কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ অবশেষে দীর্ঘ ৯মাস পর কুড়িগ্রামের রাজারহাটে এক অহসায় মেয়ের পিতৃত্বহীন শিশুর লাশ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের এক আদেশে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শফিকুল ইসলাম এবং কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আলামিন ইসলাম মাসুদ নবির উদ্দিনের বাড়ীর পারিবারিক কবর স্থান থেকে মৃত সন্তানের ডি এন এ পরীক্ষার জন্য লাশ উত্তোলন করেন। পরে পিতৃত্বের পরিচয়ের জন্য মৃত সন্তানের ডি এন এ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরন করেন।
জানা যায়, উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের কুমরগঞ্জ গ্রামের রিক্সা চালক নবীর উদ্দিনের কন্যা নুরনাহার (১৩)তার মৃত স্থানের পিতৃত্বের দাবীতে কুড়িগ্রাম আদালতে মামলা চলে আসছিল। তারই প্রেক্ষিতে গত ২২ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত বিজ্ঞ কুড়িগ্রাম জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ হাবিবুর রহমানের এক আদেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শফিকুল ইসলামকে। এ কারণে গত মঙ্গলবার দুপুরে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শফিকুল ইসলাম এবং কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আলামিন ইসলাম মাসুদ নবির উদ্দিনের বাড়ীর পারিবারিক কবর স্থান থেকে মৃত স্থানের ডি এন এ পরীক্ষার জন্য লাশ উত্তোলন করেন। পরে পিতৃত্বের পরিচয়ের জন্য মৃত স্থানের ডি এন এ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপাদান কাচের পাত্রে সংগ্রহ করে লাশ ময়না তদনে-র জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরন করেন। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শফিকুল ইসলাম, রাজারহাট থানার এস আই মাসুম, এএসআই রফিকুল ইসলাম, একদল পুলিশ, সাংবাদিক সহ শত শত উৎসুক জনতা, মৃত সন-ানের মা সহ তার পরিবারের লোকজন, মামলার বিবাদীও তার লোকজন উপসি’ত ছিলেন।
উল্লেখ্য, উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের কুমরগঞ্জ গ্রামের রিক্সা চালক নবীর উদ্দিনের কন্যা নুরনাহার (১৩)অভাবের তাড়নায় একই এলাকার ইউনুছ আলীর বাড়ীতে থালা-বাসন পরিষ্কার সহ অন্যান্য কাজ করতো। সুন্দরী কিশোরীকে পেয়ে বাড়ীর মালিক ইউনুছ আলীর লম্পট পুত্র নাঈম (১৯) ফুসলিয়ে প্রেমের অভিনয় শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দেহভোগ করে ওই নরপিশাচ। এতে কাজের মেয়ে নুরনাহার অন-ঃসত্তা হয়ে পড়লে বিষয়টি এলাকায় ফাঁস হয়ে যায়। কাজের মেয়েটিকে ওই নরপিশাচ সহ বাড়ীর কর্তা-ব্যক্তিরা গর্ভপাত করার চাপ সৃষ্টি করে। এতে সে রাজী না হলে কিশোরী নুরনাহার ও তার পরিবারের উপর নির্যাতনের খড়গ চালায় প্রভাবশালী ইউনুছ আলী। এলাকায় দফায় দফায় শালিশী বৈঠক করেও ওই লম্পট নাঈম বিয়ে করতে রাজী না হওয়ায় অনঃসত্তা কিশোরী রাজারহাট থানায় মামলা দায়ের করতে যায়। অর্থের অভাবে অনঃসত্তা মেয়েটির অভিযোগ থানা আমলে নেয়নি বলে কিশোরীর অভিযোগ। এমতাবস্থায় ৭ মাসের অনঃসত্তা নুরনাহার গত বছরের ১৬ আগষ্ট হঠাৎ অসুস’ হলে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর অসুস’ হওয়ার কারনে মেয়েটি দু’দিন পর হাসপাতালে ৭ মাসের একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করে। কিন’ ভূমিষ্ট হওয়ার ২ দিন পর সন্তানটি পিতৃত্বের পরিচয় না নিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পরে মৃত সন-ানটির পারিবারিক কবর স’ানে দাফন সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন...
কুড়িগ্রাম টেনারী নামা ছড়ায় মৎস চাষে এলাকার বেকারত্ব মোচন এনেছে দারুন সফলতা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম টেনারী নামা ছড়ায় মৎস চাষে এলাকার বেকারত্ব মোচন। এনেছে দারুন সফলতা। ব্যাপক …