18 Magh 1431 বঙ্গাব্দ শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / সারাদেশ / ভ্যাপসা গরমে নাকাল সাতক্ষীরাবাসী

ভ্যাপসা গরমে নাকাল সাতক্ষীরাবাসী

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: তেঁতে ওঠা আবহাওয়ায় নাকাল হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরাসহ দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ। ভ্যাপসা গরমে ঘামছে সবাই। কাঠফাটা রোদ আর ঘুমসো গরমে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলছে অগ্নিস্নান। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ফাঁকা হচ্ছে শহর। ভর দুপুরে শহর এক প্রকার জনশূন্য হয়ে পড়ছে। তাপদাহে রাস্তার পিচ পর্যন্ত গলে যাচ্ছে। শীতল পরশের জন্য মানুষ গাছ তলায় জড়ো হচ্ছে। রাতেও ঘরে টিকতে না পেরে বাইরে বিছানা-পাটি বিছিয়ে পাড়া-পড়শি মিলে মেতে উঠেছে গল্পের আসরে। যে সব কৃষকরা এখনো বোরো ধান ঝাড়াই ও মাড়াই করতে পারেন নি তারা গোলায় ফসল তোলার কাজে ব্যস্ত। কৃষানীরা তাপদাহ উপেক্ষা ধান সিদ্ধ করে চাল বানানোর কাজে ব্যস্ত। বৈশাখী খরতাপে পুড়ছে গোটা দক্ষিনাঞ্চল। সাদা মেঘের ভেলার আড়ালে সূর্যের লুকোচুরি খেলা চলছে। রাতে আলো আঁধারে চলছে চাঁদের লুকোচুরি। দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধি করছে। এতে করে তীব্র গরম অনুভুত হচ্ছে। খাল – বিল শুকিয়ে চৌচির। পুকুর ও মাছের ঘেরে পানি কম থাকায় মাছ ও চিংড়ি পোনায় মড়ক দেখা দিচ্ছে। হিট স্টোক, হাঁপানীম ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। প্রচন্ড গরমে পোল্ট্রী খামারেও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায় চাতকের মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন খাবার পরামর্শ দিয়েছেন। শিশুদের ঘরের মধ্যে বদ্ধ না রেখে খোলা পরিবেশে মুক্ত বাতাসে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা । জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে , মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। খুব শিঘ্রই প্রকৃতির কষ্টের কান্না হয়ে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি। মৌসুমি বায়ুর সাথে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় ভূ-পৃষ্ঠের তাপ বিকিকরনে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বেশি গরম অনুভুত হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক এসকে দিদারুল ইসলাম জানান, ১২ মে তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ১৩ মে তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো সর্বোচ্চ ৮৯ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫২ শতাংশ। ১৪ মে তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো সর্বোচ্চ ৮৪ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৪৩ শতাংশ। ১৫ মে জেলা ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯২ শতাংশ। দুপুরে আর্দ্রতা ২৫ শতাংশে নেমে আসায় গরমের তীব্রতা কিছুটা ওই সময় কম গরম অনুভূত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মৌসুমি বায়ু প্রবাহের কারণে বাতাসের জলীয় বাষ্পের পরিমান বাড়ছে। ফলে খুব শিঘ্রই বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এদিকে প্রচন্ড তাপ প্রবাহের কারনে জেলায় বিভিন্ন প্রকার রোগ ব্যাধীর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। মানুষ হটাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, প্রচন্ড গরমে ঘামের সাথে দেহের জলীয় দ্রবন ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই বিশুদ্ধ পানি ও স্যালাইন খাবার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া ফরমালিন ও কার্বাইড মুক্ত মৌসুমি ফল খাওয়ার উপর গুরত্বারোপ করেন এই চিকিৎসক। শিশুদের ঘরের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে খোলামেলা পরিবেশে মুক্ত বাতাসে রাখারও পরামর্শ দেন তিনি।

আরও পড়ুন...

নওগাঁয় সীমানা প্রাচীরের দ্বন্দে প্রাচীর ভাংচুর ও মারপিট

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় সীমানা প্রাচীরের বিরোধের জের ধরে ভোগদখলীয় সম্পত্তিতে নির্মাণাধীন ইটের সীমানা প্রাচীর ভাংচুর …