15 Chaitro 1430 বঙ্গাব্দ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ »
Home / সারাদেশ / নওগাঁর মান্দায় অরক্ষিত বধ্যভ‚মির প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা

নওগাঁর মান্দায় অরক্ষিত বধ্যভ‚মির প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা

এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁর মান্দায় পাকহানাদার বাহিনীর ব্রাশফায়ারে নিহত ১৬ শহীদের স্মৃতি বিজড়িত মনোহরপুর বধ্যভ‚মি আজও অবহেলা অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও বধ্যভ‚মির রক্ষণাবেক্ষনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সম্প্রতি সেখানে প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও ভ‚মি জটিলতায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। এনিয়ে শহীদ পরিবার ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, মনোহরপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প রয়েছে স্থানীয় রাজাকারদের এমন সংবাদে বিজয় দিবসের মাত্র ৩দিন আগে ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে গ্রামটি আক্রমণ করে পাকহানাদার বাহিনী। হানাদার বাহিনীর সদস্যরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় গ্রামের ১০-১২টি বসতবাড়ি। এসময় তাদের হাতে আটক হন মনোহরপুর, তুড়–কগ্রামসহ ৫ গ্রামের ১৬ জন নিরীহ মুক্তিকামী মানুষ। পরে গ্রামের পশ্চিমধারে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয় তাদের। স্থানীয়রা আরও জানান, একাত্তরের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে মনোহরপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী প্রামানিকের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা একটি ক্যাম্প স্থাপন করে। এ ক্যাম্প থেকে ৬ ডিসেম্বর নিয়ামতপুর থানা আক্রমণ ও অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় রাজাকাররা ক্ষুব্ধ হয়ে মনোহরপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান বিষয়ে কালিকাপুর স্কুল মাঠে স্থাপিত পাকসেনা ক্যাম্পে অবহিত করে। সেই সংবাদে ১৩ ডিসেম্বর কালিকাপুর থেকে পায়ে হেঁটে সদলপুর হয়ে ওইদিন বিকেলে মনোহরপুর গ্রাম আক্রমণ করে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকবাহিনী। মনোহরপুর গ্রামের আলী হোসেন, আব্দুস সামাদ. মমতাজ হোসেন, আনোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে জানান, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাণিজ্য মন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল জলিল, বর্তমান সাংসদ ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত বিমল কৃষ্ণ রায়ের উদ্যোগে বধ্যভ‚মির পশ্চিমধারে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ ও এর পাশে শদীদদের একটি নামফলক স্থাপন করা হয়। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রæয়ারি শহীদ মিনারের পাশে উপজেলা এলজিইডির তত্ত¡াবধানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বধ্যভ‚মির চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করে এলজিইডি কিন্তু ভূমির জটিলতার কারণে বর্তমানে কাজটি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, মনোহরপুর মৌজার আরএস ১২০ নম্বর খতিয়ানভ‚ক্ত ২৫০ দাগের ১৮ শতক জমিতে একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। ওই খতিয়ানের মালিক হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন ব্যক্তি। খতিয়ানে উল্লেখিত অন্য ৪টি দাগে দেবস্থান ও হিন্দু জনসাধারণের ব্যবহার্য উল্লেখ থাকলেও ২৫০ দাগের শ্রেণিতে গড়লায়েক পতিত ও মন্তব্য কলাম ফাঁকা রয়েছে। এতে করে ওই সম্প্রদায়ের লোকজন বধ্যভ‚মির প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) এসএম হাবিবুল হাসান বলেন, ‘ভ‚মি জটিলতায় মনোহপুর বধ্যভ‚মির প্রাচীর নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। এনিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করা হলেও তা সুরাহা হয়নি। তিনি আরও বলেন, শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় প্রয়োজনে ভ‚মি অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, ২৫০ নম্বর দাগে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। এ দাগের পূর্বধারে গণকবর ও পশ্চিমধারে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি ওই একই দাগে স্থাপিত হয়েছে জাতির জনকের ম্যুরাল। সেখানে গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে আগামি প্রজন্ম সহজেই মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। তাই ভ‚মি জটিলতা কাটিয়ে শহীদের স্মৃতি রক্ষায় বধ্যভ‚মিতে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান সরকারের সংশ্লিস্ট দপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ্ত কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন...

নওগাঁর পোরশায় ডাকাতির প্রস্ততিকালে ৪ডাকাত আটক

এনবিএন ডেক্সঃ নওগাঁর পোরশায় রাস্তায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ ডাকাত সদস্যকে আটক করেছেন স্থানীয়রা। আটককৃত ডাকাতরা …