নজরদারির অভাবে নওগাঁয় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে নিশিদ্ধ ওষুধ

এনবিএন ডেক্স: “আপনার শরীরের যে কোন স্থানে যেকোন ধরনের ব্যথা, যে কোন চর্মরোগ থাকলে আসুন আমার সামনে, লাগান আমার কোম্পানির মলম, মাত্র ৫ মিনিট সময় দেবেন, যদি না সারে তবে আপনার পায়ের জুতা আমার মাথায় মারবেন কোন প্রতিবাদ করবো না। দীর্ঘ দিনের চর্মরোগে আমাদের পাগলা মলম মাত্র ৭দিন ব্যবহার করবেন, কোন উপকার না পেলে সামনে এস বলবেন, সাথে সাথে মূল্য ফেরত। ” এ ভাবে মাইকে প্রচার করে রিক্সায় চড়ে নওগাঁ শহরময় ঘুরে প্রায় ১মাস ধরে অবাক করা এই মলম বিক্রি করছেন নাটোর জেলার রশিদ নামের এক যুবক। তার বিক্রয় সামগ্রীর মধ্যে আছে ব্যথা নাশক জামবাক ও যমবাঘ নামের দুটি মলম এবং সকল প্রকার চর্মরোগের জন্য পাগলা নামের একটি মলম। মানুষজনও ভিড় করে কিনছে এ সকল মলম।
এরশাদ সরকারের শাসনামলে ঘোষিত ওষুধনীতির মাধ্যমে জামবাক মলমটি নিশিদ্ধ করা হয়। কিন’ প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এই জামবাক গত ১ মাস ধরে দেদারছে নওগাঁয় বিক্রি হচ্ছে।
মলম বিক্রেতা নাটোরের রশিদ জানায়, ঢাকার যাত্রাবাড়ির বিখ্যাত টিপু কেমিক্যাল কোম্পানি এ অবাক করা মলমটি আবিষ্কার করেছে। জামবাক একটি নিশিদ্ধ ওষুধ এ কথা জানালে রশিদ জানায় বিষয়টি তার জানা নেই। তার বিক্রিত মলমগুলি বিএসটিআই কতৃক মান পরীক্ষিত কি না জানতে চাইলে রশিদ জানায় সে কোম্পানির একজন বিক্রয় প্রতিনিধি বিধায় তার বিক্রিত ওষুধগুলির মান পরীক্ষা হয়েছে কিনা তা সে জানে না। তবে সে দাবি করে তার কোম্পানির ওষুধ ১০০ ভাগ গ্যারান্টি যুক্ত। সে গত ১০ মাস ধরে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এ ওষুধ বিক্রি করে আসছে। আজ পর্যন্ত তার কাছে কেউ এসে দাবি করতে পারে নি যে তার ওষুধে কোন কাজ হয় নি। ওষুধের মান ও নিশিদ্ধ ঘোষিত জামবাক বিক্রি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রশিদ জানায় এ ব্যাপারে সরাসরি কোম্পানির ব্যবস’াপকের সাথে কথা বলা ভাল। এর জন্য সে তার নিজস্ব মোবাইল থেকে কোম্পানির মোবাইল নম্বর ০১৯১২-৪৫২০০৬ সংযোগ করে দিয়ে কথা বলতে দিলে জেনারেল ম্যারেজার পরিচয় দিয়ে জনৈক ব্যক্তি ফোনটি রিসিভ করেন। নিজের পরিচয় দিয়ে ওই জেনারেল ম্যানেজারের কাছে তাদের কোম্পানির রেজিষ্ট্রেশন আছে কিনা, প্রস’তকৃত ওষুধগুলোর মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে কিনা এবং নিশিদ্ধ ঘোষিত জামবাক বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ৭৫৪৬০৪৬ নম্বর ল্যান্ড ফোনে তাঁদের কোম্পানির এমডি’র সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরামর্শ মতো উল্লেখিত ল্যান্ড ফোনে ফোন করা হলে ফোন রিসিভকারি ব্যক্তি প্রথমে পরিচয় ও সমস্যা জানতে চায়। তাঁকে পরিচয় দিয়ে এমডির সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অপেক্ষা করতে বলে কিছু পরে জানান “স্যার ব্যসন্ত আছেন, পরে এক সময় ফোন করবেন।” পরে একাধিকবার মোবাইল ও ল্যান্ড ফোনে ফোন করে বিষয়গুলি জানতে চাওয়া মাত্র অপর দিক থেকে ফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।