এনবিএন ডেক্স: নওগাঁ মান্দা উপজেলার চককালিকাপুর মাসজিদের পাশেই এবং চককালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে মদ, জুয়া, যাত্রা ও অশিল নৃত্যের। সেখানে সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চককালিকাপুর পুরানো মসজিদ এর পাশেই ওই যাত্রা ও অশিল নৃত্যের প্যান্ডেলটি। স্থানীয় একটি ক্লাবের উদ্যোগে ওই যাত্রা ও নৃত্যের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় পক্ষকালব্যাপী ওই স্থানে শুরু হয়েছে সুদূর নাটোর হইতে আগত গ্রীতশ্রী যাত্রা পালা। যৌন উত্তেজনাকর ওই যাত্রা ও নৃত্যের আর্কষনে প্রতিদিন ছুটে আসছে ৬/৮ বছরের কিশোর থেকে শুরু করে স্কুলগামী ভরা যৌবনে উর্তি বয়সের যুবক, ছোড়া, ৭০/৮০ বছরের বুড়ো সবাই। অধিক মুনাফার আশায় তারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের যাত্রা ও অর্ধ উলঙ্গ নারীদের নগ্ন নৃত্যের ঝঙ্কার। নৃত্য মঞ্চের সামনে নারীদের ভরা যৌবনের নগ্ন দেহ দেখতে সকল বয়সী মানুষদের দেখা গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রসত্ম মানুষ যখন অনাহারে অর্ধ অনাহারে দিনানিপাত করছে ঠিক সেই সময় এক শ্রেণীর বখাটেরা নিজেরা ফায়দা লুটার জন্য নারীদের নগ্ন দেহ দেখতে মঙ্গাপিড়িত সময়ে যুবকেরা অভিভাবদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব অথবা তাদের পকেট মেরে, হাঁস-মুরগির ডিম, হাড়ির চাল বিক্রি করে সেই ভরা যৌবনের নগ্ন নারীদের সাজগোজের ভারী দেহ ও নৃত্যে দেখতে ছুটে আসছে। যা পেশাদারী পতিতাদেরও হার মানিয়েছে বলে ভুক্তভোগী মহল জানান। যাত্রা ও নৃত্যের নারীরও তাদের ভরা যৌবন পুরুষদের আলিঙ্গন করার জন্য তারা কে কত বেশি নগ্ন দেহ দেখাতে পারে এ নিয়ে নিজের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। পুরুষেরাও নারীদের নগ্ন দেহে ১০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকার নোট দিয়ে আলিঙ্গন করতে দেখা গেছে। প্রতি রাতেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। যার দ্বারা আয়োজক কমিটিও প্রতি রাতে বহু টাকা ইনকাম করছে। অজ পাড়া গায়ে এ যাত্রা ও নৃত্য দেখাতে আয়োজকেরা টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করছে স্পেশাল ১শত ৫০ টাকা, চেয়ার শত টাকা এবং নীল আকাশের নিচে বাংলার মাটি মাত্র ৫০ টাকা বলে মাইকে গলা ফাটিয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকেরা সরজমিনে গত ২২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ওই যাত্রা মঞ্চে গেলে চককালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলিম ও আয়োজক কমিটির সভাপতি আব্দুল হামিদ মান্দা উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক হারিবুর রহমান ও জহুরুল ইসলামকে স্পেন্ডেলের ভিতর নিয়ে গিয়ে অশিল ছবি না তোলার শর্তে বসতে দেয়। আধাঘণ্টার মধ্যে কৌশলে চককালিকাপুর গ্রামের ছামেদ কবিরাজের ছেলে আক্তার হোসাইনসহ অপরিচিত ৫/৭জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাদেরকে যাত্রা প্রাঙ্গণ থেকে উঠিয়ে নিয়ে মারধর করে নানাভাবে নির্যাতন করে তাদের গভিড় রাত পর্যনত্ম আটকিয়ে রাখে। এবং অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে লাঠি, সোটা, চাকু, সোরাসহ ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের কাছে থাকা পত্রিকা অফিসে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি বিলের ১০হাজার ৪শত টাকা, একটি ভিডিও মোবাইল সেট, একটি ক্যামেরা, গলায় থাকা আট আনার ওজনের একটি সোনার চেইন ও হাতের আঙ্গুলে থাকা একটি আংটি তারা বল প্রয়োগ করে ছিনিয়ে নেয়। আর একই কায়দায় শাসন গর্জনসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে জহুল এর নিকট থেকেও একটি মোবাইল ফোন ও ৬হাজার ৬শত ৬০টাকা তারা কেড়ে নেয়।
ওই যাত্রা চলার ফলে রাত দিন মঞ্চ থেকে মাইকে গলা ফাটিয়ে প্রচারণা চালানোই শব্দ দূষনের ফলে ওর্ই হাইস্কুল, মাদ্রাসার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পড়া খেলা মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে ৮ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা শুরু হবে। সেখানে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রদেরকেও ওই নগ্ন মঞ্চে নারীদের নগ্ন দেহ দেখতে দেখা গেছে। মাইকে নগ্নদেহের ঝঙ্কার গলা ফাটানো বাহারী ঢঙের ড্যান্স ও গানের শব্দে ধর্মপ্রাণ মুসলিদের মসজিদে নামাজ আদায়ে কষ্ট হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান। প্রশাসনের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও সুধী জনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিয়ষটি সকল প্রশাসনের জানা হলেও তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন। এলাকার কজন অভিভাবক মণ্ডলী সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, নারীদের নগ্ন দেহের মুখরোচক কথা শুনে তাদের ছেলেদের ভরাযৌবনে রাতের বেলা ধরে রাখতে পারছে না। মুসলিম উম্মার মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ার কারণে মুখ খুলে কাহারও কিছু বলার নেই। আর সাংবাদিকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণের নিন্দা জ্ঞাপন করে সঠিক বিচার দাবি করেছেন মান্দা রিপোটার্স ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সকল সদস্য, মহাদেবপুর, নওগাঁ, তানোরসহ বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দ। এর প্রতীকার চেয়ে ওই সাংবাদিকেরা মান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন। এব্যপারে মান্দা থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ আব্দুল্যা হেল বাকি’র সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, তদনত্ম সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মঙ্গাপিড়িত এলাকা ও বার্ষিক পরীক্ষাসহ নানা সমস্যার কথা বিবেচনা করে তড়িত গতিতে ওই নগ্ন অশিল যাত্রা পালা প্রশাসন বন্ধ করবেন এটাই সুধী মহলের কামনা।