অভিযোগ দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ গনেশ চন্দ্র অধিকারীর বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে পিরোজপুর সদর জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে গত ১৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদী পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভিপি ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মাহাবুব শুভ। আদালত বিবাদীকে ৭দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন।আদালতে করা বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, সম্মান (২০১০-১১) শিক্ষা বর্ষে ভর্তিতে অধ্যক্ষ গনেশ চন্দ্র অধিকারী ব্যবস’াপনা ফির নামে রশিদের মাধ্যমে ১হাজার ১’শ ৫৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১’শ টাকা করে নিয়ে ১লাখ ১৫ হাজার ৬শত টাকা আত্মসাত করেছেন। যা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র বর্হিভুত। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ২০১০-১১ অর্থ বছরে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের বিভিন্ন (রাসায়নিক ও ল্যাবেরটরির) যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ২লাখ ৬০ হাজার টাকা ও ব্যবহারসামগ্রী, বইপত্র ও লিভারেজ মালামাল ক্রয়ের জন্য ২লাখ ৮০হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। যা থেকে তিনি ৪লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। ফয়সাল মাহাবুব শুভ’র দাবী দরপত্র কমিটির আহবায়ক কলেজের সহকারী অধ্যাপক সদানন্দ গাইনের সহয়তায় অধ্যক্ষ উপরোক্ত দু’খাত থেকে ৪লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন।   বাদী ফয়সাল মাহাবুব শুভ জানান, অধ্যক্ষ এবং দরপত্র কমিটির দুর্নীতির বিষয়টি প্রতিবাদ করায় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ১৩ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ কলেজ ছাত্র সংসদ ভেঙে দেন। এছাড়া আমি সহ কয়েক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ধ্বংস করার জন্য ছাত্রত্ব বাতিলের ষড়যন্ত্র স্বরূপ ১২ অক্টোবর প্রথম ও ১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় আর একটি কারণ দর্শানোর নেটিশ দেন।    পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মেজবাউদ্দিন সাবু বলেন, অধ্যক্ষ গনেশ চন্দ্র অধিকারী ও সহকারী অধ্যাপক সদানন্দ গাইনের বড় ধরনের দূর্নীতির প্রতিবাদ করেছিল ভিপি ফয়সাল মাহাবুব শুভ সহ কয়েক জন। এ কারনেই অধ্যক্ষ কলেজের সম্মান (ইংরেজী)-৪র্থ বর্ষের ফয়সাল মাহাবুব শুভ, ডিগ্রী-১ম বর্ষের তানভির মুজিব অভি, সম্মান-৩য় বর্ষের মামুন শিকদার, সম্মান-২য় বর্ষের আবু হানিফ, সম্মান-১ম বর্ষের পার্থ সাহা এবং একাদশ শ্রেণীর মোহাইমিনুল ইসলামের ছাত্রত্ব বাতিলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। মেজবাউদ্দিন সাবু বলেন, এরকম হলে ভবিষ্যতে কেউ আর কারোর দুর্নীতির প্রতিবাদ করবে না। কলেজের শিক্ষার্থী মিঠুন বসু ও মশিউর রহমান সুজন জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর হস-ক্ষেপ কামনা করছি। বাদী পক্ষের আইনজীবী জসিমউদ্দিন জানান, ফয়সাল মাহাবুব শুভ’র ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য কারণ দর্শানোর আদেশ কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না এবং ছাত্র সংসদ ভেঙে দেয়ার আদেশ কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না সে বিষয়ে আদালতের বিচারক মোঃ জাকারিয়া অধ্যক্ষ গনেশ চন্দ্র অধিকারীকে ৭দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন। অধ্যক্ষ গনেষ চন্দ্র অধিকারী জানান, আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ তিনি পেয়েছেন। প্রসংগত গত ১৩ সেপ্টেম্ব অধ্যক্ষ গনেশ চন্দ্র অধিকারী পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্র সংসদ ভেঙে দেন। ১৯ সেপ্টেম্বর তা পূনর্বহাল করে আবার ওই দিনই আরেক আদেশে ভেঙে দেন। ২৯ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।