পিরোজপুর প্রতিনিধি: নাজিরপুর উপজেলাসহ হাট-বাজারের দোকান-পাটগুলোতে ভেজাল ও ময়লাযুক্ত নিম্ন মানের হলুদ-মরিচের গুড়ায় সয়লাভ হয়ে আছে। বেশী লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হলুদ-মরিচের সাথে চাল ও এ্যাংকর ডাল মিশিয়ে মেশিনে গুড়া করে রং দিয়ে কালার করে বস্তায় বস্তায় দোকানগুলোতে সরবরাহ করে থাকে। খুচরা ব্যাবসায়ীরাও বেশী লাভের আশায় কমদামে ওইসব ভেজাল ও ময়লাযুক্ত নিম্ন মানের হলুদ-মরিচের গুড়া মিল মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করে নিজেদের দোকানে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখে। সাধারন ভোক্তারা এসব হলুদ-মরিচের গুড়া খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। গতকাল উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে অনুসন্ধান কালে ক্রেতারা ভেজাল হলুদ-মরিচ নিয়ে তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। উপজেলার গাওখালী বাজারের ক্রেতা মাষ্টার জিয়াউর রহমান জানান, বেশী দামে হলুদ- মরিচ কিনে আমরা তার কোন ঝাঁজ পাচ্ছিনা। ভেজাল ও নিম্ন মানের হলুদ- মরিচ হওয়ায় সকল রান্না- বান্না, মাছ- মাংস, তরি-তরকারী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার সদরের গৃহিনী আকলিমা বেগমের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, পুরো উপজেলা ঘুরেও বিশুদ্ধ মানের কোন হলুদ-মরিচের সন্ধান পাওয়া যাবেনা। ভালো খেতে হলে গোটা হলুদ-মরিচ ক্রয় করে নিজেরা দাড়িয়ে থেকে মিল হতে গুড়া করে নিয়ে যেতে হবে। একই কথা বললেন, গাওখালী বাজারে আসা ক্রেতা আলাউদ্দিন, সফিকুল ইসলাম। তারা অভিযোগ করনে, উপজেলার কোন বাজারে বিএসটিআই’র র্কমর্কতাদের মনিটরিং না থাকায় অসাধু মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যেই ভেজাল ও ময়লাযুক্ত নিম্ন মানের হলুদ-মরিচ বিক্রি করে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন কাজ হলেও তাদের কোন প্রকার মাথা ব্যাথাই যেন নেই। ক্রেতাদের অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাজিরপুর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজারে প্রায় অর্ধশতাধিক মিলে ভেজাল ও ময়লাযুক্ত হলুদ-মরিচ গুড়া করে প্রায় ২ শতাধিক ব্যবসায়ী উপজেলার হাট-বাজার ও মহলৱাসহ হাজার হাজার দোকানে কম মূল্যে হলুদ-মরিচের গুড়া ছড়িয়ে দিয়েছে। ভোক্তারা জানান, ভেজাল হলুদ-মরিচ বেশী পরিমানে সব্জির সাথে দিলে এটির কোন কালার হয়না। তরকারির ঝোল সাদা ঘন ও আঠালো হয়ে যায়। মরিচের গুড়া দিলে গাছের গুড়ার মত তা ডাল কিংবা রান্না করা তরকারীর ঝোলের উপর ভেসে থাকে। সব্জির সাথে বেশী পরিমান মরিচ দিলেও ঝাল হয়না। খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ব্যবসায়ীই নিম্ন মানের পচাঁ মরিচ ভেঙ্গে তার সাথে রং মিশিয়ে মরিচের কালার করে থাকে। গাওখালী বাজারের স’ানীয় ডা:অমৃত লাল মন্ডল বলেন, এসব ভেজাল রং মেশানো হলুদ- মরিচ খেয়ে সাধারন মানুষ গ্যাস্ট্রিক, আলসার, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বস্তায় বস্তায় ভেজাল হলুদ-মরিচের গুড়াগুলো বিভিন্ন দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হলেও স’ানীয় প্রশাসন তা পরীক্ষা না করে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ তুলছেন ক্রেতারা। জানা গেছে, উপজেলায় বিএসটিআই’র কোন র্কমর্কতা কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যাক্তি না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ী চক্রটি নিজেদের দোকান, গুদাম ও বাসাবাড়ীতে হলুদ-মরিচের গুড়া মজুদ করে ইচ্ছে মতো ভেজাল যুক্ত করে খুচরা ও পাইকারী দোকানগুলোতে সরবরাহ করছে। সূত্র জানায়,উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা প্রতিমাসে একবার এসে এ সমস্ত অসাধু মিল মালিকদের কাছ হতে মাসোহারা নিয়ে চলে যান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ শাওগাতুল আলম এ প্রতিনিধিকে জানান, তিনি এ উপজেলায় যোগদান করার পর মোবাইল কোর্টে মাধ্যমে কয়েক দফা ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়েছে।
Home / সারাদেশ / বরিশাল / বিএসটিআই’র কর্মকর্তাদের মনিটরিং নেই পিরোজপুরের নাজিরপুরে হাট-বাজার গুলোতে ভেজাল হলুদ-মরিচে সয়লাভ
আরও পড়ুন...
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পরে অসুস’ ২
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুর থেকে ভাণ্ডারিয়া আসার পথে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের খপ্পরে পরে অসুস’ হয়েছে ২জন। …