20 Agrohayon 1431 বঙ্গাব্দ বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / জাতীয় সংবাদ / নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে বিরম্বনার শিকার হন রোগী

নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে বিরম্বনার শিকার হন রোগী

এবিএন ডেক্স: নওগাঁ সদর হাসপাতালে শয্যা, ডাক্তার, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে চিকিৎসা সেবায় দারুন সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে, সরকারী এই হাসপাতালে ছুটে এসে চিকিৎসা সেবার বিপরিতে বিরম্বনার শিকার হচ্ছেন রোগী ও তার লোকজন । যে কয়েক জন ডাক্তার ও নার্স আছেন তারাও দেরিতে এসে আবার ডিইটি থেকে আগেই চলে যান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁ জেলার ২৮ লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য আধুনিক সদর হাসপাতালে আসেন। এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৬৫০ জন রোগী বহির্বিভাগে টিকিট ক্রয় করেন। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসকরা হাসপাতালে না আসার কারনে রোগীদের ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। অনেকে চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ী ফিরে যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২১ জন। কর্মরত আছেন মাত্র ১৬ জন। রয়েছে শয্যা সংকটও। অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় শুয়ে চিকিসা নিতে হয়। বর্তমানে ২১ জন চিকিৎসক কর্মকর্তার (এমও) স’লে ৭ জন ও ৬ জন জররুরী চিকিৎসার কর্মকর্তার স’লে ৩ জন কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া নাক কান ও গলা, প্যাথলজি, চর্ম ও যৌন, মানসিক, রেডিওলজী ও সহকারী সার্জন পদে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা পরামর্শক নেই। বর্তমানে মাত্র ৭ জন এমও বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
অন্যদিকে হাসপাতালে মেডিসিন পরামর্শক পদে দীর্ঘদিন কোন চিকিৎসক না থাকায় হৃদরোগ ও মসিত্মষ্কে রক্তক্ষরনসহ জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীকে রাজশাহী, ঢাকা ও বগুড়ায় স্থানান্তর করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। যে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন তারা হাসপাতালে সঠিক সময়ে আসেন না। ব্যসত্ম থাকেন ক্লিনিকগুলো নিয়ে। সরকারী ছুটি বা বন্ধের দিনগুলোতে কর্মস’লে না থাকায় অনত্মবিভাগে ভর্তি হওয়া রোগীরা পড়েন চরম দূর্ভোগে। এ ব্যাপারে গাইনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা: সুলতানা জাহানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, চিকিৎসকের অভাবে তাদের অনেক প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয় ।
হাসপাতালের অনত্ম:বিভাগে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। শয্যা ছাড়াও অনত্ম:বিভাগের মেঝে এমনকি বারান্দাতেও রোগীদের শুয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। এছাড়া ভর্তি হওয়া রোগীদের খাদ্য দেয়া হয় নির্ধারিত ১০০ জন রোগীর খাবার থেকেই। ফলে রোগীদের মধ্যে পরিবেশন করা খাবারও হয় নিম্ন মানের।
সরেজমিনে গেলে নওগাঁ সদর উপজেলার মাদার মোল্লা  গ্রামের রাসেল খাঁন বলেন, দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিনত্ম শয্যা না পাওয়ায় গত ৩ দিন যাবত হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। সদর উপজেলার মাখনা কমল গোঠা গ্রামের জামানত আলী বলেন, সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি হলেও শয্যার অভাবে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক চেষ্টা করেও তিনি শয্যা পাননি।
পুরুষ ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডে ১ মাস যাবত ভর্তি থাকা রানীনগর উপজেলার রনসিংহা গ্রামের গোপাল চন্দ্র শয্যা পেলেও অভিযোগ তোলেন, রাতে ডাক্তার আসেনা। অনেক ডাকাডাকি করেও নার্সদের পাওয়া যায়না। সড়ক দূঘটনায় আহত ভর্তিরত সদর উপজেলার শৈলগাছী গ্রামের খায়রুল আলমের ভাই মান্নান  অভিযোগ তুলে বলেন, বহির্বিভাগ বা অন-:বিভাগ কোনটাতেই চিকিৎসা পাওয়া যায়না। ডাক্তাররা প্রকাশ্যে প্রাইভেট ক্লিনিক অথবা তাদের নিজস্ব চেম্বারে যেতে বলেন। আবার ডাক্তাররা রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যেতে হাসপাতালে লোকবলের নামে বেশকিছু নারী-পুরুষ দালাল রেখেছে। এসব কারনে রোগী ও তাদের লোকজন চিকিৎসা পাবার পরিবর্তে নানা বিরম্বনার শিকার হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের নার্সদের জৈষ্ঠ্য সুপারভাইজার আফরোজা খাতুন এ প্রতিবেদকে বলেন, অনত্ম:বিভাগে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সেবিকাদের সংখ্যা বাড়েনি। বেশীরভাগ দিন ডবল শিফট করে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তারা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ৮৮ পদের মধ্যে মাত্র ৩৩ জন সেবিকা নিয়ে রোগীর সেবা দিতে তারা হিমশিম খচ্ছেন। উল্লেখ নওগাঁ সদর হাসপাতালে কোন ডোম নেই। ফলে ময়না তদনে-র জন্য ১১টি উপজেলা থেকে আগত লাশ প্রতিনিয়ত ময়না তদন্ত সময় বাহির থেকে ডোম ভাড়া করে নিয়ে এসে ময়না তদন- সম্পন্ন করা হয়। এর বিনিময়ে প্রতি লাশে ডোমকে দিতে হয় নগদ ৩/৪ হাজার টাকা। টাকা কম হলেই ডোমেরা অকথ্য ভাষাই গালি গালাজ করে। অনেক লাশ অর্থাভাবে মর্গের ঘরে পচে যায়। আবার অনেক লাশ ময়না তদন- ছাড়ায় ফেরত পাঠানো হয়। এছাড়া বেওয়ারিশ লাশের ময়না তদন্তের সময় পুলিশ ও ডাক্তারকে নিজ পকেট থেকে টাকা দিয়ে ময়না তদন- করাতে হয়। এসব ব্যপারে যোগাযোগ করা হলে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: মোঃ সোলায়মান আল ফারুক চিকিৎসক ও শয্যা সংকটের কথা স্বীকার করে এ প্রতিবেদকে বলেন, অবিলম্বে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শূন্য পদসহ চিকিৎসা কর্মকর্তার পদ পূরন করা দরকার। এবং স্থায়ী ভাবে লাশ ময়না তদনে-র জন্য ডোমের ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। #

আরও পড়ুন...

নওগাঁয় ৯টি ককটেল ১৫ টি সাউন্ড বোমাসহ বিপুল পরিমান জিহাদী বই উদ্ধার- ৬ শিবির নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ

এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁ সদরের শহরস্থ নামাজগড় মাদ্রাসা পাড়া থেকে ৯টি ককটেল, ১৫ টি সাউন্ড বোমা …