ যে কোন হত্যার বিচার হওয়া উচিৎ। নইলে আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ভালবাসা কমে যাবে।
অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেক কিছুই দেখেছি। অনেক কিছু জানি ও বুঝি। দেখা যাচ্ছে যারা এই খুনের সম্পর্কে জানত বা জড়িত তারাই বর্তমানে আওয়ামীলীগের উচ্চপদস’সহ মহাদপটের সাথে চলে আসছে। অনেকের কাছে এই মহান নেতার বিষয় জানতে চাইলে হাউ-মাউ করে কেঁদে ফেলে। তারা আজও এই মহান নেতাকে হৃদয়ের মনিকোঠা থেকে ভালবাসে। সর্বপরি একই বক্তব্য দক্ষিন বাংলার গৌরব মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক সংসদ সদস্য সাওগাতুল আলম সগীর হত্যার বিচার হোক।
Home / সারাদেশ / বরিশাল / মঠবাড়িয়ার সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সওগাতুল আলম সগীর হত্যার বিচার আজও হয়নি॥
আরও পড়ুন...
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পরে অসুস’ ২
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুর থেকে ভাণ্ডারিয়া আসার পথে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের খপ্পরে পরে অসুস’ হয়েছে ২জন। …